মহানগর ডেস্ক: যত শক্তিশালী হওয়ার বদলে ধরছে ফাটল। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস যেখানে সকলকে একত্রিত করে লড়তে চাইছে তখনই প্রকট হচ্ছে জোটের ভিতরে দ্বন্দ। কেন্দ্রে একসঙ্গে লড়াই করার কথা বলকেও বাংলাতে তৃণমূলের নিশানায় কংগ্রেস। সমস্যা হচ্ছে আসন সমঝোতা নিয়ে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অসমের উত্তর কাছাড় স্বশাসিত পার্বত্য পরিষদের নির্বাচনে হাত-চিহ্নের বিপর্যয়ের ছবি তুলে ধরে বাংলায় কংগ্রেসের বাড়তি আসনের দাবি খারিজ করেছেন। এই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে হু হু করে পারদ চড়ছে।
শনিবার এক্স হ্যান্ডেলে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ‘অসমে দেশের গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি যেখানে নিজেদের গড় ধরে রাখতে পারছে না, সেখানে পশ্চিমবঙ্গে কীভাবে ক্ষয়িষ্ণু কংগ্রেস আকাশ ছোঁয়া দাবি করে?’এখনও বাংলায় আসন সমঝোতার বিষয়ে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড স্পষ্ট কিছু না-বললেও যেভাবে গত বেশকিছু দিন ধরে রাজ্যের তৃণমূল নেতৃত্বকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আক্রমণ করে চলেছেন এবং জোড়াফুল নেতৃত্ব সিট শেয়ারিং নিয়ে শনিবার কংগ্রেসের দাবিকে কার্যত খারিজ করলেন-তাতে রাজনৈতিক মহল মনে করছে যে দুই শিবিরের জোটের সম্ভাবনা বড় প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়েছে।
অন্যদিকে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব অভিষেকের যুক্তি মানতে নারাজ। মণিপুরে রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অধীর ছিলেন রবিবার। যদিও তিনি এই প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করেননি । তবে রবিবার বর্ষীয়ান প্রদেশ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘ছোট্ট একটি স্বশাসিত পরিষদের ভোটের সঙ্গে লোকসভা নির্বাচনের কোনও তুলনা করা যায় না। এটা পুকুরের সঙ্গে সমুদ্রের তুলনার সমতুল। উত্তর কাছাড়ের ছোট্ট একটি পরিষদের ভোটের ফলাফলকে লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গে আসন সমঝোতার মাপকাঠি হিসেবে তুলে ধরার অর্থ তৃণমূল বাংলায় কংগ্রেসকে আসন ছাড়তে চায় না। এই মনোভাব অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’
তবে তৃণমূল প্রদেশ অভিষেকের যুক্তি তুলে ধরে উড়িয়ে দিচ্ছে কংগ্রেসের দাবি।এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেনের কথায়, ‘লোকসভা নির্বাচন যদি সমুদ্র হয়, তা হলে বিধানসভা নির্বাচন নদী। পশ্চিমবঙ্গে সেই বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস শূন্য হয়েছে। অতীতে মধ্যপ্রদেশ অথবা গোয়াতে কংগ্রেস তার সরকার ধরে রাখতে পারেনি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এটাই বলতে চেয়েছেন, বাংলায় কংগ্রেসের পায়ের তলায় কতটা মাটি রয়েছে, তা দেখেই তাঁরা যেন লোকসভা নির্বাচনে আসন পাওয়ার দাবি করেন।’