মহানগর ডেস্ক: সকালের জলখাবারে লুচি আলুর দম আর সন্ধ্যার স্ন্যাক্সসে ফিশ ফ্রাই আর সঙ্গে চা এইগুলি এখন আর ঘরে বা দোকানে সীমাবদ্ধ নেই। এদের প্রভাব এখন রাজনীতিতেও বেশ সক্রিয়। ভাবছেন নিশ্চয়ই হঠাত করে কেন আবার এই সব কথা আসছে। আসছে কারণ ফিশ ফ্রাই, লুচি-আলুরদম আর চা যে মেটাল তৃণমূলের দুই দাপুটে নেতার দুরত্ব। এবার বোধ হয় আন্দাজ করতে পারছেন ঠিক কাদের কথা বলা হচ্ছে। হ্যাঁ বলা হচ্ছেন বিগত কয়েকদিন ধরেই রাজনৈতিক মহলের অন্দরে বহু চর্চিত কুণাল ঘোষ এবং সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা। তাঁদের মধ্যে সন্ধ্যায় আড্ডাতেই মিটল যাবতীয় দূরত্ব।
বিগত কয়েকদিন ধরেই প্রকাশ্যে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া ভাষায় আক্রণ করেন এবং তৃণমূলের অনেকের রাগের কথাও তুলে ধরেন। ক্ষোভ উগড়ে তৃণমূলের যাবতীয় পদ থেকেও তিনি ইস্তফা দেন। এখানেই শেষ নয় আজই তাঁকে দল থাকে শো-কজ করা হয়। সেই শো-কজের চিঠি তাঁর কাছে যাওয়ার পরেই কুণাল জানান আজই তিনি যাচ্ছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি চা খেতে। সেই মতই আজ সন্ধে ৭টার পর সুদীপ-নয়নার এন্টালির বাড়িতে প্রবেশ করেন কুণাল। প্রায় দুঘণ্টা ছিলেন সেখানে। তাঁদের মধ্যে বেশ অনেকক্ষণ বৈঠক হন। কেবল সুদীপ-নয়না-কুণাল নয় আরও কয়েকজন কাউন্সিলরও ছিলেন এন্টালিতে। বৈঠকের টেবিলে গরম গরম বার্তালাপের সঙ্গেই ছিল নাড়ু-ফিশ ফ্রাই, লুচি-আলুরদম। আর সঙ্গে চা। এতেই মিটল কুণাল-সুদীপের মধ্যের দূরত্ব। বৈঠকের পর সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও মন্তব্য না করলেও কুণাল সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেন, “সুদীপদার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে যাতে কোনওরকম ভুল বোঝাবুঝি, কমিউনিকেশন গ্যাপ না থাকে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পরিবারের মধ্যে মান-অভিমান থাকে, ভুল বোঝাবুঝি থাকে, কিন্তু পরিবার ছেড়ে কেউ যায় না। আমাদের নেত্রীর নাম মমতা, নেতা অভিষেক।” এদিন তাপস রায়কে নিয়েও তাঁদের কথা হয়। যিনি আজই তৃণমূল ছেড়েছেন এবং আগামী ৭ তারিখ তিনি বিজেপিতে যোগ দেবেন বলেই সূত্রের খবর।
তবে যাই হল ফিশ ফ্রাই, লুচি-আলুরদমই এখন বঙ্গ রাজনীতিতে বেশ প্রভাব ফেলেছে বলেই জানাচ্ছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। কারণ এই লুচি-আলুরদম মাঝে রেখে আলোচনা হয়েছিল মুকুল রায় ও সব্যসাচী। ২০১৯ সালে হয়েছিল বৈঠক যে সময়ে মুকুল বিজেপিতে ছিলেনএবং সেই বৈঠকের পরেই সব্যসাচী যোগ দেন বিজেপিতে। যদিও তাঁরা দুজনেই পড়ে তৃণমূলে ফিরেছিলেন। এদের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে ঝালমুড়িও। কারণ বাবুল সুপ্রিয় ভিক্টোরিয়ার সামনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের সঙ্গে ঝালমুড়ি খেয়েছিলেন । তার কিছু দিন পরেই তিনি বিজেপি ছেড়ে যোগ দেন তৃণমূলে। সবমিলিয়ে বর্তমানে নানা ধরনের খাবারও রাজনীতিতে অনেক কিছু বদলে দিচ্ছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।