মহানগর ডেস্কঃ লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন অঞ্চলে সাংগঠনিক বৈঠক সেড়েছেন মমতা। তেমনই আজ কৃষ্ণনগরের পালপাড়ায় পদযাত্রা করতে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়্কে। এদিন পদযাত্রা শেষে তিনি সড়কপথে হয়ে শান্তিপুর রওনা হন। সেখানেই সাড়েন তাঁর প্রশাসনিক সভা। প্রশাসনিক সভার পাশাপাশি এদিন দলের বিশিষ্ট জেলা নেতৃত্বের সঙ্গেও বৈঠক করার কথা রয়েছে মমতার। সেই সঙ্গে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি কেমন এগোচ্ছে, তারও খোঁজখবর নিতে পারেন তিনি। গোষ্ঠীকোন্দল নিয়েও দলীয় নেতাদের কড়া বার্তা দিতে পারেন বলেও সূত্রের খবর।পাশাপাশি লোকসভা নির্বাচনের আগে শান্তিপুরের সভা থেকে একাধিক প্রকল্পের কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী। এখান থেকেই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
জল স্বপ্ন প্রকল্পের আওতাভুক্ত ১১ লক্ষ ৮৬ হাজার বাড়িতে জল পৌঁছে দেওয়া হবে আর এক বছরের মধ্যেই। ইতমধ্যেই ৯ লক্ষ ২৯ হাজার বাড়িতে জল পৌঁছে গিয়েছে। আর ৫-৬ মাসের মধ্যেই বাড়িতে পৌছে যাবে এই ব্যবস্থা । নবদ্বীপকে ৩০০ কোটি টাকা ব্যায় করে হেরিটেজ শহর তৈরি করা হচ্ছে। যেই সমস্ত মৃত শিল্পী হাতে মূর্তি তৈরি করেন, বিভিন্ন হস্তশিল্পের কাজ করেন কাজ করেন, যাঁরা সিল্ক তৈরি করে, তাঁত, ডোকরা বানান, তাদের সকলকে উৎপাদনের সব সামগ্রী বিশ্ব বাংলা, বাংলার শাড়ি, তন্তুজ, মঞ্জুসায় জায়গা করে দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। এদিন কৃষ্ণনগর ও রানাঘাটে শহরে দুটি বিগ বাজার তৈরি করার নির্দেশ দিলেন জেলাশাসককে। অনেক রাস্তারই মান পূর্বের তুলনায় ভালো হয়েছে ।সেই সঙ্গে কৃষ্ণনগর রানাঘাট, নবদ্বীপ, জলঙ্গী, দেবীপুর যাওয়ার রাস্তার বর্তমান অবস্থা যানতে চেয়েছেন তিনি। পূর্ব বর্ধমানের কালনা থেকে শান্তিপুর পর্যন্ত ব্রিজ নির্মাণের কথাও এদিন শোনা যায় তাঁর মুখে। এছারাও কল্যাণীতে দেড় হাজার কোটি টাকা খরচ করে ব্রিজ নির্মাণের কথাও বলেন তিনি।
মমতা বলেছেন, “অনেকে বলেন, নির্বাচনের সময়ে মতুয়া। আমি যখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম না, ১৫ বছর ধরে বারবার ওঁর কাছে ছুটে গিয়েছি। ওঁর যত চিকিৎসা আমি নিজের টাকায় করেছি।“ নাম না নিয়েই এদিন প্রশাসনিক মঞ্চ থেকে বিরধী পক্ষকে নিশানা করেছেন তিনি। মতুয়া বিকাশ পর্ষদকেও ১০ কোটি টাকা দেওয়া নিয়েও কথা কথা বলতে দেখা যায় তাঁকে। তৈরি হচ্ছে ঠাকুরবাড়ির কাছাকাছি হরিচাঁদ, গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে। ঠাকুরনগরে ফুল মাণ্ডি তৈরি হচ্ছে,তৈরি হচ্ছে নতুন সাবস্টেশনও।হাবড়া, গাইঘাটায় কাজ হচ্ছে। কৃষক মারা গেলে, তাঁকেও ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার এই কথাও তিনি মনে করিয়ে দেয়। এদিন তিনি বলেন “৩ কোটি মা বোনেরা লক্ষ্মীর ভান্ডার পাচ্ছেন। সংখ্যালঘুরা ৩ কোটি ঐক্যশ্রী কন্যাশ্রী ৯৫ লক্ষ মেয়েরা পেয়েছে। শিক্ষাশ্রী প্রায় ৭৪ লক্ষ।বিনা পয়সায় রেশন আমরা দিই। নির্বাচনের আগে বিজেপি বলে. পাঁচ কেজি চাল দেব। আবার বলে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের স্কাই ওয়াক ভেঙে দেবে। আমার বুকের পাটা থাকতে আমি হাত দিতে দেব না।আমি গর্বিত নদিয়ার তাঁতশিল্পীদের জন্য। আমি যত শাড়ি পরি সব নদিয়ার। আমি নিজের হাতে এঁকে ডিজাইন করে দিই। কিন্তু যে তাঁতিরা আমাকে শাড়িগুলো বুনে দেয়। কখনও ধনেখালি, কখনও নদিয়া। এর কোনও তুলনা আছে, তুলনা নেই।আমি ক্ষমতায় এসে দেখলাম, মাত্র ৬ জন মসলিন তাঁতি বেঁচে রয়েছেন। সেই ৬ জনকে আমরা ৬০ জনের ট্রেনিং দিলাম। তারপর মসলিন তীর্থ তৈরি করলাম। আর এখন সেই মসলিন তীর্থ আপনাদের সবার নাম কেড়েছে। এত সামাজিক সংস্কার কেউ কখনও করেছে? আগে বাবা-মা ভাবত মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দিই। কোথায় কী করবে! এখন মেয়েরা নিজের পায়ে দাঁড়াচ্ছে।বাংলা এগিয়ে যাবে। ভারতবর্ষের সবাইকে ভয় দেখিয়ে জেলে পুরে দিলেও কিচ্ছু হবে না। আমাকেও জেলে পুরে দিলে, জেল ফুটো করে বেরিয়ে আসব।মনে রাখবেন, নির্বাচনে জেতার জন্য সবাইকে জেলে পুরে দিচ্ছেন। আমাদের সবাই চোর, আর আপনারা সাধু?চোরেদের জমিদার। আজ ক্ষমতায় আছে, তাই এজেন্সি নিয়ে ঘুরছে। কাল ক্ষমতা থাকবে না, সব চলে যাবে।বসন্তের কোকিলের মতো কুহু কুহু করে ডাকে! সিপিএম কংগ্রেসের জোট হয়েছে, বিজেপিকে সাহায্য করবার জন্য। আমি জোট করি না, আমি মা মাটি মানুষ।রাস্তাগুলোর কাজ শেষ হয়ে গেলে দুধারে কেবল ইন্ডাস্ট্রি আর ইন্ডাস্ট্রি, দোকান।আগে ফুড কর্পোরেশন থেকে চাল কিনত, এখন আমরা চাষির ঘর থেকে চাল কিনি।তোমরা মহুয়াকে যতই তাড়িয়ে দাও, কিন্তু মানুষের ভোটে মহুয়া জিতবে।রানাঘাটে আপনারা একজনকে জিতিয়েছিলেন, আমার কিছু বলার নেই। মা বোনেরা ভালো করে জানেন তিনি কী, কী করে বেড়াচ্ছেন। এবার কিন্তু রানাঘাটে দয়া করে আমাদের সমর্থন করবেন।NRC হতে দেব না। CAA নামে মিথ্যা কথা বলছে। আমরা সবাই নাগরিক। মতুয়ারা নাগরিক নন? এগুলো ওদের রাজনৈতিক চাল।আমি ডিএমদের বলবো ইনার লাইন পারমিশন দিতে হলে প্রশাসনিক কর্তারা দেবেন, কিন্তু BSF দেবে না।”
মমতা আরও বলেছেন, “ওদের বর্ডার পাহারা দেওয়ার কাজ।তুমি বিহার. উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ থেকে গরু পাঠাবে, আর দোষ হবে আমাদের। কয়লা কাদের আন্ডারে? তোমরা চুরি করা বেড়াবে, আর তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ…আমি কারোর কাছ থেকে এক পয়সা নিই না। হাতের পাঁচটা আঙুল সমান নয়। সিপিএমেরও কিছু লোক আমাদের দলে ঢুকেছিল। কেউ দোষ করলে তাড়িয়ে দিন, কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসকে চোর বলবেন না। দোষ করলে তাড়িয়ে দিন, কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসকে চোর বলবেন না।কোটি কোটি টাকা খরচ করে শুধু প্রণাম করলে হয়ে গেল. বলছে একটাই আইন থাকবে। তাহলে তফসিলিদের বিয়ে, আদিবাসী, মুসলিম, হিন্দুদের বিভিন্ন কাস্টের মানুষ নিজেদের রীতিতে বিয়ে করে। বলছে একটাই করতে হবে, কেন?PG তে মিল্ক ব্যাঙ্ক তৈরি করেছি।“