HomePoliticsলগ্নি টানতে বিদেশ সফরে মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যে "নিষ্কর্মা" শিল্পাঞ্চলে দীর্ঘশ্বাস

লগ্নি টানতে বিদেশ সফরে মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যে “নিষ্কর্মা” শিল্পাঞ্চলে দীর্ঘশ্বাস

- Advertisement -

কলকাতা: বছর ঘুরতেই বঙ্গে শিল্পের দেবতা বিশ্বকর্মার আরাধনা। রাজ্যে শিল্পে লগ্নি টানতে স্পেন সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অথচ রাজ্যে শিল্পক্ষেত্রে বদলালো না হতশ্রী চেহারা। বিশ্বকর্মা পুজোর আগেই বন্ধ হয়ে গেল ভাটপাড়া জুটমিলের দরজা। মাথায় হাত জুটমিলের কয়েক হাজার শ্রমিকের। বহু বাধার পরেও খোলা হয়েছিল এই জুটমিলের দরজা। সূত্রের খবর, শ্রমিক মালিক অসন্তোষের জেরেই বন্ধ হয়েছে জুটমিল। একই চিত্র ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলেও। বন্ধ হয়েছে একের পর এক কারখানা। সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিশ ঝুলছে একাধিক কারখানার দরজায়। বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে শুনশান সেখানকার পথঘাট।

একসময় এই রাজ্য়ের প্রচলিত প্রবাদ ছিল, কৃষি আমাদে ভিত্তি শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ। সেসব এখন শিকেয়। বামফ্রন্ট সরকারের পর তৃণমূল সরকারের রাজত্বকালেও কারখানার গেটে ঝুলছে বড় বড় তালা। দুর্নীতি, চুরি শিল্পে পরিণত হয়েছে রাজ্যে। ভাতায় বাঁধা পড়েছে বিশ্বকর্মাদের ভবিষ্যৎ। রাজ্যে এই মুহূর্তে ঋণের পরিমাণ ৫ লক্ষ ৮৬ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা। ঘটা করে বানিজ্য  সম্মেলন হচ্ছে রাজ্যে অথচ কর্মসংস্থান তথৈ বচঃ অবস্থায়।

বন্ধ কারখানার শ্রমিকদের অভিযোগ স্বল্প পারিশ্রমিকে দ্বিগুন কাজ করিয়ে নিত মালিকেরা। গালিগালাজ থেকে শুরু করে মারধর পর্যন্ত করে মালিক পক্ষ। অভিযোগ, পুজোর আগে প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা, বোনাস কিছুই দেবে না বলেই মালিক পক্ষ কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। একদিকে যখন হতশ্রী দশা রাজ্যের একাধিক শিল্পঞ্চলগুলির, তখন বিদেশি পুঁজি টানতে স্পেন সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার সফর সঙ্গী প্রাক্তন ক্রিকেট তারকা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় শালবনিতে ইস্পাত কারখানা শুরু করার প্রতিশ্রুতি
দিয়েছেন, অথচ শিল্পাঞ্চলে পুরনো কারখানাগুলির বেহাল দশা।

আরও পড়ুন: বিশেষ পরিকল্পনা ভাঙড়ে, হামলা রুখতে আসছে কলকাতা পুলিশের ‘বডি ক্যামেরা’

বদলায়নি সিঙ্গুরের হতাশা। যে জমিতে টাটার প্রস্তাবিত কারখানা হওয়ার কথা ছিল সেখানে আজ আবর্জনার স্তূপ। গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে কারখানা। কৃষকদের বলা হয়েছিল কারখানার জমি রাজ্য সরকার চাষযোগ্য করে কৃষকদের কাছে ফিরিয়ে দেবে। সেই প্রতিশ্রুতিও আজ বিশ বাঁও জলে। বিশাল জমি আগাছায় ভরপুর। কারখানা তৈরি হলে কর্মসংস্থান হতো বহু মানুষের, দাবি করছেন সাধারণ মানুষ। শ্রমিকদের ভাতে জল ঢেলে সিঙ্গুরের জমি এখন গবাদি পশুর চারণভূমি। যে সিঙ্গুরকে কেন্দ্র করে রাজ্যে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়েছিল সেই সিঙ্গুরই নিষ্কর্মা। রাজ্যে রাজনৈতিক পালা বদলের পর কেটে গেছে ১২ বছর। কৃষক শ্রমিকদের হাল ফেরেনি কোথাও। সিঙ্গুরে তাপসী মালিকের আবক্ষমূর্তির সামনে রয়েছে রাজ্যের বর্তমান শাসকদলের পতাকা, অথচ ১২ বছর পেরিয়ে গেলেও শিল্প-কৃষির নিটফল লবডঙ্কা।

Previous article
Next article
মহানগর ডেস্ক: অন্য রাজ্যে দোস্তি, শুধু পশ্চিমবঙ্গ আর কেরলে কুস্তি? আগামী লোকসভা ভোটে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিরোধী জোটে তৃণমূল কংগ্রেস এবং কংগ্রেসের সঙ্গে এই দু রাজ্যে হাতে হাত মেলাতে পারছে না সিপিএম (Opposition And Cpim)। সেইসঙ্গে অবিজেপি মঞ্চে সমন্বয় কমিটির বৈঠকগুলিতেও কোনও প্রতিনিধির নাম না জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। সূত্রের খবর, বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি-এই দুদলের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কসবাদী দল। এমন অবস্থান আগামী লোকসভা ভোটে বিজেপিকে হারানোর চেষ্টার ব্যাপারে প্রশ্ন তুলে দিল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। গত সপ্তাহের শেষাশেষি এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে দিল্লিতে সিপিএমের পলিটব্যুরোর বৈঠকে। গত সপ্তাহে ইন্ডিয়া কোঅর্ডিনেশন কমিটির বৈঠকে যোগ দেয়নি সিপিএম। তারা না আসায় বৈঠকে একটি আসন ফাঁকাও রাখা হয়েছিল। তবে সিপিএমের এহেন সিদ্ধান্ত তৃণমূল নেত্রীর সুপ্রিমোকে সেভাবে বিচলিত করেনি বলে মনে করা হচ্ছে। বাম নেতাদের সঙ্গে একমঞ্চে শামিল হওয়ার ধারণা আগেভাগেই অস্বস্তিতে রেখেছিল। সিপিএমের সিদ্ধান্ত সেই অস্বস্তি থেকে মুক্ত করেছে বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের। তবে বৈঠকের পর সিপিএমের পলিটব্যুরোর বিবৃতিতে এ নিয়ে কিছু জানানো হয়নি। বরং নথিতে বলা হয়েছে তারা বিরোধী ঐক্য অটুট ও বিস্তৃতি ঘটাতে একসঙ্গে কাজ করবে। পলিটব্যুরো জানিয়েছে তারা পাটনা,বেঙ্গালুরু, মুম্বইয়ে ইন্ডিয়া ব্লকের তিনটি বৈঠকে বিজেপিকে হারাতে দেশজুড়ে একাধিক সভা ও জনসমর্থন আদায় নিয়ে দলের অবস্থানকে তারা সমর্থন জানিয়েছে। তবে মমতা-সিপিএমের দ্বন্দ্বই শুধু নয়, আপ-কংগ্রেসের দ্বন্দ্বও বিরোধী ঐক্যে কাঁটা হিসেবে রয়ে গিয়েছে।

Most Popular