মহানগর ডেস্ক : সন্দেশখালি যাওয়ার পথে রাজারহাটের হাতিশালায় বিজেপি মহিলা মোর্চার নেতৃত্ব অগ্নিমিত্রা পাল, ভারতী ঘোষ, ফাল্গুনী পাত্র, লকেট চট্টোপাধ্যায়দের আটকে দিল পুলিশ। ১৪৪ ধারার নামে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। ভারতী ঘোষ এবং অগ্নিমিত্রা পাল পুলিশকে বলেন, “আমাদের ১৪৪ ধারার অর্ডার দেখান। বেআইনীভাবে রাজারহাটের মতো জায়গায় আটকে দিচ্ছে। ক্রিমিনালদের ৫৬দিন ধরে না। আমরা থানায় যাবো কেন?”
আগামীকাল আন্তর্জাতিক নারী দিবস। সেই উপলক্ষে সন্দেশখালি যাওয়ার জন্য বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল, সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, ফাল্গুনী পাত্র, শশী অগ্নিহোত্রী সহ বিজেপি মহিলা মোর্চার নেতৃত্ব রওনা হন। তবে পথে রাজারহাটের হাতিশালায় বিশাল পুলিশ বাহিনী ব্যারিকেড করে বিজেপি মহিলা মোর্চার প্রতিনিধিদের আটকে দেয়। পুলিশ বিজেপি মহিলা মোর্চার নেতৃত্ব ও কর্মীদের সন্দেশখালি যেতে না দেওয়ার পক্ষে যুক্তি দেয়– ১৪৪ ধারা জারি আছে। সন্দেশখালিতে গেলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে,তাই সন্দেশখালি যেতে দেওয়া হবে না বিজেপি মহিলা মোর্চার নেতৃত্বকে। এরপরই অনিমিত্রা পাল, লকেট চট্টোপাধ্যায়, ভারতী ঘোষ, ফাল্গুনী পাত্ররা প্রতিবাদে সোচ্চার হন। অগ্নিমিত্রা পাল, ভারতী ঘোষ, লকেট চট্টোপাধ্যায়, ফাল্গুনী পাত্র, শশী অগ্নিহোত্রী সহ উপস্থিত বিজেপি মহিলা মোর্চার নেতৃত্বকে টেনে হিঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তোলার চেষ্টা শুরু করে দেয়। ভারতী ঘোষ বলেন, “কেন আমাদের পুলিশ যেতে দিচ্ছে না? ১৪৪ ধারা নলা হচ্ছে, সেই নোটিশ দেখাতে হবে। না হলে আমরা পুলিশ ভ্যানে উঠব না।” অগ্নমিত্রা পাল বলেন, “একজন দুস্কৃৃতীকে ধরতে যে পুলিশের ৫৬ দিন সময় লাগে তারা আমাদের সন্দেশখালি যেতে বাধা দিচ্ছে? কি লুকোতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর পুলিশ?” লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সিঙ্গুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুরু, সন্দেশখালিতে শেষ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাস্তায় বসিয়ে ছাড়ব। এই সরকার কদিন চলে দেখুন।”
সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম নিয়ে যখন বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যজুড়ে আন্দোলন করছেন, তখন আমরা দেখেছি তাঁকে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার বিভিন্ন সময় রাস্তায় আটকে দিত পুলিশ দিয়ে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন রাস্তায় বসে পড়তেন। এরকমই সিঙ্গুরে বাধা পেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলবল নিয়ে বিধানসভায় গিয়ে ভাঙচুর করে। তবে বামফ্রন্ট মমতাকে আন্দোলনে বাধা দিয়ে জনসমর্থন হারিয়ে ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল-কংগ্রেস জোটের কাছে পরাজিত হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্ভবত সেই ইতিহাস এখন ভুলে গিয়েছেন। না হলে এটাই হয়তো শাসকের চরিত্র, তাই বিরোধী থাকা কালীন যা করে তিনি বামফ্রন্টের বাধার মুখে পড়তেন এখন নিজে রাজ্যের শাসকের আসনে বসে ঠিক সেই ভাবে বিজেপির আন্দোলনকে রাজপথে পুলিশ দিয়ে রুখে দিচ্ছেন। তবে নিউটাইনের হাতিশালায় বাধা পেয়ে বিজেপি মহিলা মোর্চা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুকরণ করে বিধানসভা ভাঙচুর করেনি, পুলিশি বাধায় প্রতিবাদ জানিয়ে আইনী পথে ১৪৪ ধারার নোটিশ দেখতে চেয়েছেন পুলিশ কর্তৃপক্ষের কাছে। প্রতিবাদ জানিয়ে বিজেপি মহিলা মোর্চা নেতৃত্ব পুলিশের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। তবে অবশেষে পুলিশ ভ্যানে তুলে নিয়ে গিয়েছে বিজেপি মহিলা মোর্চার নেত্রীদের।