মহানগর ডেস্কঃ দেশের প্রথম গঙ্গার নীচ দিয়ে মেট্রোর উদ্বোধনের পরেই বারাসতের সভাতে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানেই মহিলাতা দুর্গা,কালির মূর্তি দিয়ে নমোকে স্বাগত জানান। বারাসত থেকেই বিরোধীদের কড়া ভাষায় আক্রমণ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তুলেছেন সন্দেশখালির প্রসঙ্গ। ফের একবার টেনেছেন পরিবাদের তত্ব। নিশানা করেছেন রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে।
সন্দেশখালির প্রভাব গোটা বাংলাজুড়ে পড়বে বলেই এদিনের সভা থেকে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, পুরো বাংলায় সন্দেশখালির ঝড় উঠবে”। এখানেই শেষ নয় তৃণমূল সরকারকে নিশানা করে বলেছেন, “বাংলার মা বোনেদের সঙ্গে ঘোর পাপ করেছে তৃণমূল। সন্দেশখালিতে যা হয়েছে তাতে যে কারও মাথা নিচু হয়ে যাবে। কিন্তু আপনাদের সঙ্গে যা হয়েছে তাতে এই সরকারের কিছু এসে যায় না। হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টেও ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য। এক কিছু সত্ত্বেও সব জায়গায় মা বোনেদের উপর অত্যাচার করছে তৃণমূল নেতারা। আর ওই নেতাদের উপর ভরসা রয়েছে দলের। কিন্তু বাংলার মা-বোনেদের উপর ওদের ভরসা নেই। ওরা দুষ্কৃতীদের বাঁচানোর চেষ্টা করে সবসময়।” রাজ্যের সমস্ত প্রান্তে যেখানে যেখানে মহিলাদের উপর অন্যায় হচ্ছে সেই সমস্ত জায়গাতে মহিলাদের ঘুরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
বারাসতের সভা থেকে মহিলাদের জন্য মোদী সরকাররে বিভিন্ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরেছেন। নারীশক্তি উন্নয়নে মোদী সরকাররে ভূমিকার কথা তুলে ধরেছেন। নমো বলেছেন বাংলার মা-বোনেরা সকলেই চাইছেন এবারে কেন্দ্রে এনডিএ সরকার ক্ষমতায় আসবে। তিনি আরও বলেছেন, “বাংলার মহিলাদের দোষীদের বাঁচাতে পুরো শক্তি লাগিয়েছে। কিন্তু হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য। গরিব, দলিত আদিবাসী মহিলাদের সঙ্গে তৃণমূলের নেতারা জায়গায় অত্যাচার করছে, কিন্তু TMC সরকারকে আপনার অত্যাচারী নেতার ওপর ভরসা রয়েছে, বাংলার মা-বোনেদের ওপর ভরসা নেই। এই কারণেই বাংলার মেয়েরা আক্রোশে রয়েছে। এই আক্রোশ সন্দেশখালি পর্যন্তই সীমিত নেই, সম্পূর্ণ বাংলাতেই সন্দেশখালির ঝড় উঠবে। আমি দেখছি তৃণমূলের মাফিয়ারাজ ধ্বংস করতে বাংলার নারীশক্তি জেগে উঠবে। সন্দেশখালির মহিলারাই দেখিয়েছে, তাঁদের আওয়াজ শুনবে কেবল বিজেপি। তোলাবাজদের হয়ে কাজ করা তৃণমূল সরকার মেয়েদের কথা শুনবে না। যেখানে কেন্দ্র সরকার ধর্ষণের মতো অভিযোগের জন্য ফাঁসির সাজার ব্যবস্থা করেছে। মহিলারা যাতে অভিযোগ জানাতে পারে, তাই মহিলা হেল্পলাইন বানিয়েছে। কিন্তু এখানে এই সুবিধা লাগু হতে দিচ্ছে না।
পরিবার বাদ নিয়েও এদিন বিরোধীদের নিশানা করেছেন। তাঁকে কটাক্ষ করার যাবতীয় জবাবও দিয়েছেন। বলেছেন, “গোটা দেশবাসী এখন মোদীর পরিবার বলছে। কিছু মানুষের মনে হয়, কোনও রাজনৈতিক নেতা আমাকে গালি দিয়েছে, তাই আপনাদের সবাইকে নিজের পরিবার বলছি। আসলে আজ সত্যিটা বলছি। আমি অনেক ছোটো বয়সে ঘর থেকে একটা ঝোলা নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিলাম। পরিবার ছেড়ে দেশের কোণায় কোণায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম। কিছু খোঁজার চেষ্টা করছিলাম। আমার পকেটে কখনও এক পয়সাও ছিল না। কিন্তু আপনার জেনে গর্ব হবে, আমার পকেটে পয়সা ছিল না, না কোনও মাথার ওপর ছাদ ছিল। শুধু আমার কাঁধে ঝোলা ছিল। কোনও না কোনও মা-বাবা, কোনও বোন, আমাকে প্রশ্নটা করেই ফেলত, ‘বাবা তুমি কি কিছু খেয়েছো?’ আমি আজ বলছি, সালের পর সাল আমি পরিবার ছেড়ে ছিলাম। আমার পকেটে পয়সাও ছিল না। কিন্তু আমি এক দিনই খালি পেটে থাকি নি। তাই আমি বলি, এটাই আমার পরিবার। ১৪৪ কোটি দেশবাসী আমার পরিবার।”