মহানগর ডেস্ক: শেখ শাহজাহানকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রেফতার করছে না এটা ঠিক নয়। এই নিয়ে কেউ ক্ষোভ, বিদ্বেষ রাখবেন না। শাহজাহানকে তৃণমূল আড়াল করছে না, আড়াল করছে বিচার ব্যবস্থা। যারা শেখ শাহজাহানের গ্রেফতার চাইছেন তারা হাই কোর্টে অনুরোধ করুন। কলকাতা হাই কোর্টের স্থগিতাদেশের জন্য শেখ শাহজাহানকে পুলিশ ধরতে পারছে না। আর কলকাতা হাই কোর্টে এই স্থগিতাদেশ চেয়েছে ইডি। তারাই শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে। রবিবার সন্দেশখালিকাণ্ড এবং শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারি নিয়ে বজবজ থেকে এমনই মন্তব্য করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার সন্দেশখালি থেকে শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে এই একই কথা বলেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক।
রবিবার বজবজে এক অনুষ্ঠানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “৫ জানুয়ারি শেখ শাহজাহানের ওখানে ইডির উপর হামলার যে অভিযোগ হয় তার পর ইডি এফআইআর করে, হাই কোর্টে জয় সেনগুপ্তর এজলাসে ইডি মামলা করে। আদালত এসআইটি গঠনের নির্দেশ দেয়। তার দিন দশে পড়ে ইডি হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করে এই মামলায় স্থগিতাদেশ চায়। এটা কে করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? এটা করেছেন হাই কোর্টের বিচারপতি। এর শুনানি ৬ মার্চ। হাই কোর্ট যদি প্রচাসনের হাত-পা বেধে দেয় কি করে গ্রেফতার করবে পুলিশ? পুলিশকে ১৫ দিন সময় দেবেন না, ইডি, সিবিআইকে ১২ বছর সময় দেবেন! একটা রাজশেখর মান্থার বেঞ্চ একটা প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ স্থগুতাদেশ দিয়েছে। যারা বলছে শেখ শাহজাহানকে তৃণমূল আড়াল করছে সেই সব নেতা, মানবাধিকার কর্মীরা ফুটেজ পাওয়ার জন্য এসব করছে। উত্তম সর্দার, শিবু হাজরার বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়, পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আরে তৃণমূল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো নেতাকে রেয়াত করে না তৃণমূল। যে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে নারদার টাকা নেওয়ার ভিডিও বিজেপি দেখিয়েছে সেই শুভেন্দুকে বিজেপি দলে নিয়েছে। হিমন্ত বিশ্ব শর্মাকে বিজেপিতে নিয়েছে। এটাই হচ্ছে নরেন্দ্র মোদীর গ্যারিন্টি। মানুষ জানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিচার দেবেন, তাই তাঁর কাছে আবেদন করছে। কাশ্মীর থেকে সুদীপ্ত সেনকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন ধরে এনেছে। সংবাদ মাধ্যম দেখাচ্ছে দিল্লির কৃষক আন্দোলন? শেখ শাহজাহানকে তৃণমূল গার্ড করছে না। যদি কেউ গার্ড করে থাকে জুডিশিয়ারি গার্ড করছে। ইনভেস্টিগেশন স্থগিতাদেশ মানে চাইলে থানায় ডেকে আনা যাবে না অভিযুক্তকে। স্থগিতাদেশ চেয়েছে ইডি। প্রধান বিচারপতি স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। শেখ শাহজাহানকে তৃণমূল আড়াল করছে না, আড়াল করছে হাই কোর্ট।”
এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলোন, “সন্দেশখালি নিয়ে যা তথ্য আসছে তাতে কেউ অভিযুক্ত হলে তৃণমূল ক্ষমা করবে না। ২০১৬ পর্যন্ত সিপিএমের নিরাপদ সর্দার সন্দেশখালির বিধায়ক ছিলেন। কেন তখন কিছু বলেননি? তিনি তো একটা কাগজে অভিযোগ লিখে সংবাদ মাধ্যমকে ডেকেও অভিযোগ করতে পারতেন। কেন করেননি?”
এই প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অভিষেক বলেন, “শুভেন্দু অভিকারীর সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেখ শাহজাহানের অনেক ছবি পাবেন, তখন কেন শুভেন্দু কিছু বলেননি? কেউ যদি চায় ইচ্ছাকৃত বিভাজন সৃষ্টি করবে তার জবাব মানুষ দেবে। ২০২১ সালেও জোর করে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছে, মানুষ জবাব দিয়েছে। আমরা পরিস্থিতি ঠিক হলে সন্দেশখালি যাবো। ১০ তারিখ ব্রিগেড সমাবেশের পর সন্দেশখালি আমরা যাবো। এই মুহূর্তে সন্দেশখালিতে সভা না করাই ভালো। মানুষ বাঁচলে, সম্প্রীতি ঠিক থাকলে সব হবে।”
অভিষেক এদিন বলেন, “আগামী ১০ মার্চ ব্রিগেডে তৃণমূলের ট্রেলার দেখবেন, সিনেমা দেখা যাবে ভোটে।”