কলকাতা: দিল্লিতে চলতি সপ্তাহে বসতে চলেছে জি ২০ শীর্ষ সম্মেলন। সেই বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর তরফ থেকে যে আমন্ত্রণ পত্র বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়েছে, তাতে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’র বদলে লেখা ছিল ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’। তারপর থেকেই দেশের নাম বদল নিয়ে শুরু হয়েছে প্রবল চর্চা। তবে শুধু চর্চাই নয় হচ্ছে বিতর্কও। কেন্দ্র দেশের নাম পরিবর্তন করতে চাইছে বলেও উঠছে অভিযোগ। দেশের নাম বদল নিয়েই এবার প্রশ্ন তুললেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ সরকারী বিবৃতিতে ভারতের নাম উল্লেখ প্রসঙ্গে “হঠাৎ শুধুমাত্র ভারত ব্যবহার করার” প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ২০ শীর্ষ সম্মেলনে এবং নৈশভোজের আমন্ত্রণ পত্রে রাষ্ট্রপতির পাঠানো চিঠিতে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’র বদলে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’ দেখার পর শুরু হওয়া বিতর্কের ইঙ্গিত করে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিশ্ব দেশটিকে ইন্ডিয়া হিসাবে জানে। টুইট করে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, “আমি শুনেছি যে ভারতের নাম পরিবর্তন করা হচ্ছে। মাননীয় রাষ্ট্রপতির নামে যে G20 আমন্ত্রণটি প্রকাশ পেয়েছে তাতে ভারত লেখা আছে। ইংরেজিতে, আমরা বলি ইন্ডিয়া এবং ইন্ডিয়ান কনস্টিটিউশন। হিন্দিতে, আমরা বলি ‘ভারত কা বিধান। আমরা সবাই বলি ‘ভারত’, এতে নতুন কী আছে?” এখানেই শেষ নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেছেন, “নতুন কিছু করার নেই। বিশ্ব আমাদের ইন্ডিয়া বলেই জানে। হঠাৎ আজ কী হল যে দেশের নামটাও বদলে দিতে হল। কবে তো কবি ঠাকুরের নাম বদলে দেবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সব নাম বদলে দিচ্ছে। বড় বড় ঐতিহাসিক সৌধের নাম বদলে দিচ্ছে। ইতিহাসকে পরিবর্তন করে দিচ্ছে। হঠাৎ কী হল যে দেশের নাম বদলাতে হবে?” শিক্ষক দিবসে একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি এই প্রশ্ন করেছেন।
এই নাম বদল নিয়ে মুখ খুলেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, কংগ্রেস মুখপাত্র জয়রাম রমেশ। তিনি খোঁচা দিয়ে বলেছেন, “তাহলে খবরটা সত্যি। রাষ্ট্রপতি ভবনের তরফে জি২০ সম্মেলনের যে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে সেখানে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’র বদলে লেখা, ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’। এখন তো সংবিধানেক ১ নং অনুচ্ছেদ পড়তে হবে, ভারত, যা আগে কি না ইন্ডিয়া ছিল, সব রাজ্যের সমষ্টি। তবে সেই ‘রাজ্যের সমষ্টি’ তো হামলার মুখে পড়েছে।” সব মিলিয়ে দেশের নয়া নাম নিয়ে দেশের রাজনৈতিক মহলে উত্তাপ বেড়েই চলেছে।