মহানগর ডেস্ক: তেত্রিশ বছর জেলে কাটাবার পর প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডে (Rajiv Gandhi Assassination) সাজাপ্রাপ্ত নলিনী শ্রীহরণ-সহ পাঁচজনকে মুক্তি দিল সুপ্রিম কোর্ট (Released By Supreme Court)। এর আগে গত মে মাসে স্বীয় ক্ষমতা বলে হত্যাকাণ্ডে সপ্তম সাজাপ্রাপ্ত পেরিয়ারিভালামকে মুক্তি দেয় শীর্ষ আদালত। আদালত জানিয়েছে বাকি সাজাপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে একই নির্দেশ প্রয়োগ করা হয়েছে। এদিকে ২০১৮ সালে তামিলনাডু সরকার রাজ্যপালকে সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তি দেওয়ার জন্য সুপারিশ জানিয়েছিল। ১৯৯১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীকে হত্যার অপরাধে নলিনীর পাশাপাশি শ্রীহরণ,সান্থন, মুরুগন, রবার্ট পায়াস ও আরপি রবিচন্দ্রণকে কারাবাসের দণ্ড দেওয়া হয়। এদিকে রাজীব গান্ধী হত্যামামলায় তামিলনাডুতে তীব্র ভাবাবেগের সৃষ্টি করে।
সে রাজ্য কী এআইএডিএমকে বা ডিএমকে তাদের মুক্তির জন্য প্রচার চালায়। তামিলনাডুর অনেকেই মনে করতেন রাজীব গান্ধী হত্যায় সাতজন জেলবন্দির সামান্য ভূমিকা ছিল। প্রতারণা করে তাদের হত্যা ষড়যন্ত্রে ফাঁসানো হয়েছে। তারা ওই বিষয়ে খুবই কম জানতেন। ১৯৯১ সালে তামিলনাডুর পেরামপুদুরে শ্রীলঙ্কার এলটিটিই-র এক মহিলা মানব বোমা বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে যান প্রধানমন্ত্রীর দেহ। হত্যায় জড়িত থাকার দায়ে সাতজনকে প্রাণদণ্ডের সাজা দেয় আদালত। ২০০০ সালে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী সোনিয়ার হস্তক্ষেপে মৃত্যুদণ্ডের বদলে যাবজ্জীবন কারাবাস হয়। ২০০৮ সালে ভেলোর জেলে নলিনীর সঙ্গে দেখা করেন রাজীব গান্ধীর মেয়ে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা। ২০১৪ সালে আরও ছজনের সাজার মেয়াদ কমানো হয়। ওই বছরই তাদের মুক্তির জন্য তামিলনাডুর তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতা উদ্যোগ নেন।
এদিকে, রাজীব গান্ধীর হত্যাকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের তীব্র করেছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা জয়রাম রমেশ জানিয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর বাকি হত্যাকারীদের সুপ্রিম কোর্টের মুক্তির সিদ্ধান্ত কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এটা পুরোপুরি ভুল। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা যে সুপ্রিম কোর্ট এই ইস্যুতে ভারতীয়দের ভাবাবেগের কথা না ভেবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্যদিকে নলিনীর দাদা বাকিয়ানাথন জানান, সাজাপ্রাপ্তরা ইতিমধ্যেই তেত্রিশ বছর জেল খেটেছে। তাদের প্রচুর ভোগান্তিও হয়েছে। মানবিকতার কারণে মুক্তি দেওয়া হয়ছে। যাঁরা এই মুক্তির বিরোধিতা করছেন, তাঁদের ভারতের আইনকে শ্রদ্ধা জানানো উচিত।
.