মহানগর ডেস্কঃ এক দল, রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে মতও প্রায় এক। অথচ সেই সম মতের দুই মানুষকে এক সঙ্গে, এক মঞ্চে পাওয়া দুষ্কর। রাজ্যের শাসক দলকে আগামী মাসে অর্থাৎ ডিসেম্বর মাসেই কাঁপতে দেখা যাবে বলে মনে করেন একজন। আবার অন্যদিকে একজন মনে ডিসেম্বরেই রাজ্যের শাসকদলের অবস্থা ভাঁড়ে মা ভবানী। তাহলে? একই মত হল কিনা? অথচ মুখোমুখি দেখা করতে পারছেন না কেউই।
গত বুধবার বিধানসভাও সাক্ষী থাকল এই ঘটনার। এই দিন দুপুরে বিজেপি পরিষদীয় দলের সঙ্গে দেখা করতে সুকান্ত মজুমদার পৌঁছান বিধানসভায়। এদিকে তার ঠিক দশ মিনিট আগেই দলের পরিষদীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী বিধানসভা ছেড়ে চলে যান। বিড়ম্বনায় পড়েন সুকান্ত মজুমদার। তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, গাফিলতিটা তাঁরই। এক ঘন্টা লেট তাঁরই হয়েছে। তবে এই বিষয় নিয়ে শুভেন্দুর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
বিধানসভা চত্বরে রাজ্য বিজেপির শীর্ষনেতার এই লুকোচুরি খেলার মজা লুটেছে রাজ্যের শাসক দল। তাঁদের বক্তব্য বিজেপির লড়াই বিজেপির সঙ্গেই। কেউ কেউ আবার বলছেন, সুকান্ত শুভেন্দু ‘কত কাছে তবু কত দূরে’। এ তো গেল রাজ্যের শাসকদলের মনোভাব। কিন্তু সুকান্ত – শুভেন্দুর আচরণে বিজেপির অন্দরেও উঠছে প্রশ্ন। দুই শীর্ষনেতার এমন সমন্বয়ের অভাব। প্রভাব ফেলতে পারে সংগঠনের নিচু তলায়। এদিকে বিজেপি নেতৃত্ব সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচনকে মাথায় রেখে জেলেয় জেলায় নিচু তলার কর্মীদের এক সূত্রে গাঁথতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর তারই মধ্যে দলের শীর্ষ নেতাদের এহেন আচরণ।
শুধু এই দিনের ঘটনাই নয়। এর আগে সোমবার ধর্মতলায় ওয়াই চ্যানেলের বিজেপির সভামঞ্চে সুকান্ত – শুভেন্দুর একসঙ্গে হাজির হওয়ার সম্ভাবনা ভেস্তে যায়। এদিন বিজেপির সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু। আবার ওদিকে সুকান্ত মজুমদার দলের কর্মীদের সঙ্গে পদযাত্রায় অংশ নিলেও মঞ্চে তাঁকে উঠতে দেখা যায়নি।
এ দিন বিধানসভার গেটে দাঁড়িয়ে জোর গলায় জানিয়েছেন, শুভেন্দুর সঙ্গে তাঁর কোনও বিরোধ নেই, সব কিছু ঠিকঠাকই চলছে। তাঁর কথায়, ‘এই তো, মাস দেড়েক আগে আমার বাড়িতে শুভেন্দুবাবু এসেছিলেন। কথা হয়েছে। এ সব একান্ত আলাপচারিতার মুহূর্ত আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে চাই না।’ এর পরেই সংবাদমাধ্যমকে উদ্দেশ করে সুকান্ত বলেন, ‘আপনাদের মন রাখতে এ বার শুভেন্দুবাবুর সঙ্গে আমার রুদ্ধদ্বার বৈঠকের ছবিও সোশ্যাল মিডিয়ায় দিতে হবে বলে মনে হচ্ছে।’