মহানগর ডেস্ক : সন্দেশখালির বেড়মজুর এবং ঝুপখালির উত্তাপ ক্রমেই বাড়ছে। ঝুপখালিতে রাস্তা আটকে আগুন জ্বালিয়ে রীতিমতো পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে সাধারণ মানুষ। ডিআইজি বারাসত রেঞ্জ, বসিরহাটের এসডিপিও, এসডিপিও মিনাখা বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে পরিস্থিতি সামলাতে পারছে না। ১৪৪ ধারা জারি থাকার পরও স্থানীয় সাধারণ মানুষ এবং স্থানীয় মহিলারা পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। এক ব্যক্তিকে পুলিশের চোখের সামনেই বেশ কিছু উত্তেজিত জনতা বেধরক মারে। সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লকের বেড়মজুর, ঝুপখালিতে ১৪৪ ধারা জারি করেও পুলিশ পরিস্থিতি সামলাতে পারছে না।
শুক্রবার ডিজিপি রাজীব কুমার সন্দেশখালিতে পৌঁছে বলেন, “কেউ আইন হাতে তুলে নিলে পুলিশ কঠিন ব্যবস্থা নেবে।” তবে তার পরেও জনতার ক্ষোভ বিন্দুমাত্র প্রশমিত হয়নি। স্থানীয় মানুষের প্রথম দাবি শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে হবে। দ্বিতীয় দাবি শেখ শাহাজাহানের ভাই চেখ সিরাজকে গ্রেফতার করতে হবে। তৃতীয় দাবি পুলিশের শাস্তি চাই। কেন এই পরিস্থিতি? এর উত্তর একটাই দিনের পর দিন শেখ শাহজাহান,উত্তম,শিবুর কোদালেট বাটের বাড়ি খেয়ে গ্রামের পুরুষেরা জেরবার হয়েছে। জমি কেড়ে, ধানি জমিতে নোনা জল ঢুকিয়ে চাষের জমি নষ্ট এবং লুট করেছে শেখ শাহজাহান বাহিনী। মহিলাদের রাতের পর রাত পার্টি অফিসে তুলে নিয়ে শেখ শাহজাহান ও তার অনুগামী উত্তম ও শিবুর বাইক বাহিনী তুলে নিয়ে যায়। রাতভর মহিলাদের শ্লীলতাহানি করে। এই ঘটনা পুলিশের কাছে বলতে গেলে, নালিশ জানাতে গেলে বলা হয়েছে বড় ভাইর কাছে যাও, ছোটো ভাইর কাছে যাও। এই বড় ভাই হল শেখ শাহজাহান, ছোটোভাই শেখ সিরাজউদ্দীন, এই অভিযোগ করছে সাধারণ গ্রামের পুরুষ-মহিলারা।
আজ শুক্রবার তৃণমূল নেতা অজিত মাইতির বাড়িতে হামলার পর এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় এমন ৫ জনকে পুলিশ আটক করলে গ্রামবাসীর ক্ষোভ পুরোটাই গিয়ে পুলিশের উপর পড়ে। গ্রামবাসীরা অভিযোগ করে, শেখ শাহজাহানকে যে পুলিশ ধর্ষণ, খুন, কমি দখল, চাষের জমি নষ্ট করার অভিযোগ থাকার পরও গ্রোফতার করতে পারে না, সেই পুলিশ কোন লজ্জায় তৃণমূল নেতা অজিত মাইতির বাড়িতে আগুন দেওয়ার জন্য নিরপরাধ ৫ জনকে আটক করে? এদিকে সদেশখালিতে ফিরে শুক্রবার ডিজিপি রাজীব কুমার বলোন, “ভুল আমাদেরও হয়েছিল। তবে কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না।” তবে শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতারির কি হবে? কেনই বা শেখ শাহজাহানের ভাই শেখ সিরাজউদ্দীনকে পুলিশ গ্রেফতার করছে না, সেই প্রশ্ন তোলে সাধারণ মানুষ।
এদিকে বিজেপির মহিলা মোর্চা নেত্রী ফাল্গুনী পাত্র বলেন, “১৪৪ ধারা জারি করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণ মানুষের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করছে। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী একটি ছাত্রীকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। এসব করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর পুলিশ বাহিনী প্রতিবাদীদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে কিন্তু মানুষয় ভয়কে জয় করে রাস্তায় নেমেছে।” এই পরিস্থিতিতে কেন রাজ্যের শাসকদলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করছে না, সেটাই বড় প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে!” এদিকে পুলিশ ১৪৪ ধারা মেনে চলার জন্য সন্দেশখালি থানার তরফে মাইকিং করছে। আগুন নিভিয়ে, ঝুপখালির রাস্তা ফাঁকা করার কাজ শুরু হয়েছে। ডিআইজি বারাসত রেঞ্জ, এসপি বসিরহাট ঘটনাস্থলে রয়েছেন। পুলিশের নির্দেশ সবাইকে গ্রেফতার করার। লাঠি হাতে বেড়মজুরের দিকে পুলিশ রওনা হয়েছে।