Abhishek Banerjee
মহানগর ডেস্ক : ২০২১ -এর পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় তৃণমূলের বিপুল সাফল্যের পিছনে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের ভূূমিকা সর্বজনবিদিত। সেবার বিজেপি শীর্ষ নেতা অমিত শাহ বাংলায় প্রচারে এসে বলেছিলেন, বাংলায় তারা ২০০-র বেশি আসন পেয়ে ক্ষমতায় আসতে চলেছেন। প্রশান্ত কিশোর বা পিকে তখন বলেছিলেন, বাংলায় বিজেপি আগে ১০০ আসন পেয়ে দেখাক। পিকে-র ভবিষ্যৎবাণী অক্ষরে অক্ষরে মিলে গিয়েছিল। ১০০ আসন বিজেপি বাংলায় ২০২১ -এর বিধানসভা নির্বাচনে পায়নি, ২০০ তো দূরের কথা। তার পরই এক লাফে বেড়ে গিয়েছিল পিকে-র ভোটকুশলী হিসাবে জনপ্রিয়তা। সেই পিকে এবার একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপি চমকপ্রদ ফল করবে। তৃণমূলকে টপকে বাংলার এক নম্বর দল হিসাবে নিজেদের তুলে আনতে পারে বিজেপি, ওই সাক্ষাৎকারে এমনই দাবি করেছেন পিকে। পিকের এহেন ভবিষ্যৎবাণী যে মোটেই তৃণমূলের ভালো লাগেনি সেটা একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে তাঁর একটি ছোট্ট উক্তিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বাংলা সংবাদ চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “প্রশান্ত কিশোর ওভাররেটেড, ওভারহাইপড।”
অভিষেকের এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে, তাহলে কী ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বাংলার ফলাফল নিয়ে পিকে-র বক্তব্যে ক্ষুব্ধ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়? তাই কি তিনি তাঁর এক সময়ের ভোটকুশলীকে এভাবে খাটো করলেন? যদি প্রশান্ত কিশোর ওভাররেটেড, ওভারহাইপড হন তাহলে ২০২১ -এর বিধানসভা নির্বাচনে কেন পিকে এবং তাঁর সংস্থা আইইপ্যাককে তৃণমূল বহুমূল্য দিয়ে ভোটকুশলী হিসাবে কাজে লাগিয়েছিলেন? কেনই বা পিকের স্লোগান, “বাংলা নিজের মেয়েকে চায়”-এ নির্ভর করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তখন বিভিন্ন জনসভায় প্রচার চালিয়েছিলেন? কেন তখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন নির্বাচনী জনসভায় গিয়ে বলতেন, ” বাংলা” উত্তরে সভায় উপস্থিত তৃণমূল কর্মী, সমর্থক,নেতারা বলতেন, “নিজের মেয়েকে চায়?”
২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের জয়ের নেপথ্য কারিগর যে পিকে-ই ছিলেন সেটা বাংলার মানুষ এবং তৃণমূল জানে। তবে এখন পিকে-র সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব বেড়েছ। মা-মাটি-মানুষের দল তৃণমূলকে এক সময় যিনি কর্পোরেট তৃণমূল বানিয়ে ফেলেছিলেন, এখন সেই পিকের সঙ্গে তৃণমূলের নৈকট্য নেই। তাই হয়তো অভিষেক বলেছেন, পিকেকে নিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি প্রচার হয়। এটা যদি অভিষেকের পিকেকে উড়িয়ে দেওয়ার একটা কারণ হয় তাহলে অন্যটি অবশ্যই পিকের এবারের লোকসভা নির্বাচনের ফল নিয়ে পিকে-র ভবিষ্যৎবাণী, যেখানে তিনি বলেছেন, “২০২৪-এর লেকসভা নির্বাচনের ফলে বাংলায় বিজেপি তৃণমূলকে টপকে এক নম্বর দল হিসাবে উঠে আসতে পারে।” এই কথা শুনে বিজেপির প্রতিপক্ষ তৃণমূল দলের সেনাপতির উষ্মা প্রকাশ করাটা খুবই স্বাভাবিক।
মহানগর ডেস্ক : সন্দেশখালি নিয়ে দলের কি অবস্থান, বুধবার বসিরহাটের বিএসএসএ ফুটবল ময়দানের নির্বাচনী সভা থেকে স্পষ্ট করে দিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি তিনি বলেন, “সম্দেশখালি নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। শেখ শাহজাহানকে ইডি বা সিবিআই নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ গ্রেফতার করেছে।”
এদিকে অভিষেকের এই মন্তব্যের জবাবে সন্দেশখালির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দার বলেন, “অভিষেক তাহলে মেনে নিলেন শেখ শাহজাহানকে তাঁরাই লুকিয়ে রেখেছিলেন। না হলে শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে ৫৬ দিন সময় লাগল কেন? কেই দীর্ঘদিন ধরে সন্দেশখালির বিভিন্ন এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে সাধারণ মানুষের সমস্যা বাড়িয়ে দেওয়া হল?” জনগর্জন সভা মঞ্চ থেকে অভিষেক বুধবার বলেন,“পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিরা যদি কারও সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন, যদি কেউ ভেবে নেন যে পঞ্চায়েতে জিতেছেন বলে হাতির পাঁচ পা দেখেছেন- তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে আমরা রেয়াত করি না।” এরপরই অভিষেকের স্পষ্ট উক্তি, “শেখ শাহজাহানকে ইডি বা সিবিআই নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ গ্রেফতার করেছে।” অভিষেক এদিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলে বলেন, “যাঁদের বিরুদ্ধে সন্দেশখালিতে মূলত নারী নির্যাতনের মতো অভিযোগ উঠেছিল, সেই শিবু হাজরা, উত্তম সর্দারকে কেন সিবিআই হেফাজতে নেওয়া হচ্ছে না?” এই দু’জনকে অবশ্য শেখ শাহজাহানের আগেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
অভিষেক এদিন আরও বলেন, “শুধু শাহজাহান নয়, সুদীপ্ত সেনকেও গ্রেফতার করেছিল রাজ্যের পুলিশ। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে দল।” এদিন অভিষেক গর্বিতভাবে দাবি করেন, অন্য কোনও রাজনৈতিক দল নিজেদের নেতাদের জেলে ঢোকায় না। এদিন বসিরহাটের সভা থেকে লোকসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে অভিষেক দাবি করেন, এবার বাংলা আর বাংলা-বিরোধীদের লড়াই। অভিষেক এদিন দাবি করেন, অভিযোগ পেলেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘাড় ধাক্কা দিয়ে জেলে ঢোকায়। বিজেপির উদ্দেশ্য নারী সুরক্ষা নয়, মানুষকে ভুল বুঝিয়ে তৃণমূলের সংগঠনকে দুর্বল করে দেওয়া।
কয়লাকাণ্ডে শীর্ষ আদালতে স্বস্তি! ভোটের সময় অভিষেককে দিল্লিতে ডাকতে পারবে না ইডি
মহানগর ডেস্ক : কয়লা পাচারকাণ্ডে ভোটের মুখে সুপ্রিম কোর্ট স্বস্তি দিল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
কয়লাকাণ্ডে ইডি সমনের বিরোধিতায় শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তৃণমূলের বিদায়ী সাংসদ, এই আবেদনেই মিলেছে স্বস্তি। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে তলব করতে পারবে না ইডি। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী১০ জুলাই, ততোদিনে ভোটের ফল প্রকাশ হয়ে যাবে।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক দীর্ঘদিন ধরে কয়লা পাচার মামলায় ইডির নজরে রয়েছেন। কলকাতার পাশাপাশি দিল্লিতে একাধিকবার হাজিরাও এই জন্য তিনি দিয়েছেন। লোকসভা ভোটের কাজে এখন প্রচারের কাজে ব্যস্ত অভিষেক। ফলে এর মাঝে ইডি তলব করলে হাজিরা দেওয়ায় সমস্যা আছে। সেই কারণেই ইডি সমনের বিরুদ্ধেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর তরফে আদালতে আইনজীবী কপিল সিবল আর্জি জানান যে, লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন অর্থাৎ জুলাই পর্যন্ত যেন অভিষেককে যেন ইডি দিল্লিতে তলব না করে।
এদিন এই আর্জির পিছনে কপিল সিবল বলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তিনি একজন বিদায়ী সাংসদ। এবার ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের হয়ে আবার তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পয়লা জুন ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে ভোট। বরাবর ইডির তদন্তে সহযোগিতা করছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ইডির নির্দেশ মত দশ বছরের আয়করের নথিও জমা দিয়েছেন। একাধিকবার তলবে সাড়া দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে মুখোমুখিও হয়েছেন। তাই আপাতত তাঁকে যেন ডাকা না হয়।
কপিল সিবলের এই আর্জির পরই সুপ্রিম কোর্টের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয় যে, লোকসভা ভোট চলাকালীন অভিষেককে দিল্লিতে তলব করা যাবে না। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১০ জুলাই। প্রসঙ্গত, কয়লা পাচার মামলায় ২০২৩ সালের ২১ মার্চ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে শেষবার অভিষেককে দিল্লিতে তলব করা হয়েছিল ইডির তরফে।
তবে শীর্ষ আদালতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্বস্তি পেলেও, বিরোধীরা ভোটের প্রচারে কয়লা পাচারকাণ্ডে তাঁর আদালতে স্বস্তির জন্য আবেদন করার প্রসঙ্গ টেনে তাঁকে যে অভিযুক্ত হিসাবে তুলে ধরে প্রচার চালাবে সেটা সহজেই অনুমেয়।
মহানগর ডেস্ক : গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে বিপর্যয়ের ঘটনায় প্রশাসন, পুরসভাকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন বিরোধীরা। ২ তলা নির্মাণের অনুমোদন থাকা সত্ত্বেও কভাবে বাকি চারটি তলা উঠলো? কীভাবে মিললো অনুমতি? উঠছে প্রশ্ন। আর এবার বিরোধীদের পাল্টা কড়া বার্তা দিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
অভিষেকের বক্তব্য, ‘যে ঘটনা ওখানে ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং দুর্ভাগ্যজনক। এ নিয়ে আমি মনে করি রাজনীতি করা উচিত নয়। বিরোধী দল যারা অভিযোগ তোলা শুরু করেছে আমি তাঁদের অনুরোধ করবো রাজনীতিটা দুদিন পরে করলেও হবে।’ নাম না করে তৃণমূল নেতা নিশানা করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। অভিষেক কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘দিল্লি থেকে বসে বড় বড় ভাষণ না দিয়ে উদ্ধারকার্যে প্রশাসনের পাশে দাঁড়ানো উচিত।’
দল মত নির্বিশেষে সচেয়ে আগে জরুরী উদ্ধারকার্য সম্পন্ন করা। অভিষেকের অনুরোধ, ‘এখন উদ্ধার কাজে দলমত নির্বিশেষ, যদি সমাজের স্বার্থে এগিয়ে আসি, মানুষের প্রানের থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই সমাজে আর কিছু নয়। আমি তাই অনুরোধ করব রাজনীতি ৪৮ ঘণ্টা পরেও হবে।’ প্রশাসনের সকল স্তরের মানুষকে একযোগে এখন উদ্ধার কার্যে নজর দেওয়া উচিত বলেই জানান তিনি। আজকের ঘটনা যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সর্বস্তরের জনপ্রতিনিধি পুরসভা প্রশাসন এবং কোর্ট এই তিনটে প্রতিষ্ঠানের সমন্বয় থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মত তাঁর।’
নবজোয়ারের পর জনগর্জন! জলপাইগুড়ি দিয়ে প্রচার শুরু তৃণমূলের? নেতৃত্বে অভিষেক
মহানগর ডেস্ক : ব্রিগেডের জনগর্জন সভায় তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরেই জোর কদমে শুরু হয়েছে দেওয়াল লিখন। জনগর্জনকে হাতিয়ার করে এবার জেলায় জেলায় সভা করবে তৃণমূল। কার্যত লোকসভা ভোটের প্রচার উত্তরবঙ্গ থেকে শুরু করতে চলেছে শাসকদল। নেতৃত্বে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রার্থী। ডায়মণ্ড হারবারে তাকে পুনঃরায় প্রার্থী করেছে তৃণমূল। জলপাইগুড়ি থেকে শুরু করে এবার নবজোয়ারের স্টাইলে জেলায় জেলায় হতে চলেছে তৃণমূলের জনগর্জন সভা। দলীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকে ময়নাগুড়ি টাউন ক্লাব মাঠে সভা করতে চলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, ‘জনগণের গর্জন, বাংলা বিরোধীদের বিসর্জন’, এই স্লোগানকে সামনে রেখে জনগর্জন সভার আয়োজন করেছিল তৃণমূল। এবারে লোকসভার আগেও এটাই বার্তা তৃণমূলের। নতুন স্লোগানে জেলা ব্য়াপী বিজেপি বিরোধী প্রচারে নামছে তৃণমূল।
এর আগে গত লোকসভা নির্বাচনে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে জয় পায় বিজেপি। ৭ লাখ ৬০ হাজার ১৪৫ ভোট পেয়ে সাংসদ হন জয়ন্ত কুমার বর্মন। বিপক্ষে তৃণমূলের বিজয় চন্দ্র বর্মন পেয়েছিলেন ৫ লাখ ৭৬ হাজার ১৪১ ভোট। জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রে অন্তর্গত ৭টি বিধানসভার মধ্যে শুধুমাত্র রাজগঞ্জ ছাড়া বাকি প্রতিটিতেই ২০১৯-এ লিড পেয়েছিল বিজেপি। যদিও পরে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় ওই ৭টি বিধানসভার ফলাফলে অনেকটাই পরিবর্তন দেখা যায়। সেক্ষেত্রে এবার এই লোকসভা আসনটি আসন বিজেপির হাত থেকে দখলে নিতে মরিয়া তৃণমূল।
মহানগর ডেস্ক : লোকসভা নির্বাচনে পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের ভোটকে পাখির চোখ করে এগোচ্ছে তৃণমূল। তার উপর আবার সিএএ ডারা দেশে কার্যকর হয়েছে। তাই পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের পূর্ণ সমর্থন নিজেদের দিকে টানতে মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে এসসি,এসটি,ওবিসি সম্প্রদায়ের নেতৃত্ব ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণা এখন সময়ের অপেক্ষা, ইতিমধ্যে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল ৪২টি আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে দিয়েছে। তার মাঝেই সোমবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, দেশে হল কার্যকর সিএএ। এই আবহেই সময় নষ্ট না করে মঙ্গলবারই এই বৈঠকে বসছেন অভিষেক। মঙ্গলবার সকাল ১১টায় এসসি, এসটি, ওবিসি সেলের নেতৃত্বদের নিয়ে নজরুল মঞ্চে বৈঠকে বসেছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের আগেই তফসিলি জাতিদের দিকে বিশেষ নজর দিতেই রাজ্যের শাসক দলের এই জরুরি বৈঠক বলে মনে করছেন রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহল।
উল্লেখ্য, এবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন ১০ জন তফসিলি জাতিভুক্ত প্রার্থী। বোঝাই যাচ্ছে, তৃণমূলের নজর এবার তফসিলি জাতি এবং উপজাতিভুক্তদের ভোটের দিকেই। মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চের বৈঠক থেকেই নির্বাচনের রণকৌশল বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশ দেবেন অভিষেক।
প্রার্থী হতে না পেরে অর্জুন সিং বললেন, “ব্রিচ অফ ট্রাস্ট, জানলে তৃণমূলে আসতাম না”
মহানগর ডেস্ক: তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসভঙ্গের কাজ করেছে। ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হতে না পেরে এ ভাবেই নিজের ক্ষোভ উগরে দিলেন অর্জুন সিং।
রবিবার অভিষেক যখন ব্রিগেডে জনগর্জন সভায় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করছেন তখন মঞ্চে উপস্থিত অর্জুন সিং। অভিষেক ঘোষণা করলেন, “ব্যারাকপুরে প্রার্থী হলেন পার্থ ভৌমিক।” মঞ্চে তখন দাঁড়িয়ে অর্জুন সিং।
সভা শেষে অর্জুন সিং বললেন, “আমায় যে তৃণমূলে ডেকে এনেছিলেন তিনি বলেছিলেন ব্যারাকপুরে কাজ করতে হবে। ব্যারাকপুরেই আমায় প্রার্থী করা হবে। এটা দেড় বছর আগের কথা। আমায় কয়েকদিন আগে বলা হয়েছিল ব্যারাকপুর নয়, অন্য কোথাও। তো আমি বলেছি আমি ব্যারাকপুরেই কাজ করতে চাই। এটা জানলে আমি আসতাম না। এটা ব্রিচ অফ ট্রাস্ট।”
রাজনীতিতে “ট্রাস্ট” বলে কিছু কি হয়? এই ঘটনা আবার সেই কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। কেননা ব্যারাকপুরে প্রার্থী হতে না পেরে মুহূর্ত কালক্ষেপ না করে অর্জুন সিং তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। সন্ধ্যায় অর্জুন অনুগামীদের দ্বারা অবরোধ হয়েছে ব্যারাকপুর ট্রাঙ্ক রোড।
অন্যদিকে ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের আগে মমতার সঙ্গে দেখা করে দিল্লি গিয়ে সটান বিজেপিতে যোগ দিয়ে অর্জুন সিং যে ধাক্কা দিয়েছিলেন তৃণমূলকে, তাহলে কি সেই ধাক্কার পাল্টা আঘাত অর্জুনকে করলেন মমতা এবং অভিষেক?
তবে এরই মধ্যে উল্লেখযোগ্য মন্তব্য অর্জুনকে নিয়ে করেছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেছেন, “দ্রৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হওয়ার জন্য তৃণমূলের অর্জুন সিং ভোট দিয়েছিলেন।”
বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ বলেছেন, “অর্জুন সিংয়ের নামে ১০০ টা মিথ্যা মামলা দিয়ে তাঁকে নাজেহাল করেছিল তৃণমূল। তাই অর্জুন সিং বিজেপি ছেড়ে তৃণমূূলে যোগ দিয়েছিলেন। তখনও বলেছি, এখনও বলছি, অর্জুন সিংয়ের নামে ১০০ টা মিথ্যা মামলা তৃণমূল করেছিল তাঁকে ফাঁসানোর জন্য।”
তবে শুভেন্দু এবং সজলের অর্জুন প্রীতি শুনে মনে হচ্ছে ব্যারাকপুরে তৃণমূল প্রার্থী পার্থ ভৌমিকের বিরুদ্ধে আবারও হয়তো অর্জুন সিং প্রার্থী হবেন।
এদিকে পার্থ ভৌমিক বলছেন, “আমি তৃণমূলের প্রতিনিধি মাত্র। আমার বিশ্বাস অর্জুন সিংকে দল সম্মানজনক কোনও পদ দেবে। অর্জুন, আমি, আমরা একসঙ্গে ভোটের কাজ করব।
মহানগর ডেস্ক: তৃণমূলের প্রবীণ – নবীন দ্বন্দ্বের একটা সহজ সমাধান করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজে প্রার্থীদের নিয়ে কর্মীসমর্থকদের মধ্যে পরিচিত করালেন আর এই প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিয়ে, যিনি দলে নবীনের প্রতিনিধি। এমন একটা ভাব যেন কোনওকালে তৃণমূলে প্রবীণ-নবীন দ্বন্দ্ব ছিল না, নেই। প্রার্থী তালিকাতেও অদ্ভুত মিশেল রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর মধ্যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিস্ক এবং পছন্দ যে নেই সেটাও নয়। তাই একদিকে নতুন তারকা মুখের চমক রয়েছে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় অন্যদিকে সৌগত রায়ের মতো প্রবীণ সাংসদকেও প্রার্থী করা হয়েছে, যিনি নিজেই কিছুদিন আগে নিজের জয় নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
তবে এবার বাদ পড়লেন একাধিক পুরনো প্রার্থী। বিশেষ করে যে কেন্দ্রগুলিতে গতবার তৃণমূল জিততে পারেনি, সেগুলির প্রায় সবকটিতেই নতুন প্রার্থী দেওয়া হয়েছে এবার।
রবিবার ব্রিগেড সভা থেকে ৪২ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে তৃণমূল। তবে ঘোষণার আগেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উল্লেখ করেন, যাঁদের প্রার্থী তালিকায় রাখা হল না, তাঁদের কোনও না কোনও দায়িত্ব দেওয়া হবে। এটা মমতা প্রতিবারই প্রার্থী তালিকা ঘোষণার দিন বলে থাকেন।
এবার আরামবাগ থেকে টিকিট পেলেন না সাংসদ অপরূপা পোদ্দার। ওই কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে মিতালি বাগকে।
বর্ধমান পূর্ব থেকে প্রার্থী করা হয়নি সাংসদ সুনীল কুমার মণ্ডলকে। পরিবর্তে প্রার্থী হয়েছেন পেশায় চিকিৎসক ড. শর্মিলা সরকার।
বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়ে প্রার্থী হলেও পরে তৃণমূলে ফিরে এসেছিলেন অর্জুন সিং। তবে এবার ব্যারাকপুর কেন্দ্রে টিকিট পেলেন না অর্জুন। সেই জায়গায় প্রার্থী হচ্ছেন রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। যিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলেই দলে পরিচিত।
বসিরহাট থেকে বাদ পড়ল অভিনেত্রী নুসরত জাহানের নাম। ওই কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে হাজি নুরুল ইসলামকে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি দিয়ে আগেই সাংসদ পদ ছাড়ার কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন মিমি চক্রবর্তী। এবার যাদবপুর কেন্দ্রে তাঁর পরিবর্তে প্রার্থী হলেন আর এক অভিনেত্রী তথা তৃণমূলের যুব সভানেত্রী সায়নী ঘোষ।
মথুরাপুর কেন্দ্রে প্রার্থী করা হল না সাংসদ চৌধুরী মোহন জাটুয়াকে। ওই কেন্দ্রে বাপী হালদারকে ঘাসফুল চিহ্নে প্রার্থী করা হয়েছে।
এছাড়া, ২০১৯-এর তালিকায় যে সব প্রার্থীর নাম ছিল তাঁদের অনেকেই এবার আর টিকিট পাননি। উত্তরবঙ্গের একাধিক আসনে প্রার্থী বদলে গেছে। পরেশ চন্দ্র অধিকারী, দশরথ তিরকে, বিজয়চন্দ্র বর্মন, অমর সিং রাই, কানাইয়া লাল আগরওয়াল, অর্পিতা ঘোষ, মৌসম নেনজির নূর, মোয়াজ্জেম হোসেনের নাম এবার আর প্রার্থী তালিকায় রাখা হয়নি। প্রার্থী তালিকায় জায়গা পাননি মমতাবালা ঠাকুর, রত্না দে নাগ, শ্যামল সাঁতরার মতো নেতা-নেত্রীরাও।