মহানগর ডেস্ক : প্রথম পর্যায়ের প্রার্থী ঘোষণার আগে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বামফ্রন্টের বৈঠকে সিপিএমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি এবং সিপিআই। ১৬টি আসন এদিন ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে একটি করে আসন তিন শরিককে দেওয়া হয় এবং ১৩টি আসনে প্রার্থী দেয় সিপিএম। তিন শরিক দলের নেতাদের সঙ্গে সিপিএমের বাকযুদ্ধ এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যার ফলে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় ডাকা সাংবাদিক সম্মেলন শুরু হয় বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে।
আরএসপি, সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক সব দলই এই বৈঠকে তীব্র স্বরে সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসকে আসন ছাড়া নিয়ে বচসায় জড়িয়ে পড়ে। বামফ্রন্টের এক শরিক দলের নেতা বলেন, এই বচসার মূল বিষয় হল কংগ্রেসকে কটা আসন ছাড়া হবে এবং এই আসন কোন শরিক ছাড়বে তা নিয়ে। তিন শরিক দলই সিপিএমকে স্পষ্ট জানিয়ে দেয় কংগ্রেসকে আসন দিতে গিয়ে তারা কোনও অবস্থাতেই নিজেদের আসন ছাড়বে না। কংগ্রেসকে আসন ছাড়তে হলে সিপিএম ছাড়ুক। প্রবীণ এক বামফ্রন্ট শরিক নেতা জানান, “দীর্ঘ দিনের বামফ্রন্টের ইতিহাসে এই রকম ঝগড়াঝাটি আগে কখনও হয়নি। সিপিএম-এর নতুন রাজ্য কমিটি বামফ্রন্টের তিন শরিক দলের কাছে নতুন প্রস্তাব দেয়। তার ফলেই এই অশান্তি, যা বামফ্রন্ট বৈঠকে কোনও দিনও আশা করা যায় না।”
বসিরহাট আসনটিতে দীর্ঘদিন ধরে লড়ে আসছে সিপিআই। এবার সিপিএম সেই আসন দাবি করে সিপিআইকে দক্ষিণবঙ্গে অন্য একটি আসন লড়ার প্রস্তাব দেয় সিপিএম। এই প্রস্তাবের পর সিপিআই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, বসিরহাট আসনটি তারা ছাড়বে না। এক সিপিআই নেতা বলেন, ‘‘আমরা কেন বসিরহাট আসনটি ছাড়বে? এটা কোন আবদার? সিপিআইয়ের বসিরহাটে একটা ঐতিহ্য রয়েছে। ওই আসন থেকে প্রয়াত ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত, মনোরঞ্জন শূর, অজয় চক্রবর্তীরা জিতে অতীতে সাংসদ হয়েছেন। বসিরহাট আসনটির সঙ্গে কাস্তে-ধানের শিসের ঐতিহ্য জড়িয়ে। এটা তেভাগার ভূমি, সেই আসন কখনও আমরা ছেড়ে দিতে পারি?’’
এদিকে বফরওয়ার্ড ব্লকও জানিয়ে দিয়েছে তারা কোচবিহার ছাড়াও তাদের ভাগের পুরুলিয়া এবং বারাসতে লড়বেই। এই তিন আসন নিয়ে কোনও রকম আপস তারা করবে না। এই তিন আসন সিপিএমকে তো দেওয়া হবেই না এমনকি কংগ্রেসকে যতটা আসন ছাড়তে হবে তার জন্য সিপিএম নিজেদের ভাগের থেকে আসন ছাড়ুক। অতীতে একাধিকবার সিপিএমের চাপে নির্বাচনে আসন ছেড়েছে তিন শরিক দল। তখন বামফ্রন্ট ক্ষমতায়। কিন্তু ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ফ্রন্ট শরিকরা আসন বন্টন নিয়ে সিপিএমের এই “দাদাগিরি” অমান্য করতে শুরু করে, এবার এই দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছল।