ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য ১০ দিন সময় দিয়েছিল ঝাড়খণ্ডের চম্পই সোরেনের সরকারকে। তবে জেএমএম-কংগ্রেস-আরজেডির জোট সরকার মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিল যে, তিন দিনের মধ্যেই তারা আস্থাভোটের মাধ্যমে বিধানসভায় তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দেবে। গত শুক্রবারই ৪৩ জন বিধায়কের সমর্থন নিয়ে ঝাড়খণ্ডের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন জেএমএম নেতা চম্পই। বিরোধীরা অভিযোগ করেঋিল, রাজ্যপাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে চম্পই সোরেনের সরকারকে ১০ দিন সময় দিয়েছে যাতে বিজেপি ঝাড়খণ্ডে “ঘোড়া কেনা-বেচা” করতে পারে। সেই সুযোগ তাহলে সম্পই সোরেনের সরকার বিজেপিকে নিতে দিল না।
প্রসঙ্গত, বুধবারই হেমন্ত সোরেন ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর ঝাড়খণ্ডের রাজনৈতিক ছবিটা আমূল বদলে যায়। হেমন্ত সোরেনের পরে কে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসবেন, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে যায়। জেএমএম সূত্রে জানা যায়, হেমন্তের ইচ্ছা ছিল তাঁর স্ত্রী কল্পনা সোরেনকে মুখ্যমন্ত্রী করার। ঝাড়খণ্ডের মহাগঠবন্ধন বা জোট এবং হেমন্ত সোরেনের পরিবারের মধ্যেই কল্পনাকে নিয়ে আপত্তি উঠে যায়। শেষ পর্যন্ত কল্পনাকে পিছনে ফেলে চম্পই সোরেন মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে যান। শাসকদলের সব বিধায়কই চম্পই সোরেনকে সমর্থন দেওয়ার কথা ঘোষণা।
সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য চম্পই সরকারকে রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণণ ১০ দিন সময় দেন চম্পই সোরেনকে। সোরেন-জোটের ভয় ছিল এই ১০ দিনের সময়সীমা নিয়ে। কারণ, ১০ দিনের মধ্যে বিধায়ক কেনাবেচা-র মতো ঘটনা ঘটতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছিলেন। অতীতে এমন উদাহরণ বিভিন্ন রাজ্যে রয়েছে। ৮১ আসনের ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় সরকার গড়ার জন্য ম্যাজিক ফিগার ৪১। শাসক জোটের হাতে রয়েছে ৪৮ জন বিধায়ক। জেএমএম ২৯, কংগ্রেস ১৬, আরজেডির ১ এবং সিপিআই (লিবারেশন) ১। এর মধ্যে হেমন্ত গ্রেফতার হওয়ায় তিনি বিধানসভায় ভোটাভুটিতে অংশ নিতে পারবেন না। বর্তমানে চম্পইয়ের সঙ্গে রয়েছেন ৪৩ জন বিধায়ক। বাকি চার জনের দেখা পাওয়া যায়নি। অন্য দিকে, বিরোধী শিবিরে রয়েছেন ৩২ বিধায়ক। এঁদের মধ্যে বিজেপির ২৫, আজসুর ৩, এনসিপি (অজিত) ১ এবং নির্দল ৩ জন। অতীতে উত্তরাখণ্ড, অরুণাচল, কর্নাটক কিংবা মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে ঘোড়া কেনা-বেচার অভিযোগ উঠেছে। চম্পই সোরেনের সংশয় ছিল ১০ দিন সময় নিয়ে বিজেপি ঝাড়খণ্ডেও বিধায়ক কেনা-বেচা করবে। এই কেনা-বেচা রুখতেই ১০ এর বদলে ৩ দিনেই অর্থাৎ ৫ ফেব্রুয়ারি বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে চলেছে ঝাড়খণ্ডের চম্পই সোরেন সরকার।