মহানগর ডেস্ক : মুর্শিদাবাদের রেজিনগর রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। অভিযোগ উঠেছিল, রেজিনগরের শান্তিপুর এলাকা দিয়ে যখন মিছিল যাচ্ছিল, তখন কয়েক জন বাড়ির ছাদ থেকে ইট ছুড়েছিল। এমনকি, বোমাবাজি করারও অভিযোগ উঠেছিল। এই ঘটনায় কয়েক জন আহত হয়েছেন। রামনবমীর ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা রেজিনগর এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে র্যাফ নামাতে হয়।
এই মামলার পর্যবেক্ষণে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, নির্বাচন কমিশনকে ভোট পিছিয়ে দিতে বলব, রামনবমীর অশান্তি নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের মন্তব্য, ‘‘যেখানে মানুষ ৮ ঘণ্টা শান্তিপূর্ণ ভাবে নিজেদের উৎসব পালন করতে পারেন না, সেখানে এই মুহূর্তে ভোটের প্রয়োজন নেই।’’
রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে বহরমপুরে অশান্তির ঘটনায় কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের হয়। এই মামলাকারীদের দাবি ছিল, এই ঘটনায় এনআইএ-কে তদন্ত করতে দেওয়া হোক। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। সেই শুনানিতে মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী প্রধান বিচারপতির সামনে রামনবমীতে অশান্তির ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। শুধু বহরমপুর নয়, রামনবমীর দিন রাজ্যে যে সব জায়গা থেকে অশান্তির ঘটনার অভিযোগ উঠেছিল, সেই সব ঘটনার কথাও আদালতে জানানো হয় মামলাকারীর তরফে মঙ্গলবারের মামলায় প্রধান বিচারপতি এই অশান্তির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তার পরই প্রধান বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে বহরমপুরের ভোট পিছিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গ টানেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘এই ঘটনায় কে প্ররোচনা দিল, তা জানা দরকার। রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি চাইলে হলফনামা জমা করতে পারে।’’ এই মামলায় রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে আদালত। রামনবমীর দিন কী ঘটেছিল, তা রিপোর্ট দিয়ে আদালতকে জানাতে হবে রাজ্যকে, মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। আগামী ২৬ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।
বহরমপুরের ঘটনা নিয়ে আগেই নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারীর দল। এমনকি, এই ঘটনায় এনআইএ তদন্ত চেয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে চিঠি লিখেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই চিঠিতে তিনি ২০২৩ সালের রামনবমীতে অশান্তির প্রসঙ্গও উল্লেখ করেছিলেন। প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে রামনবমীতে রাজ্যের কয়েকটি জায়গায় হিংসার ঘটনা ঘটেছিল। তা নিয়ে হাই কোর্টে মামলাও হয়েছিল। রাজ্যের উচ্চ আদালত সেই সব মামলায় এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। রাজ্য সরকার সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত হাই কোর্টের নির্দেশই বহাল থাকে শীর্ষ আদালতে। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এখনও সেই মামলার তদন্ত করছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েক জনকে গ্রেফতারও করেছিল তারা।