মহানগর ডেস্ক : এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে নতুন কথা শোনালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, “রাজ্য সরকার যে চাকরি দেয় তা সংশ্লিষ্ট দফতর জানে, আমি সেই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করি না। আমায় জানালে ভুল ত্রুটি হলে সংশোধন করে নিতাম।”
মমতার এই মন্তব্যের পর বিরোধীরা বলছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি নিজের দায় এবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রত্য বসুর উপর চাপাতে চাইছেন? রাজ্য মন্ত্রিসভার প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। তিনি জানেন না তাঁর মন্ত্রিসভায় এমন কোনও সিদ্ধান্ত হয় কি করে? আসলে আদালত রায়ে বলেছে, সুপার নিউমেরিক পোস্ট ক্রিয়েট করার জন্য রাজ্য মন্ত্রিসভায় যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তাতে যারা জড়িত তাঁদের সিবিআই তদন্তের স্বার্থে তলব করতে বা হেফাজতে নিতে পারবে, এই মন্তব্যের পর প্রথমে মমতা বললেন, এই রায় বেআইনি। তার পরের দিন অর্থাৎ বুধবারই বললেন, চাকরি দেওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দফতর অবগত, তিনি এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন না।
এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা দিলিপ ঘোষ বলেছেন, “একজন ৭০/৭৫ বছরের মহিলা বারবার ভুল করবেন আর ভুল শোধরাবার কথা বলে অন্যের উপর দায় চাপাবেন? ওনার মন্ত্রিসভায় ওনার অনুমতি ছাড়া কার হয় কি ভাবে?”
এর আগে পার্থ চট্টোপাধ্যায় যখন শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেফতার হন তখন রাজ্যের পুর ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, “এই দায় পার্থদার একার নয়, এটা কালেক্টিভ সিদ্ধান্ত, পার্থদা আমাদের মন্ত্রিসভার সদস্য।” তবে ফিরহাদের এই মন্তব্যের পরও আমরা দেখেছি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দল ছেটে ফেলে দেয়। এবার আবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই একই ভাবে জানালেন, নিয়োগ রাজ্য সরকার দিলেও এর সব দায় সংশ্লিষ্ট দফতরের, তিনি এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন না। এখন প্রশ্ন একটাই, এবার কি ব্রাত্য বসু, শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে দুর্ভোগে পড়তে চলেছেন? কেননা সুপার নিউমেরিক পোস্ট ক্রিয়েট করার জন্য গত ৫ মে, ২০২২ মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, সেই বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সহ মন্ত্রিসভার সদস্যরা ছিলেন। এই সিদ্ধান্তে কার বা কাদের স্বার্থ জড়িত, তাঁদের বা তাঁকে সিবিআই জেরা করতে ও হেফাজতে নিতে পারবে বলে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ রায় দেওয়ার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত থেকে নিজেকে আলাদা রাখার চেষ্টা করছেন বলে বিরোধীরা মন্তব্য করছেন।