মহানগর ডেস্ক : বামফ্রন্টের দ্বিতীয় প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। তিনি শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, মুর্শিদাবাদে প্রার্থী হচ্ছেন মহম্মদ সেলিম, রানাঘাটে প্রার্থী হচ্ছেন অলোকেশ দাস,
বর্ধমান দুর্গাপুরে প্রার্থী হচ্ছেন ড. সুকৃতী ঘোষাল এবং বোলপুরে প্রার্থী হচ্ছেন শ্যামলী প্রধান। বিমান বসু এদিন বলেন, “আপনারা বলতে পারেন, অন্যদল একদিনে ৪২টি কেন্দ্রের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিল, আপনারা কেন করছেন না? আমাদের একটা বামফ্রন্ট আছে। সেখানে আলোচনা করে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হয়, আরো আলোচনা বাকি আছে৷ অনেক জায়গায় এখনও প্রার্থী ঠিক হয়নি। বামফ্রন্টের একটা ঐতিহ্য আছে।” প্রথম দফায় ১৭টি প্রার্থীর নাম ঘোষণার পর শনিবার দ্বিতীয় দফায় ৪ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হল। দ্বিতীয় দফার ৪ প্রার্থীই সিপিএম দলের।
বিমান বসু এদিন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারি নিয়ে বলেন, “দেশে ভোট ঘোষণা হয়েছে। এখন সবটা দেখছে নির্বাচন কমিশন। এই সময় যে ভাবে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করা হল সেটা করা যায় না। গত ১৫ মাস আগে তাঁর উপমুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নির্বাচনের মুখে কেন এভাবে একজন মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা? এদিকে সংবাদপত্রে দেখলাম বোলপুরে তৃণমূলের এক মন্ত্রীর বাড়িতে ইডি হানা দিয়ে অনেক টাকা উদ্ধার করেছে, অথচ তাঁকে ধরা হচ্ছে না। একেক জনের জন্য একেক রকম নিয়ম? ডাবক স্ট্যান্ডার্ড? দু’জায়গায় দু’রকম আইন কেন? এটা একটা পলিটিক্যাল বাইনারি হচ্ছে। এটা তৃণমূল-বিজেপি করছে। আমরা কেন্দ্রের এই নীতির বিরোধিতা করি।”
ইলেক্টোরাল বন্ড নিয়ে তৃণমূলের সমালোচনা করে বিমান বসু বলেন, “বন্ডে যারা টাকা দিচ্ছে তারাই আবার সেই টাকা উশুল করে নিচ্ছে সাধারণ মানুষের উপর দিয়ে। আর তাই রাজ্যে বিদ্যুতের দাম বাড়ছে।” প্রসঙ্গত রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে ইলেক্টোরাল বন্ডে প্রচুর টাকা দিয়েছে সঞ্জীব গোয়েঙ্কার সংস্থা। তারাই এই রাজ্যে সিইএসসির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়। এই বিদ্যুতের দাম উর্ধ্বমুখী। নাম না করে বিমান বসু এই বিষয়টিই এদিন উল্লেখ করেছেন। প্রথম দফায় এর আগে যে ১৭টি লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বামফ্রন্ট, তার মধ্যে তমলুকে তৃণমূলের নতুন এবং তরুণ প্রার্থীর বিরুদ্ধে আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়কে সিপিএম প্রার্থী করে চমক দিয়েছে। বিজেপি এখনও তমলুকে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। অন্যদিকে, শ্রীরমপুর থেকে দীপ্সিতা ধরকে প্রার্থী করা হয়। দমদম থেকে সুজন চক্রবর্তী প্রবীণ প্রার্থী হলেও যাদবপুর কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন সিপিএমের তরুণ নেতা এবং লোকসভা নির্বাচনে নতুন মুখ সৃজন ভট্টাচার্য। এছাড়া কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী হয়েছেন শায়েরা শাহ হালিম, হাওড়ায় সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়, আসানসোলে জাহানারা খান, মেদিনীপুরে বিপ্লব ভট্ট, বিষ্ণুপুরে শীতল কৈবর্ত, বর্ধমানে নীরজ খান, বাঁকুড়ায় নীলাঞ্জন দাশগুপ্ত, আলিপুরদুয়ারে মিলি ওরাওঁ। প্রথম দফায় বামেদের প্রার্থী তালিকায় যে ১৭ জনের নাম ছিল তাঁদের মধ্যে সুজয় চক্রবর্তী এবং বিপ্লব ভট্ট ছাড়া কেউ আগে লোকসভায় এর আগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। ফলে এই “নতুন মুখ”-ই বামেদের প্রার্থী তালিকায় এবারের চমক।