মহানগর ডেস্ক : ভয়েজ ক্লিপিংয়ের সঙ্গে হুবহু মিলে গেল কালীঘাটের কাকু বা সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বর। তাহলে কী এবার নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে আসল রহস্য উন্মোচিত হবে? রাজ্যে প্রথমদফার ভোটের আগের দিন ইডি কালীঘাটের কাকুর কন্ঠস্বর ভয়েজ ক্লিপিংয়ের সঙ্গে মিলে গেছে বলে দাবি করায় বড় প্রশ্ন সামনে এলো।
প্রথম থেকেই ফোনকলে পাওয়া কন্ঠস্বর কালীঘাটের কাকুর বলে দাবি করে আসছিল ইডি। অবশেষে ইডির সন্দেহই বাস্তব হল। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের গলার স্বরের সঙ্গে মিলে গেল ভয়েস ক্লিপিংয়ের কণ্ঠস্বর, এমনটাই দাবি করল ইডি। ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পর ইডি দাবি করেছে কালীঘাটের কাকুর সংগৃহীত কণ্ঠস্বরের সঙ্গে ফোনকলের কন্ঠস্বর মিলে গেছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, এই ঘটনা নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে বড় সাফল্য আনবে।
কালীঘাটের কাকুর কন্ঠস্বর সংগ্রহ করা নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েনের পর অবশেষে গত ৪ জানুয়ারি জোকা ইএসআই হাসপাতালে কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের “ভয়েস স্যাম্পেল টেস্ট” সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। তাঁর গলার স্বর ডিজিটালি রেকর্ড করে রেখে দেখা হয় ফোনে কথোপকথনের যে অডিও সামনে এসেছে সেই গলা আর কাকুর গলা এক কিনা। ইডির দাবি, দুটি গলার স্বর মিলিয়ে দেখা গেছে দুটি কণ্ঠস্বরই এক। এই রিপোর্ট হাতে আসার পরেই উচ্ছ্বসিত ইডি আধিকারিকরা। তাঁরা মনে করছেন এবার নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের জাল গোটানো শুধুইমাত্র সময়ের অপেক্ষা।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত বছরের ৩০ মে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে গ্রেফতার করে ইডি। এরপর থেকে বারেবারে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন কালীঘাটের কাকু। দীর্ঘদিন ভর্তি ছিলেন এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে। নিয়োগ দুর্নীতির জট খুলতে তার ফোন থেকে উদ্ধার হওয়া একাধিক ভয়েজ ক্লিপিং এর সঙ্গে সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষা করতে চান তদন্তকারীরা। সেজন্য আদালতে আবেদন জানান তাঁরা। পরবর্তীতে হাইকোর্ট থেকে অনুমতি মিললেও এসএসকেএমের তরফে জানানো হয়, কালীঘাটের কাকুর শারীরিক অবস্থা ঠিক না হওয়া পর্যন্ত এই ধরনের পরীক্ষা করা যাবে না।
এরপর ফের আদালতের দ্বারস্থ হয় ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি মেনে, ইএসআই হাসপাতালে তাঁর শারীরিক সুস্থতা পরীক্ষা করার নির্দেশ দেয় আদালত। অবশেষে গত ৪ জানুয়ারি জোকা ইএসআই হাসপাতালে সুজয়কৃষ্ণর “ভয়েস স্যাম্পেল টেস্ট” হয়। অবশেষে সেই ভয়েজ স্যাম্পেলের সঙ্গে কালীঘাটের কাকুর কন্ঠস্বর মিলে গেল। এই কালীঘাটের কাকুই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসে কাজ করতেন। এই কাকীঘাটের কাকুই দাবি করেছিলেন, “আমার সাহেবকে কেউ ছুঁতে পারবে না, তাঁকে কেউ ফোন করতে পারবে না, কথা বলতে পারবে না।” কে তাঁর সাহেব? প্রশ্ন করলে সংবাদ মাধ্যমকে কালীঘাটের কাকু জানান, “আমার সাহেবের নাম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।” এর অব্যবহিত পরেই কালীঘাটের কাকুকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা গ্রেফতার করে।