মহানগর ডেস্ক: রাজ্য সরকারি কর্মীদের উৎসবের মরশুম পেরিয়ে নতুন বছরেও সুখবর শোনার সম্ভাবনা নেই।শুক্রবার ফের পিছিয়ে গেল সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার শুনানি।স্বভাবতই হতাশ হলেন মামলাকারী রাজ্য সরকারি কর্মীরা।কেন্দ্রীয় হারে বর্ধিত ডিএ -র সমতুল হারে ডিএ পাওয়ার দাবিতে রাজ্য সরকারি কর্মীদের দীর্ঘদিনের আন্দোলন চলছে। তা এবার শীর্ষ আদালতের বিচারাধীন। তবে বারবারই সুপ্রিম কোর্টে মামলা পিছিয়ে যাচ্ছে। আর তার জেরে আবেদনকারীদের দিশাহীন হয়ে বারবারই হতাশ হতে হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গ ডিএ মামলার শুনানি ছিল গতকাল সুপ্রিম কোর্টে।রাজ্যের লাখ লাখ সরকারি কর্মী নভেম্বরের শুরুতে মামলার রায় শোনার অপেক্ষায় ছিলেন।সরকারি কর্মীরা বহু প্রতীক্ষিত এই মামলার শুনানির দিনে যেন কিঞ্চিত আশার আলো দেখলেন। তাঁরা যে বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে, এবার তার প্রতিকার হতে চলেছে। সরকারি কর্মীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম শুনানি শেষে জোর গলায় বললেন, “ডিএ রাজ্য সরকারি কর্মীদের আইনসংগত অধিকার, তাই মামলার দ্রুত শুনানির প্রয়োজন অসীম।”
প্রসঙ্গত,ডিএ মামলার শুনানি নিয়ে এই মামলার মূল আবেদনকারী কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের তরফে শ্যামল মিত্র ডিএ মামলার আগের দিন বলেন, “মামলার বিচার অন মেরিটে হয়। তবে মামলার শুনানি হবে আশা করতেই পারি। সেকেন্ড হাফটা আমাদের জন্য রাখা হল, এই আশা করছি। তবে জয় নিয়ে আমরা ১০০ শতাংশ নিশ্চিত। ওই নিয়ে ভাবনা চিন্তা করছি না। আগামীকালের দিকে নজর রয়েছে।”
রাজ্য ডিএ মামলার শীর্ষ আদালতে শুনানি হল ৩ নভেম্বর।বিচারপতি সঞ্জয় কারোল এবং বিচারপতি হৃষিকেশ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা ওঠে। শীর্ষ আদালতের তরফে শুনানি শেষে জানানো হয়েছে, ‘এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে।’ অর্থাৎ আরোও একধাপ পিছিয়ে গেল ডিএ মামলা, রায় ঘোষণার পরিবর্তে। তবে সরকারি কর্মীদের আইনজীবীর কথা অনুযায়ী, ডিএ মামলায় জয় পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি সরকারি কর্মীদের। কারণ তাঁদের ন্যায্য অধিকার এটি। আপাতত কর্মীরা আশায় বুক বেঁধেছেন এই কথাতেই।অন্যদিকে খানিক আশাহত হলেন তাঁরা মামলা পিছিয়ে যাওয়ায়।
উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টে এর আগে ডিএ মামলা উঠলে সরকারি কর্মীদের পক্ষে রায় দেয় আদালত। হাইকোর্ট জানায়,কর্মীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে তিন মাসের মধ্যে।কিন্তু সেই নির্দেশ রাজ্য না মানায় তিনটি রাজ্য সরকারি কর্মী সংগঠন মামলা দায়ের করে রাজ্যের বিরুদ্ধে। এরপর রাজ্য সরকার,সুপ্রিম কোর্টে ‘স্পেশাল লিভ পিটিশন’ দাখিল করে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে। অন্যদিকে, রাজ্যে সরকারি কর্মীরা নিরন্তর আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে। তাঁদের ন্যায্য দাবি কবে পূরণ হবে, সেই আশায় তাঁরা দিন গুনছেন।উল্লেখ্য, বর্তমানে কেন্দ্র সরকারি কর্মীদের সঙ্গে রাজ্য সরকারি কর্মীদের DA-র তফাত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ শতাংশ।কেন্দ্র সরকার DA বৃদ্ধির ঘোষণা করেন দীপাবলির আগেই।ফলত, ৪৮ লাখের বেশি কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী এর ফলে উপকৃত হবেন।