মহানগর ডেস্ক: যাবতীয় বাধা পেরিয়ে অবসেসে মঙ্গলবার সন্দেশখালি গিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধীদলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে গিয়েই IPS অফিসারকে ‘খালিস্তানি’ বলে দাবি করেন। যা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সেই মন্তব্যের জন্য বলার জন্য শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ শুরু করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ দাবি করেছে যে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী একজন শিখ পুলিশ অফিসারকে ‘খালিস্তানি’ বলে সম্বোধন করেন। এক্স’ হ্যান্ডেলে একাধিক পোস্টে, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এবং বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যকে বিদ্বেষপূর্ণ, জাতিগত, সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক এবং একটি অপরাধমূলক কাজ হিসাবে চিহ্নিত করেছে। একজন ব্যক্তির ধর্মীয় পরিচয়ের উপর অপ্রীতিকর, অগ্রহণযোগ্য আক্রমণের নিন্দা করা হয়েছে পুলিশের তরফে এবং আরও জানানো হয়েছে যে শুভেন্দুর এই মন্তব্যের জন্য কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এক হ্যান্ডেলে একাধিক পোস্টে বঙ্গ পুলিশ লিখেছে, “আমরা, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ যাদের ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক, এই ভিডিওটি শেয়ার করার জন্য ক্ষুব্ধ, যেখানে আমাদের নিজেদের একজন অফিসারকে রাজ্যের বিরোধীদলীয় নেতা ‘খালিস্তানি’ বলে অভিহিত করেছিলেন। তাঁর ‘দোষ’: তিনি একজন গর্বিত শিখ এবং একজন দক্ষ পুলিশ অফিসার যিনি আইন প্রয়োগের চেষ্টা করছিলেন। এই মন্তব্যটি যতটা বিদ্বেষপূর্ণ এবং জাতিগত, যতটা সাম্প্রদায়িকভাবে উস্কানিমূলক। এটি একটি অপরাধমূলক কাজ। আমরা চরম নিন্দা জানাই একজন ব্যক্তির ধর্মীয় পরিচয় এবং বিশ্বাসের উপর অনাকাঙ্খিত, অগ্রহণযোগ্য আক্রমণকে উসকানি দেওয়ার জন্য। মানুষকে সহিংস করতে এবং আইন ভঙ্গ করার জন্য কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
We, the West Bengal Police fraternity, are outraged to share this video, where one of our own officers was called ‘Khalistani’ by the state’s Leader of the Opposition. His ‘fault’: he is both a proud Sikh, and a capable police officer who was trying to enforce the law…(1/3)
— West Bengal Police (@WBPolice) February 20, 2024
ঠিক কি হয়েছিল…
ADG (দক্ষিণ বঙ্গ) সুপ্রতিম সরকারের মতে, ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার সকালে। ধামাখালিতে ১৪৪ ধারা কার্যকর করার জন্য একটি পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। বাহিনীটির নেতৃত্বে ছিলেন আইপিএস জসপিত সিং, এসএসপি গোয়েন্দা শাখা। সেই সময়ে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধীদলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ বেশ কয়েকজন বিধায়ক ধামাখালিতে উপস্থিত ছিলেন তাঁরা সন্দেশখালির পথে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ে তাঁরা কিছু কারণে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। শুরু হয় বুলিশ ও বিজেপি নেতাদের মধ্যে বচসা। সেই সময়েই আইপিএস জসপিত সিং-কে শুভেন্দু অধিকারী ‘খলিস্তানি’ আখ্যা দেন। তাই নিয়েই উঠেছে ঝড়। ADG (দক্ষিণ বঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার বলেছেন, “আপনারা সবাই জানেন যে আজ সকালে ধামাখালিতে ১৪৪ ধারা কার্যকর করার জন্য আমাদের একটি পুলিশ বাহিনী ছিল। এটির নেতৃত্বে ছিলেন আইপিএস জসপিত সিং, এসএসপি গোয়েন্দা শাখা। ধামাখালিতে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ বেশ কয়েকজন বিধায়ক রয়েছেন। তাদের সাথে ঝগড়া হয়েছিল। যে পুলিশ অফিসারের সময় শুভেন্দু অধিকারী পুলিশ অফিসারকে খালিস্তানি বলেছেন, যেটি কখনই একজন রাজনৈতিক নেতার পক্ষে উপযুক্ত নয়। আমরা এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাই। এই গুরুতর মন্তব্যের জন্য আমরা তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব।”
সুভুন্দুর এই মন্তব্যের পরেই গর্জে ওঠেন খদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছেন বিজেপির বিভাজনমূলক রাজনীতি নির্লজ্জভাবে সাংবিধানিক সীমানা অতিক্রম করেছে। মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভ উগড়ে বলেন, “আজ, বিজেপির বিভেদমূলক রাজনীতি নির্লজ্জভাবে সাংবিধানিক সীমানা অতিক্রম করেছে। বিজেপির মতে পাগড়ি পরা প্রত্যেক ব্যক্তিই খালিস্তানি। আমি আমাদের শিখ ভাই ও বোনদের খ্যাতি ক্ষুণ্ন করার এই দুঃসাহসী প্রয়াসের তীব্র নিন্দা জানাই, আমাদের জাতি তাঁদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। । আমরা বাংলার সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষায় দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছি এবং এটিকে ব্যাহত করার কোনো প্রচেষ্টা প্রতিরোধ করার জন্য কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।” কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। বলেছেন, বিজেপির ঘৃণার বিষ তাদের এতটাই অন্ধ করে দিয়েছে যে তারা একজন কৃষক, একজন জওয়ান বা একজন অফিসারকে সম্মান করতে পারে না।