মহানগর ডেস্ক : সন্দেশখালির “বাঘ” শেখ শাহজাহান গ্রেফতার হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক সভা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনেক কিছুই তিনি বললেন, তবে শেখ শাহজাহানকে নিয়ে একটি শব্দও মুখে আনলেন না তৃণমূল সুপ্রিমো। যদিও তৃণমূল দল থেকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা শেখ শাহজাহানকে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক সভা ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এদিনই ভোরে শেখ শাহজাহানকে রাজ্যের পুলিশ গ্রেফতার করে মিনাখাঁ থেকে। স্বাভাবিক ভাবেই সকলে ভেবেছিলেন, শাহাজাহান নিয়ে মমতা হয়তো তাঁর সভা থেকে কিছু বলবেন। কারণ, এর আগে বুধবার মমতা শাহজাহানের নাম না করে বলেছিলেন, তিনি জ্ঞানত কোনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেন না। অনবধানবশত ভুল হয়েছে জানতে পারলে ভুল সংশোধনের জন্য সাহায্য করেন তিনি নিজেই। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল মমতার ওই মন্তব্যের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শাহজাহানের গ্রেফতার হলেও মমতা শাহজাহানের প্রসঙ্গে নীরবতা ভাঙলেন না।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে প্রশাসনিক সভা করেন। জেলার মানুষের হাতে তুলে দেন জনকল্যাণমূলক একাধিক প্রকল্পের সুবিধা। লোকসভা নির্বাচনের আগে মমতার তিন দিনের এই জঙ্গলমহল সফর রাজনৈতিক ভাবে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। মঙ্গল ও বুধবার পুরুলিয়া-বাঁকুড়ায় প্রশাসনিক সভা করে সরকারি পরিষেবা বিতরণ করেছেন মমতা। বৃহস্পতিবার সরকারি পরিষেবা দিলেন ঝাড়গ্রামের মানুষদের। তবে সন্দেশখালির “বাঘ” শেখ শাহজাহান গ্রেফতার হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নীরব থাকলেও সন্দেশখালি গ্রামের নির্যাতিতা, সম্ভ্রম হারানো মহিলা এবং কোদালের বাটের মার খাওয়া পুরুষেরা অকাল হোলি খেললেন, জিলিওি খেয়ে মিষ্টিমুখ করলেন, কারণ তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হয়েছে শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারির মধ্যদিয়ে।
এদিকে শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, “শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করা হয়নি সমঝোতা করা হয়েছে। উনি ফাইভস্টার হোটেলে থাকবেন, মোবাইলে তৃণমূলকে নিয়ন্ত্রণ করবে। আকুঞ্জিপাড়ায় শেখ শাহজাহানের বাড়ির লোকের সঙ্গে পুলিশ তাকে দেখা করায়। শেখ শাহজাহান বলেন, ” চিন্তার কারণ নেই, আমি দ্রুত ফিরে আসবো।” এদিকে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, “শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারির পেছনে বড় নাটক আছে। ক্রমশ প্রকাশ পাবে।” তবে শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারির পর “গদ্দার” শুভেন্দু এবং “শূন্য” সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম মুখ খুললেও শেখ শাহজাহান যাঁর অনুপ্রেরণায় সন্দেশখালির “বাঘ” হয়ে উঠেছেন, সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু “চুপ”।