মহানগর ডেস্ক: শতাব্দিটা একবিংশ কিন্তু মানসিকতার উন্নতি কোথাও গিয়ে যেন স্তব্ধ। বিবাহ মানেই একজন নারী-পুরুষ। একসাথে থাকার অধিকার শুধু দ্বিমুখী লিঙ্গের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। নারী-নারী কিংবা পুরুষ-পুরুষের মধ্যে ভালোলাগা থাকতে নেই, ভালোবাসা থাকতে নেই, উপরন্তু সংসার বাঁধতে নেই। আর যদি তা হয় তাহলে তা সমাজে চলে আসা গতানুগতিক সম্পর্কের ছন্দপতন। কখনো তারা হয়ে ওঠে এই বুদ্ধিজীবী সমাজের হাসির খোরাক কিংবা মানসিক ভারসাম্যহীনতার পরিচায়ক। তাই কখনও তারা পরিবারের মর্যাদা হানীরও কারণ। এর অন্যথা ঘটেনি কেরালার সমকামী দম্পতি আদিলা নাসারিন এবং ফাতিমা নুরার ক্ষেত্রে। কিন্তু আদলত ফেরায়নি তাদের। দিয়েছে এই সমকামী দম্পতিকে (Lesbian Couple) স্বীকৃতি। তারপরই নজরকাড়া এনগেজমেন্টর ফটোশ্যুটে (Lesbian Couple Photoshoot) তাক লাগিয়ে দিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
এদিন আদিলা এবং ফাতিমার গা ভর্তি ছিল রুপোর গয়না। দুজনে বাদামি ও গাঢ় নীল রঙের লেহেঙ্গার সেজে ওঠেন। রাজকীয় আয়োজনে কেরলের সাগর সৈকতে বিনিময় হল বিয়ের আংটি এবং গোলাপফুল। ২৩ বছরের নুরা আবার ফেসবুক পেজে বিয়ের ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘অ্যাচিভমেন্ট আনলকড: টুগেদার ফরএভার’। তার নিচেই তাদের একসাথে পথ চলার শুভেচ্ছার বন্যা বইয়ে দিয়েছে অনেকেই।
উল্লেখ্য, নুরা ও নাসারিন সৌদি আরবে থাকাকালীন এক হাইস্কুলে পড়ার সূত্র ধরে একে অপরের কাছে আসে। পরস্পরের সঙ্গে পরিচিত গড়ায় বন্ধুত্বে ও প্রেমে। পরে তিন বছর বিচ্ছিন্ন থাকলেও ফের তাঁদের মিল হয় ভারতে এসে। কিন্তু তাঁদের এই তথাকথিত সমাজবিরোধী মনোভাব রক্ষণশীল পরিবার মেনে নেয়নি।
এমন ভালোবাসা মেনে নেওয়া তাঁদের পক্ষে যেন কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। এরপর বহু লড়াই করে পরিবার থেকে বেরিয়ে এসে প্রতিকূলতায় পরে শেষমেশ দ্বারস্থ হন আদালতের। আদালত তাঁদের পক্ষেই রায় দিয়ে মিলিয়ে দেন চার হাত। ‘সমপ্রেম’কে স্বীকৃতি দেয় সংবিধান। চলতি বছরের গোড়ার দিকে এই বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে এসেছিলেন তাঁরা। এবার আদালতের স্বীকৃতি সঙ্গে নিয়ে সারা বিশ্বের সঙ্গে তারা ভাগ করে নিয়েছেন তাদের ভালোবাসার উষ্ণ মুহূর্ত।