মধুস্মিতা জেনা একসময় ব্রিটেনের ম্যারাথন দৌড়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। ভারতীয় সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে শাড়ি পরে দৌড়েছিলেন তিনি। তাঁর থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এবার ধুতি পাঞ্জাবী পরে লাদাখে দৌড়ালেন বিরাটির বিপ্লব দাস। বিশ্বের অন্যতম কঠিন পরীক্ষা ছিল এটা। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় তিন হাজার মিটার উচ্চতার লাদাখে ২১ কিলোমিটারের হাফ ম্যারাথনে বাঙালি সংস্কৃতিকে তুলে ধরল বিপ্লব।
শারদীয়া পূজোর বার্তা নিয়ে তৈরি হয়েছিল বিপ্লবের সুন্দর পাঞ্জাবি। বিপ্লব জানিয়েছেন, “এই ম্যারাথনে বিশ্বের নানা দেশ থেকে বহু মানুষ অংশ নেন। আমার উদ্দেশ্য ছিল দুর্গাপুজোর আগে সকলের কাছে বাঙালি সংস্কৃতি তুলে ধরা”। মাত্র ৩ ঘন্টায় ফিনিশিং পয়েন্টে পৌঁছে গিয়েছেন বিপ্লব।
অত উঁচুতে অক্সিজেনে কি অভাব হয়েছিল বিপ্লবে? তিনি জানান, “নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে পারব কি না, তা নিয়ে চিন্তা ছিল। উদ্বেগ আরও বেড়েছিল ম্যারাথনের তিন দিন আগে অনুশীলনে এক মহিলা মারা যাওয়ার খবর পেয়ে। তবে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়ার জন্য সাত দিন আগে লাদাখ পৌঁছেছিলাম। এই ক’দিন টানা অনুশীলন করেছি। প্রবল ঠান্ডায় ট্রেকিংয়ের অভিজ্ঞাতাও সাহায্য করেছে আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে। তবে এই সমস্ত সমস্যার চেয়েও বড় বিষয় ছিল এত দিনের ছুটির বন্দোবস্ত করা। ছুটি যাও পেলাম, যাওয়া-আসা-থাকা-খাওয়ার অর্থ জোগাড় তো আরও কঠিন ছিল”।
বিপ্লব বর্তমানে নিমতা থানার অধীন সিভিক হেডকোয়ার্টারে কাজ করেন। ছুটি নিলে “নো ওয়ার্ক, নো পে নীতি” মেনেই তাঁকে ছুটি নিতে হয়। সহকর্মীদের সহযোগিতাতেই এমনটা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিপ্লব। এক সময় ফুটবল খেলেই সুনাম অর্জন করতে চেয়েছিলেন তিনি। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডিভিশনে খেলেছিলেন। প্রিমিয়ার ডিভিশনে খেলার সুযোগ পেলেও বাবার দুর্ঘটনা তাঁর চলার পথ পরিবর্তন করে দেয় আচমকা।
সেই সময় পরিবারের হাল ধরাটাই সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়েছিল বিপ্লবের কাছে। তাই যোগ দেন পুলিশে। তার কিছুদিন পর ট্রেকিং শুরু করে অমরনাথ গোয়েচলা, রুপকুণ্ডু ট্রেক করেন বিপ্লব। ২০২১ সালে একবার সাইকেলে চড়ে লাদাখের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন তিনি। পরের বছর ট্র্যায়াথলনেও অংশ নেন। বেশ কয়েকটা ম্যারাথন দৌড়ের পর লাদাখে অংশ নেন তিনি।