মহানগর ডেস্ক : গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকে রাজ্যের প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্কুলে মাংস-ভাত খাওয়ানো বন্ধ হয়ে গেছে। তবে লোকসভা ভোটের মুখে রাজ্য শিক্ষা দফতর স্কুল পরিদর্শকদের নির্দেশ দিয়েছে, আগামী ১৫ এপ্রিল, অর্থাৎ বাংলা নববর্ষের পরের দিন, সোমবার রাজ্যের সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে মিড ডে মিলে মাংস-ভাত-ফল-পায়েস খেতে দিতে হবে। এই ভালো খাবার খওয়ানোর ছবি তুলে ওই দিনই বেলা ৩টের মধ্যে স্কুল শিক্ষা দফতরে পাঠাতে হবে, এই খাবার দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ করা হবে না। এমনই নির্দেশিকা স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে জারি করা হয়েছে।
এদিকে এই নির্দেশিকা পাওয়ার পরই রাজ্যের সব স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। তাঁরা কিছুতেই বুঝতে পারছেন না কি ভাবে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ ছাড়া কি ভাবে স্কুল পড়ুয়াদের ১৫ এপ্রিল মিড ডে মিলে মাংস-ভাত-ফল-সবজি দেওয়া সম্ভব? শিক্ষক-শিক্ষিকারা বলছেন, অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ ছাড়া মিড ডে মিলে ১৫ এপ্রিল মাংস-ভাত-ফল-পায়েস খাওয়ানো অসম্ভব।
এদিকে রাজ্যের শিক্ষা দফতরের এই নির্দেশিকা নিয়ে শিক্ষক নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, “এই নির্দেশিকা কি ভাবে কার্যকর হবে বুঝতে পারছি না। এমনিতেই মিড ডে মিলের জন্য পড়ুয়া পিছু যে অর্থ বরাদ্দ হয় তাতে ন্যূনতম পুষ্টিকর খাবার দেওয়া যায় না, এসব কি ভোটের মুখে অভিভাবকদের মন জয় করতে সরকারের সিদ্ধান্ত?”
এই প্রসঙ্গে অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস -এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক, চন্দন মাইতি বলেন,”আমাদের প্রশ্ন হল, সাপ্তাহিক খাদ্য তালিকার বাইরে গিয়ে মাংস, ফল, মিষ্টি, পায়েস ইত্যাদি রান্না করে আগামী পয়লা বৈশাখ ছাত্র-ছাত্রীদের খাওয়ানোর যে কথা বলা হয়েছে তার জন্য অতিরিক্ত কোন অর্থ বরাদ্দ সরকারিভাবে দেওয়া হবে না কেন? ঐ অতিরিক্ত প্রয়োজনীয় অর্থ কোথা থেকে পাওয়া যাবে? রাজ্যের প্রতিটি জেলার জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকগণ অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকগণের মাধ্যমে এভাবে whatsapp message গ্রুপে এই নির্দেশ পাঠাচ্ছেন কেন? এর ফলে আমরা বিস্মিত হচ্ছি! এ ভাবে প্রকারান্তরে অসততার পথ বেছে নেওয়ার জন্য শিক্ষক শিক্ষিকা, স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে বাধ্য করা হচ্ছে! আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ না করলে পরে ওই খাদ্য দেওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কখনোই সম্ভব না।”