মহানগর ডেস্কঃ বেশ কিছু দিন আগেই নিউ মার্কেটে হকার্সদের সঙ্গে সেখানকার স্থানীয় দোকানদারের ঝামেলার জন্য বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। ঝামেলার যাতে অবসান ঘটে তার জন্য ফুটপাতে হকারদের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য, কলকাতা পুরসভা ও কলকাতা পুলিশ, নিউ মার্কেটের রাস্তায় যেখানে যেখানে হকার্সরা বসেন, সেখানে হলুদ দাগ কেটে দিয়েগেছিলেন, যাতে সমস্যার সৃষ্টি না হয়। এর পাশাপাশি মাসখানেক আগেই, পুলিশ ও পুরসভার তরফ থেকে হকারদের উদ্দেশ্য করে সতর্ক করে জানিয়েছিল যে, ওই দাগের বাইরে যেন কোনও হকার যেন না বসে। যদি কোনো হকার বসে, তাহলে সেই হকারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতো বার করে সতর্ক করার পরও নিউ মার্কেটের বেশির ভাগ জায়গায় এই নিয়ম মানছেন না, এই অভিযোগ বার বার উঠেছে এখনো উঠছে।
মঙ্গলবার কলকাতা পুরভবনে ফের এই নিউমার্কেটের হকার্স দের বিষয় নিয়ে টাউন ভেন্ডিং কমিটির বৈঠকে দীর্ঘক্ষণ ধরে আলোচনা করা হয়। কারণ, নিউ মার্কেট চত্তরের হকারদের একাধিক বার বলার পরও তারা সহযোগিতা করেছেন না। এখানকার বেশির ভাগ হকার, এই নয়া নিয়ম মেনে চলছেন না, গতকাল ওই চত্বরের একাধিক রাস্তা ঘুরে তা যথেষ্ট চোখে পড়লো। তাঁরা তাদের ইচ্ছে মতো করছেন। গ্র্যান্ড হোটেলের সামনে যেই অংশটি রয়েছে ওই ফুটপাতে দেখা গেল, তাদের সাজিয়ে রাখা জিনিস পত্র টপকে গিয়েছে হলুদ দাগ। কলকাতা পুরসভার মেয়র্স গেটের সামনে দিয়ে নিউ মার্কেট চত্বরে,চৌরঙ্গি প্লেসে ঢোকার সময় দেখা গেল আরেক হকার রাস্তার হলুদ দাগকে উপেক্ষা করে, চটির পসরা সাজিয়ে বসে আছেন ।
যখন তাদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছে হলুদ দাগ উপেক্ষা করে এরম ভাবে তাঁরা কেন বসেছেন? সেই হকারদের বক্তব্য ‘‘পিছনে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকায় আজ বসেছি। আগামী কাল থেকে নিয়ম মানব।’’ এরম একই অবস্থা দেখা যাচ্ছে বাট্রাম স্ট্রিটেও। হকার দের কথা না শুনে নিজের ইচ্ছে মত করার প্রবণতা সেখানের রাস্তাতেও একই ছাপ ফেলছে। নিউ মার্কেটের একাধিক স্থায়ী দোকানের মালিকদের অভিযোগ যে, পুরসভা ও পুলিশের তরফ থেকে হকারদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য, ফুটপাতে হলুদ দাগ কেটে চিহ্নিত করা হলেও, সেই নিয়ম অনেক হকাররাই মানছেন না। দীর্ঘদিন ধরেই নিউ মার্কেট এলাকার রাস্তায় হকারদের দাপট চলছিল। এখনো হকারদের দাপট বেড়েই চলেছে। এই বিষয় নিয়ে ব্যবসায়ীদের তরফ থেকে মেয়র, পুর কমিশনারকে চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানানো হলেও কোনো সুরাহা হয়নি।
হগ মার্কেট ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অশোক গুপ্তের অভিযোগ, ‘‘নামেই টাউন ভেন্ডিং কমিটি। ওটা হকার ভেন্ডিং কমিটি বললে ভাল হয়। পুরসভার মেয়র্স গেটের আশপাশে মূল রাস্তার উপরে হকারদের দাপটে চলাফেরা করাই দায়! হকারদের দাপটে দোকানের সামনের অংশটাও দখলে চলে যাচ্ছে। ফলে ক্রেতারা দোকানে ঢুকতে পারছেন না। বিষয়টির সমাধানে মেয়র, পুর কমিশনারকে বহু বার বলেও কাজ হয়নি।’’ মেয়র পারিষদ, দেবাশিস কুমার জানান, ‘‘নিউ মার্কেটে বেআইনি হকারদের সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে গিয়েছে। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই টাউন ভেন্ডিং কমিটির কাছে একাধিক অভিযোগ এসেছে। আজই এ বিষয়ে নিউ মার্কেট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।’’