মহানগর ডেস্ক : ২০২১ -এর পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় তৃণমূলের বিপুল সাফল্যের পিছনে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের ভূূমিকা সর্বজনবিদিত। সেবার বিজেপি শীর্ষ নেতা অমিত শাহ বাংলায় প্রচারে এসে বলেছিলেন, বাংলায় তারা ২০০-র বেশি আসন পেয়ে ক্ষমতায় আসতে চলেছেন। প্রশান্ত কিশোর বা পিকে তখন বলেছিলেন, বাংলায় বিজেপি আগে ১০০ আসন পেয়ে দেখাক। পিকে-র ভবিষ্যৎবাণী অক্ষরে অক্ষরে মিলে গিয়েছিল। ১০০ আসন বিজেপি বাংলায় ২০২১ -এর বিধানসভা নির্বাচনে পায়নি, ২০০ তো দূরের কথা। তার পরই এক লাফে বেড়ে গিয়েছিল পিকে-র ভোটকুশলী হিসাবে জনপ্রিয়তা। সেই পিকে এবার একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপি চমকপ্রদ ফল করবে। তৃণমূলকে টপকে বাংলার এক নম্বর দল হিসাবে নিজেদের তুলে আনতে পারে বিজেপি, ওই সাক্ষাৎকারে এমনই দাবি করেছেন পিকে। পিকের এহেন ভবিষ্যৎবাণী যে মোটেই তৃণমূলের ভালো লাগেনি সেটা একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে তাঁর একটি ছোট্ট উক্তিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বাংলা সংবাদ চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “প্রশান্ত কিশোর ওভাররেটেড, ওভারহাইপড।”
অভিষেকের এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে, তাহলে কী ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বাংলার ফলাফল নিয়ে পিকে-র বক্তব্যে ক্ষুব্ধ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়? তাই কি তিনি তাঁর এক সময়ের ভোটকুশলীকে এভাবে খাটো করলেন? যদি প্রশান্ত কিশোর ওভাররেটেড, ওভারহাইপড হন তাহলে ২০২১ -এর বিধানসভা নির্বাচনে কেন পিকে এবং তাঁর সংস্থা আইইপ্যাককে তৃণমূল বহুমূল্য দিয়ে ভোটকুশলী হিসাবে কাজে লাগিয়েছিলেন? কেনই বা পিকের স্লোগান, “বাংলা নিজের মেয়েকে চায়”-এ নির্ভর করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তখন বিভিন্ন জনসভায় প্রচার চালিয়েছিলেন? কেন তখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন নির্বাচনী জনসভায় গিয়ে বলতেন, ” বাংলা” উত্তরে সভায় উপস্থিত তৃণমূল কর্মী, সমর্থক,নেতারা বলতেন, “নিজের মেয়েকে চায়?”
২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের জয়ের নেপথ্য কারিগর যে পিকে-ই ছিলেন সেটা বাংলার মানুষ এবং তৃণমূল জানে। তবে এখন পিকে-র সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব বেড়েছ। মা-মাটি-মানুষের দল তৃণমূলকে এক সময় যিনি কর্পোরেট তৃণমূল বানিয়ে ফেলেছিলেন, এখন সেই পিকের সঙ্গে তৃণমূলের নৈকট্য নেই। তাই হয়তো অভিষেক বলেছেন, পিকেকে নিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি প্রচার হয়। এটা যদি অভিষেকের পিকেকে উড়িয়ে দেওয়ার একটা কারণ হয় তাহলে অন্যটি অবশ্যই পিকের এবারের লোকসভা নির্বাচনের ফল নিয়ে পিকে-র ভবিষ্যৎবাণী, যেখানে তিনি বলেছেন, “২০২৪-এর লেকসভা নির্বাচনের ফলে বাংলায় বিজেপি তৃণমূলকে টপকে এক নম্বর দল হিসাবে উঠে আসতে পারে।” এই কথা শুনে বিজেপির প্রতিপক্ষ তৃণমূল দলের সেনাপতির উষ্মা প্রকাশ করাটা খুবই স্বাভাবিক।