সিএজি রিপোর্ট তুলে বিজেপি যখন অভিযোগ করছে, কেন্দ্রের কাছ থেকে পাওয়া ২ লক্ষ ২৯ হাজার কোটি টাকার কোনও হিসেব দেয়নি পশ্চিমবঙ্গ সরকার, তখন রেড রোডের ধর্ণা মঞ্চ থেকে শনিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করলেন ২১ লক্ষ ১০০ দিনের কাজ করা শ্রমিকের টাকা পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রাপকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, “১০০ দিনের শ্রমিকদের কাজের টাকা ২১ লক্ষ শ্রমিককে কেন্দ্র দেয়নি। এই টাকা ২১ ফেব্রুয়ারি সবার অ্যাকাউন্টে রাজ্য সরকার পাঠিয়ে দেবে। এই খবর গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে দিন। কেন্দ্র ভাবছে বাংলাকে ভাতে মারবে? হবে না। কোথা থেকে টাকা আসবে? মানুষের টাকা, মানুষ এই টাকা দেবে। বাড়ির টাকাও দেয়নি দিল্লি, বাড়িও আমিই করে দেবো।”
পাশাপাশি শনিবারও মমতা ধর্ণা মঞ্চ থেকে আবার “একা লড়বো, অল আউট খেবলো”, বলে হুঙ্কার দেন, তোপ দাগেন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার তাঁর রেড রোডের ধর্ণা মঞ্চে ১০০ দিনের কাজ করে টাকা না পাওয়া শ্রমিকদের কয়েক জনকে ডেকে ছিলেন। তাঁদের সামনেই রীতিমতো উচ্চস্বরে মমতা তাঁর কথা ঘোষণা করেন।
এদিকে মমতার এই ঘোষণা শুনেই তাঁর সমালোচনায় সরব হয় বিজেপি এবং সিপিএম।
বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেন, “এর আগেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, রাজ্যের সব মানুষকে তিনি রেশন দেবেন নিনা পয়সায়। সেটা তিনি পারেননি, মমতা মিথ্যা কথা বলছেন। রেশন দিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি।”
সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য বলেন, “ভোট এসেছে তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার যা খুশি বলছেন। মমতা বলঋেন কেন্দ্র টাকা দেয়নি। আমরা চাই কেন্দ্র রাজ্যকে টাকা দিক। বিজেপি যদি রাজ্যকে হিসেব পেয়েও টাকা না দেয় তবে মমতা আদালতে যাচ্ছেন না কেন?”
শনিবার মমতা ধর্ণা মঞ্চ থেকে ফের কংগ্রেসকে অভিসম্পাদ দেন। বলেন, “আমি একা লড়বো। আমি অল আউট খেলবো। খেলা হবে। আবার বলছি খেলা হবে। সব রিলিওনাল পার্টি, ফ্রন্টাল অর্গানাইজেশন এক হলে বিজেপি ক্ষমতায় আসতে পারবে না।”
শুক্রবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসকে লক্ষ্য করে বলেন, “কংগ্রেস বাংলায় ৪০টি আসন পায় কিনা তার ঠিক নেই। সব বসন্তের কোকিল। হিম্মত থাাকলে উত্তর প্রদেশে গিয়ে বিজেপিকে হারাক।”
জয়রাম রমেশ মমতার এই কথার জবাব দিয়ে শনিবার বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসের আসন পাওয়া নিয়ে যা বলছেন তা ঠিক নয়। ওনার দাবি ভুল প্রমাণ হবে। আর রাহুল গান্ধি তাঁর ন্যায় যাত্রা নিয়ে উত্তরপ্রদেশ যাবেন।”
মমতা শনিবার অভিযোগ করেন, রাহুল বাংলায় ন্যায় যাত্রায় এলেন, আমায় একটা ফোন করলেন না। মমতার এই সমালোচনার জবাব দিয়েছেন, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তিনি বলেন, “রাহুল গান্ধির বাবা রাজীব গান্ধির স্নেহে, রাহুল গান্ধির মা সোনিয়া গান্ধির সৌজন্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হয়েছেন। তাঁর উচিত ছিল না রাহুল গান্ধি বাংলায় আসছেন, তাঁকে সৌজন্যমূলক একটা ফোন করা? কোথায় সেটাতো তিনি করেননি!”