sujata mondal
মহানগর ডেস্ক : লোকসভা নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে একদিকে যেমন চলছে প্রার্থীদের প্রচার, অন্যদিকে প্রচারে গিয়ে অনেক সময় বেলাগাম মন্তব্য করতে দেখা যাচ্ছে দলীয় নেতৃত্বদেরকে। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে বিষ্ণুপুরে।সানবাঁধা তমালতলায় দলীয় এক পথসভায় ভোটের পর তৃণমূলের ‘ট্রিটমেন্ট’ শুরু হবে বলে হুঁশিয়ারি দিলেন বিজেপি বিধায়ক অমরনাথ শাখা।
প্রসঙ্গত, মূলত একের পর এক দুর্নীতি সহ শাসক নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে যে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তারই দাওয়াইয়ের কথা বলেছেন বিজেপি বিধায়ক। তার সাফ কথা, ‘২০২৪-এর লোকসভা ভোটের ফলাফলের পরে আমরা শুরু করব তৃণমূলের ‘ট্রিটমেন্ট’। যে যা টাকা চুরি করেছে, যে যা চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়েছে, তাদেরকে আমরা ছেড়ে কথা বলব না।’ এদিকে বিধায়কের এহেন মন্তব্যে সমালোচনার ঝড় উঠেছে শাসক মহলে। শুরু হয়েছে বিতর্ক।
ভোটের মুখে এহেন উস্কানি মূলক মন্তব্যে পারদ চড়লেও বিধায়কের দাবি,তাঁর বক্তব্য উস্কানিমূলক নয় । যদিও বিজেপি বিধায়কের মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল। তিনিও বিষ্ণুপুরের প্রার্থী। তার কথায়, যোগ্যতা। বিষ্ণুপুরে বিজেপি প্রার্থী কয়েকদিন আগে জয়পুরে বলেছেন, তৃণমূলীদের চোখ উপড়ে নেব, হাত পা কেটে দেব। যেখানে দেখছি বিষ্ণুপুরের বিজেপি প্রার্থী যাচ্ছেন, বা ওঁর হয়ে যাঁরা ভোট প্রচারে যাচ্ছেন, ৫টা লোকও দেখা যাচ্ছে না, তার চেয়ে নিরাপত্তরক্ষী বেশি। লোকে হাসছে। তাই ওঁরা ভয়ে – আতঙ্কে মুখের ভাষা খারাপ করছে।’
বিষ্ণুপুরে লোকসভার প্রচারে নেমে সৌমিত্রর মুখোমুখি হলে যা করবেন বলে জানালেন সুজাতা
মহানগর ডেস্কঃ সৌমিত্র-সুজাতা, দুজনের মধ্যেই সম্পর্কের রসায়ন বদলেছে অনেকটা। দুজনেই লোকসভা ভোটে মনোনীত দুই শিবিরে প্রার্থী।নির্বচনকে সামনে রেখে দুই শিবিরের প্রচার কাজও শুরু গিয়েছে জোর কদিন,এদিন সুজাতাকে সৌমিত্রের প্রসঙ্গে কথা বলতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। সুজাতা বলেন,” আমাকে ঠকিয়েছে শুধু তাই নয়, দশটা বছর ধরে এই বিষ্ণুপুরের মানুষকে যে ঠকিয়েছে তার বিরুদ্ধে এবার জবাব দেবেন সাধারণ মানুষ। গোটা বিজেপি দলটাই বিক্ষুব্ধ। এতদিন সাধারণ মানুষকে ঠকিয়েছে। আর এবার অভিনয় করতে নেমেছেন তিনি। বিষ্ণুপুরের সঙ্গে বঞ্চনা করেছেন তিনি। আমি বার বার করে বলছি, এবার সরে দাঁড়ান। মানুষকে বাঁচতে দিন। এলাকায় কোনও উন্নয়ন হয়নি। সাধারণ মানুষ তাঁকে আপদে বিপদে পাশে পাননি। কী জবাব দেবেন তিনি? এমনকী তার নিজের দলের লোকজনই তাকে ফোনে পেতেন না। এর জবাব এবার মানুষ দেবেন। এতদিন পরে ফিরে তিনি এখন বাচ্চাদের লজেন্স বিলি করছেন। এসব মানুষ বুঝে গিয়েছেন।”
প্রচারে প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে দেখা হয়ে গেলে কি করবেন তিনি, এই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করায় একটুও সময় না নিয়েই সুজাতা বলেন,” অযাত্রা, কুযাত্রা! মুখ যেন দেখতে না হয়। জনতা জনার্দন ওনার অত্যাচারের জবাব দেবেন।“ প্রাক্তন স্বামী তথা বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-এর প্রসঙ্গে কথা শুনলেই রীতিমত ক্ষোভে ফেটে পড়তে দেখা যায় সুজাতাকে। প্রাক্তন স্বামীকে বিপক্ষে রেখে এবার ভোতবাজারে কেমন ফল আশা করছেন সুজাতা, এই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করায় সময়ের ওপরেই ভরসা রাখতে দেখা গেল তৃণমূল নেত্রীকে। যদিও গত লোকসভায় এই চিত্র সম্পূর্ন আলাদা ছিল দুজনের। তৎকালীন স্বামীর জন্য কার্যত রোদ জলকে উপেক্ষা করেই প্রচারে নেমেছিলেন সুজাতা। বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বামীর জন্য ভোট ভিক্ষা করেছিলেন তিনি নিজেই। সেবার জিতেও যান সৌমিত্র খাঁ।
তবে এবার তাঁদের বৈবাহিক জীবনের ছন্দপতনের পরে ওই একই আসনের তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা। বর্তমানে মুখ দেখাদেখি পর্যন্ত বন্ধ তাঁদের।যে মানুষটার জন্য গত লোকসভায় ভোট ভিক্ষা করেছিলেন সুজাতা এবার তাঁর বিপক্ষেই লড়বেন তিনি। সুজাতা এই বিষয়ে বলইন, সময় অনেক কথা বলে। সময়ই অনেক কথা বলবে। তবে বিষ্ণুপুরবাসী কার ভাগ্যে ‘সুসময়’ রচনা করবে সেটাই এখন দেখার।
লম্পট চরিত্রহীন…’ সৌমিত্রের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য সুজাতার, আর কি কি বললেন সুজাতা?
মহানগর ডেস্কঃ বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ-র বিরুদ্ধে ফের একবার বিস্ফোরক মন্তব্য করতে শোনা গেল তৃণমূল নেত্রী তথা প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা মণ্ডলকে । মহিলারা আগামী পাঁচ বছর সুরক্ষিত থাকতে চাইলে যেন কোনভাবেই সৌমিত্র খাঁ-কে আর ভোট না দেয়, এমনিই আবেদন সুজাতার। জয়পুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের একটি কর্মী সভায় বক্তব্য রাখাকালীন তৃণমূল নেত্রী সুজাতা মণ্ডলকে বেলাগাম ভাষায় আক্রমণ করতে দেখা যায় বিষ্ণুপুরের বিজেপি প্রার্থী সাংসদকে।
সাংগঠনিক মঞ্চ থেকে সুজাতা এলাকাবাসীদের বলেন,- “আপনাদের এখানকার লম্পট চরিত্রহীন মাতাল ধান্দাবাজ মেয়ে নিয়ে পড়ে থাকা সাংসদ আবার টিকিট পেয়েছে আপনারা জানেন।“ এদিন সুজাতা নাম না নিয়েই সন্দেশখালির বেতাজ বাদশার সঙ্গে তুলনা করেন সাংসদের। সুজাতার সংযোজন, ”আপনাদের যদি মনে হয় আগামী পাঁচটা বছর ঘরের মা-বোনেদের সম্মান সুরক্ষা রাখবেন তো মহিলাদের কাছে আমার আবেদন ওই লম্পট চরিত্রহীন সাংসদকে বিজেপির প্রার্থীকে একটা ভোটও দেবেন না। ভোট চাইতে এলে জিজ্ঞাসা করবেন পাঁচ কোটি টাকা করে তো অ্যালটমেন্ট হয় এমপি ল্যাডে, দশ কোটি টাকা তো খরচ করেছ বলছে, বাকি ১৫ কোটি টাকা কোথায় গেল? আর ওই ১০ কোটির হিসাবটাও নেবেন কোথায় খরচা করেছে কোন মহিলাদের নিয়ে হোটেলে থাকতে গিয়ে খরচ গেছে আর কত টাকা গেছে বোতলের পেছনে লাল জলের পেছনে।”
এর পাশাপাশি আরও বলেন তৃণমূল নেত্রী সুজাতা,- ”সন্ধ্যে সাতটার পর আপনারা ওই লম্পট খাঁ-কে ফোনে পান? সুস্থ অবস্থায় পান? কারণ সন্ধ্যা সাতটার পর সাংসদকে আর পাওয়া যায় না। তাই এই লম্পটকে আপনাদেরকে যোগ্য জবাব দিয়ে এই বিষ্ণুপুরের পবিত্র মাটি থেকে ছুড়ে ফেলা অঙ্গীকার নিতে হবে।”
এ বিষয়ে বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-কে প্রশ্ন করায় তিনি গোটা বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন- ”ওটা কি বলেছে জানি না, ওটা কোন নেত্রী নয়, আমি কিছু জানি না।”