মহানগর ডেস্ক : বাংলার সব আসনে বিজেপি এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি। অথচ প্রথম দফার লোকসভা নির্বাচন পর্বের জন্য মনোনয়ন জমা দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। অথচ এখনও পর্যন্ত যে বিজেপি বাংলার সবকটি আসন তো দূরের কথা, জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম এখনও পর্যন্ত ঘোষণা করতে পারেনি, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বঙ্গ বিজেপির মনোমালিন্য বাড়ছে। চলতি সপ্তাহেই দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ একঝাঁক বঙ্গ বিজেপি নেতা কেন্দ্রীয় কোর কমিটির সঙ্গে বৈঠকের পরেও বাংলার বাকি আসনে প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি। এই ঘটনায় ক্ষোভ বাড়ছে বাংলার বিজেপি শিবিরে।
শনিবার রাতে দিল্লিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির বৈঠকে সুকান্ত মজুমদার হাজির থাকলেও, ছিলেন না শুভেন্দু অধিকারী। বৈঠকে মঙ্গল পাণ্ডে, সতীশ ধন্দ ও অমিতাভ চক্রবর্তীরও হাজির ছিলেন। মূল নির্বাচন কমিটির বৈঠকের আগে আরও একবার কোর কমিটির সঙ্গে বাংলার নেতাদের প্রার্থী নিয়ে আরেক প্রস্থ আলোচনা হয়েছে। রাতে বাংলার তালিকায় চূড়ান্ত সিলমোহর বসলেও বাকি থাকা ২২টি আসনেরই প্রার্থীর নাম এই পর্বেও ঘোষণা হবে কি না তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে বলেই বিজেপি সূত্রের খবর। লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় সুকান্ত না কি শুভেন্দু, কার পছন্দের প্রার্থীরা তালিকায় বেশি থাকবেন তা নিয়ে রীতিমতো ঠান্ডা যুদ্ধ চলেছ বঙ্গ বিজেপির অন্দরে।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বাংলার বিভিন্ন আসনের জন্য জনপ্রিয় এবং খ্যাতনামা ব্যক্তিদের প্রার্থী করতে বলেছিল বঙ্গ বিজেপিকে। বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্টদের বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের তরফে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলেও প্রায় সকলেই সেই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছেন বলে খবর। এর ফলে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের উপর চটেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বাংলার কয়েকজন ধনী এবং অবাঙালি ব্যবসায়ীদের বিজেপির প্রার্থী হওয়ার জন্য ইচ্ছাপ্রকাশ করলেও তাতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সম্মত হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সংসদের অন্দরে দাঁড়িয়ে “অব কি বার, চারশো পার” স্লোগান ইতিমধ্যেই দিয়েছেন। তিনি বিজেপি ৩৭০ আসন পাবে বলে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেওয়ার পরে চাপে পড়ে গিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীরাও। কীভাবে লক্ষ্যপূরণ হবে সেই চিন্তায় ব্যস্ত তাঁরাও। বাংলা থেকে যাঁরা বিজেপির হয়ে জয় আনতে পারবে, তাঁদেরই প্রার্থী করা হোক– এই মর্মে আগেই শুভেন্দু-সুকান্তকে কড়া নির্দেশ দিয়ে দিয়েছিলেন শাহ-নাড্ডারা। বঙ্গ বিজেপির পক্ষ থেকে প্রতিটি আসনের জন্য চার জন করে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম দেওয়া হলেও তাঁদের জেতার সম্ভাবনা কতটা, সেই প্রশ্ন উঠতে সন্তোষজনক জবাব পাননি কেন্দ্রীয় নেতারা। আর সেই উত্তর না পাওয়াতেই আটকে রয়েছে বাংলার প্রার্থীতালিকা ঘোষণা। বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ মনে করে বাংলার রাজনৈতিক চিত্র কী, কোন প্রার্থী গ্রহণযোগ্য তা একমাত্র বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বই সঠিকভাবে চিহ্নত করতে পারেন। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হস্তক্ষেপ সমস্যা বাড়াচ্ছে।