মহানগর ডেস্ক: মাত্র দেড় মাসের মাথায় নিজেকে সরিয়ে নিলেন লিজ ট্রাস (Liz Truss)। ডাউনিং স্ট্রিটের সরকারি বাসভবনের বাইরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী (UK PM) পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার (resigns) কথা বৃহস্পতিবারের একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন কনজারভেটিভ দলের নেত্রী ট্রাস।
এই পদত্যাগের ব্যাপারে কারণ স্বরূপ ট্রাস্ট নিজের ব্যর্থতার যুক্তি খাড়া করেছেন। তিনি জানান, যুক্তরাজ্যের প্রধান হিসেবে যে প্রতিশ্রুতি নিয়ে তিনি নির্বাচিত হন, তা রক্ষা করতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। ইতিমধ্যেই ব্রিটেনের নতুন রাজা চার্লসকে জানিয়েছেন বিষয়টি। তবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই কনজারভেটিভ দলের নির্বাচন রয়েছে, সেই নির্বাচনে যোগ্য উত্তরসূরী সপথ না নেওয়া পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রীর যাবতীয় কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাবেন।
গত কয়েকসপ্তাহ ধরে দল ও বিরোধী পক্ষের কঠোর সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছিল লিজকে। তার কাজে কার্যত তিতি বিরক্ত হয়ে যাচ্ছিল দল। ভিতরে ভিতরে তার পদত্যাগ চাইছিল দলীয় কর্মীরাই। সেই আঁচে ঘি ঢেলেছে বুধবারই লিজের মন্ত্রিসভা ছেড়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রেভারম্যান এর বেরিয়ে আসা। সুয়েলা সাফ জবাব, নির্বাচনের প্রাক্কালে সাধারণ মানুষকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ সরকার। এমনকি অভিযোগ তুলে জানান, নিয়ম বহির্ভূত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথি ব্যক্তিগত ইমেল মারফত তিনি এক সাংসদকে পাঠিয়েছিলেন। সেই দায় মাথায় নিয়েই তিনি সরছেন। এরপর থেকে প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক নীতি ও সমালোচনার মুখে পড়তে শুরু করে। কলুষিত হয় লিজ ও তাঁর মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রীর কর ছাড়ের কথা ঘোষণা করার ফলে আচমকাই কমে যায় পাউন্ডের দাম। এমনকি ব্রিটেনবাসীর উপর চাপানো করের বোঝা সরিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতেও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। ঠিক ওই কারণে চলতি সপ্তাহেই অর্থমন্ত্রী কোয়াসি কোয়ারটেংকে পদ থেকে সরিয়ে দেন লিজ। বাতিল করা হয় আর্থিক নীতি। এরপরই দলের ভিতরে এবং বাইরে ক্রমশই জোরালো হয়ে উঠছিল ট্রাসের পদত্যাগের দাবি।
নির্বাচিত হওয়ার ৭ সপ্তাহের মাথাতেই দলীয় কর্মীদের দাবি মেনে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন লিজ। উল্লেখ্য গত ৫ সেপ্টেম্বর সবথেকে কাছের প্রতিদ্বন্দ্বী ঋষি শুনককে পরাজিত করে ব্রিটিশ প্রধামন্ত্রীর কুরশি দখল নেন। কিন্তু ৪৫ দিনের মাথাতেই তাঁর এই পদত্যাগ নারায়ণমূর্তির জামাই ভারতীয় বংশোদ্ভূত সেই ঋষিকেই যুক্তরাজ্যের মসনদ আহ্বান জানাচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।