মহানগর ডেস্ক: একে একে ইউক্রেনের ভূতলে নিক্ষেপ হচ্ছে মিসাইল, মুহুর্মুহু বাজছে সাইরেন। রক্তাক্ত দেহগুলো বয়ে নিয়ে যেতে সার বেঁধে দাঁড়িয়ে অ্যাম্বুল্যান্স। তার মধ্যে বারুদের গন্ধে আকাশ বাতাস বিষাক্ত হয়ে উঠছে। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যাচ্ছে চারিপাশ। এমনই বিভীষিকাময় দিনের সাক্ষী ইউক্রেন। জেলেনেস্কি প্রসাশন সূত্র জানা গেছে, গত ১০ দিনে ৮৪টি মিসাইল হামলা চালিয়েছে পুতিন সেনা। এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। কিন্তু রাশিযার ধনসত্মক আক্রমনে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা।
৮ মাস ধরে রাশিয়া ক্রমশই তছনছ করে দিচ্ছে গোটা ইউক্রেনকে বলে অভিযোগ সে দেশের প্রসাশনের। তাদের দাবি, এক সপ্তাহের হামলায় সব থেকে ক্ষতিগ্রস্থ রাজধানী কিয়েভ সহ দেশের বেশ কয়েকটি শহর।
পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চল এখন রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে। এই এলাকার বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলি এখন মস্কোর সমর্থনে রয়েছে। এমনকি খারকিভে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে শিশুরাও। ভেঙে পড়ছে বাড়িঘর থেকে সুপ্রাচীন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলি। এমনকি জাপোরিজিয়া অঞ্চলটিও এখন রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চলে গেলেও মূল শহরটি ইউক্রেনের হাতেই রয়েছে। যদিও এর মধ্যে গত মাসে গণভোটের মারপ্যাঁচে ফেলে আনুষ্ঠানিক ভাবে জাপোরিজিয়া অঞ্চলকে নিজেদের অংশ বলে ঘোষণা করেছে ক্রেমলিন। যদিও রাষ্ট্রপুঞ্জ ও ইউরোপ-আমেরিকা রাশিয়ার দাবিকে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে সে বিষয়ে কর্ণপাত করতে বিশেষ আগ্রহী নয় মস্কো।
এরমধ্যে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলির বক্তব্য রাশিয়া আগ্রাসন মানে না। ইউক্রেনের হাত থেকে বলপূর্বক ছিনিয়ে নেওয়া এলাকাগুলি রাশিয়া নিজেদের মানচিত্রে যুক্ত করতে চায় সেটা একেবারেই মেনে নেবে না জি-৭, ইউরোপীয় ইউনিয়ন। কিন্তু কোনও কিছুই শুনতে না রাজ রাশিয়া। তার জেহাদি মনোভাবকে বজায় রেখেই গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই জাপোরিজিয়া শহরে টানা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে পুতিন বাহিনী।
আট মাস ধরে চলা যুদ্ধে এখনও নিশানায় থাকা ইউক্রেনের সব অঞ্চল এখনও কব্জা করে উঠতে পারেনি রাশিয়া। এমনকি গতমাসে ইউক্রেন বাহিনীর আত্মঘাতী আক্রমণে কিছুটা হলেও পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিল রুশ সেনা। আর এটাই যেন মেনে নিতে পারেনি আগ্রাসনী পুতিন প্রশাসন। সোমবারই নিরাপত্তা কাউন্সিলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তার ঠিক আগেই ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে এই ভয়াবহ হামলা যথেষ্ট তাৎপর্যের। আর এই সামরিক তৎপরতা থেকেই স্পষ্ট, এবার মরণ কামড় দিতে চাইছে পুতিন। এমনকি রাশিয়ার অভিমত, ইউক্রেনে এটি তাদের বিশেষ অভিযান। আর রুশ বাহিনীর এই মরিয়া হয়ে ওঠা আক্রমনে ভবিষ্যতে পারমাণবিক হামলার বিভীষিকা দেখছে জেলনেষ্কি প্রশাসন।