মহানগর ডেস্ক : বাবার হাত ধরেই বড় হয় প্রতিটি ছেলে মেয়ে। ছোটবেলায় সে বাবাই সমস্ত স্বপ্ন পূরণ করে তাঁর সন্তানের। বড় হয়ে সে দায়িত্ব হয়ত অনেকেই ভুলে যায়। কিন্তু বিনীতা ভোলেননি। রুপোলি পর্দার চকচকে গ্ল্যামার তাঁকে ভোলায় নি তাঁর শিকড়। উপার্জনহীন বাবাকে নতুন পথ চলতে সাহায্য করল বছর ২৮-এর এই মেয়ে।
গতবছর লকডাউন অনেকের থেকেই কাজ কেড়ে নিয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন যাদবপুরে সুখেন গুহ। তাঁকে ভেঙে পড়তে দেয়নি বিনীতা।ব্যবসার ভরসা জুগিয়ে এসেছেন। সংসারের যাবতীয় দায়িত্ব সামলে উপার্জনক্ষম সেই মেয়ে বাবাকে খুলে দিলেন চায়ের দোকান। যাতে পায়ের তলার মাটি শক্ত করতে পারেন তাঁর বাবা। উপার্জন করতে সক্ষম হন ৬৫ বছরের এই বৃদ্ধ।
কলেজে পড়ার সময় থেকেই নিজের পড়াশোনার খরচ জোগাড় করছেন বিনীতা। বর্তমানে পেশায় তিনি অভিনেত্রী। মেকআপ,লাইট,গ্ল্যামার এসবের উপস্থিতিতেই দিনের বেশিরভাগ সময় কাটে তাঁর। কিন্তু যখন জানতে পারেন বাবার চায়ের দোকান খোলার ইচ্ছে বহুদিনের আপত্তি করেননি এতোটুকু।মনে মনে স্থির করেছিলেন হাতে টাকা এলেই বাবার স্বপ্ন পূরণ করবেন। কোনওরকম ভয় ,কুন্ঠা বা গ্লানিবোধ কাবু করেনি বিনিতাকে।
টলিউডের বন্ধু-বান্ধবদের সামনে নিজেকে চা বিক্রেতা হিসেবে পরিচয় দিতে কি স্বচ্ছন্দ বিনীতা? জবাব দিলেন,’ আমি সময় পেলেই কচুরি ভাজি।বিক্রিও করি মাঝে মাঝে।বাড়িতেও সময় পেলে রান্না করি। মানুষ বেঁচে থাকার জন্য যা যা করে আমিও আর বাবা তাই করছি এতে সংকচ হবে কেন?’
সদ্য পুজোর এক মিউজিক ভিডিওতে মুখ দেখেছেন অভিনেত্রী বিনীতা।যার ভিউ বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৬ লাখের কাছাকাছি।বিভিন্ন কাজ এবং বিজ্ঞাপন ।ওয়েব সিরিজ এসব সামলাচ্ছেন সমানভাবে। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে হিসেবে লড়াই করে টিকে থাকার মানসিকতা হারায়নি বিনীতার।জানিয়েছেন ,’আমরা ভাড়া বাড়িতে থাকি ।তবে মা বাবার মাথা গোঁজার জন্য একদিন বাড়ি করতে হবে আমায় সেটা জানি ।মনে স্থির করে রেখেছি’। টাকার জন্য নানা জায়গায় চাকরি করেছেন বিনীতা,করেছেন শিক্ষকতাও। তবে থিয়েটারের প্রতি ভালোবাসা ছিল অনেকদিন ধরেই এবং সেই থেকেই টলিউডে পা। তবে গতবছর লকডাউন এর কারণে কাজকর্ম বন্ধ থাকায় বেশ মানসিক চাপে ছিলেন তিনি। পরবর্তীকালে সবকিছু স্থিতিশীল হতে ফের কাজে বেরিয়েছেন বিনীতা।