মহানগর ডেস্ক: হাওড়ার মালি পাঁচঘড়ায় দেশি মদ খেয়ে মৃত্যুর ঘটনায় গোটা জেলা জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। গতকাল অসুস্থদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আজ সেখানে যাওয়ার কথা ছিল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari)। সেইসঙ্গে বিষ মদ খেয়ে প্রাণহানির ঘটনার প্রতিবাদে সেখানে সভার ডাক দিয়েছিল বিজেপি। আজ শুক্রবার বেলা তিনটে নাগাদ মালি পাঁচঘড়া থানার সামনে সভা করার কথা ছিল গেরুয়া শিবিরের। কিন্তু পুলিশের অনুমতি না মেলায় বাধ্য হয়ে সভা বাতিল করে মিছিলের সিদ্ধান্ত নেয় বঙ্গ বিজেপি। এরপর সেই মিছিল ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
বিষ মদের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে বিজেপি। মিছিল করে CP অফিসে যাওয়ার সময় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় পদ্ম শিবিরের কর্মী-সমর্থকদের। তাঁরা হাওড়ার সিপি অফিসে ডেপুটেশন জমা দেওয়ার জন্য মিছিল করে এগোতে গেলেই পুলিশের বাধার সম্মুখীন হতে হয়। স্থানীয় সূত্রে, শুক্রবার জেলা টিএমসির একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি রয়েছে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ইস্যুতে। এদিকে বিজেপি হাওড়া ময়দান থেকে মিছিল করে CP অফিস যাওয়ার পরিকল্পনা করলে জানানো হয়, সেখানে সিপিআইএমের একটি মিছিলের কর্মসূচি রয়েছে। প্রসঙ্গে হাওড়ার বিজেপি নেতা উমেশ রায় জানিয়েছেন, ‘মালি পাঁচঘড়ায় থানার পাশে শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে একটি সভা হওয়ার কথা ছিল। কাল রাত থেকেই তা হতে না দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। এতে পুলিশের বড় ভূমিকা রয়েছে’।
এরপর এদিন মিছিলে তুলকালাম বাঁধে। প্রসঙ্গে বিজেপি জানিয়েছে, পুলিশ বাংলার শাসক দলের সঙ্গে মিলে রয়েছে। তাঁরা পরিকল্পনা করে আমাদের আগের কর্মসূচি বাতিল করেছে। এখন সিপির কাছে যেতে গেলেই বাধা দিচ্ছে পুলিশ।রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে। মহিলাদের উপর লাঠিচার্জ করা হচ্ছে। তাঁদের দাবি, বিষ মদ খেয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩০ জনের।
বহুদিন ধরেই হাওড়ার মালি পাঁচঘড়া থানার ঘুসুড়ি এলাকায় মদের ঠেক চালান প্রতাপ কর্মকার নামের এক ব্যক্তি। সন্ধ্যা হতেই সেখানে ভিড় জমায় প্রচুর মানুষ। মঙ্গলবারও একইভাবে সেখানে ভিড় জমেছিল। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সন্ধ্যায় ওই ঠেক থেকে মদ খাওয়ার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন বেশ কয়েকজন। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে অসুস্থতার সংখ্যা। প্রথমে ৬ জনের মৃত্যুর খবর মেলে। সূত্র অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ১৩ জন মারা গিয়েছেন। এদিকে গেরুয়া শিবিরের দাবি, মারা গিয়েছেন ৩০ জন।
বুধবার সকালে ভাঙচুর চালানো হয় ওই মদের দোকানে। অভিযোগ উঠেছে, মদে বিষক্রিয়ার কারণেই মৃত্যু হয়েছে সকলের। যদিও এখনও নিশ্চিতভাবে কিছুই বলা যাচ্ছে না। হাওড়ার পুলিশ কমিশনার প্রবীণ ত্রিপাঠী জানিয়েছিলেন, পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কী কারণে মৃত্যু হয়েছে, তা ময়নাতদন্ত করে বোঝা যাবে। এদিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। পাশাপাশি বিষমদ ইস্যুতে বাংলার শাসক দলকে আক্রমণ করেছেন সুকান্ত বাবু। এদিন বিজেপির মিছিলকে ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয় হাওড়ায়।