মহানগর ডেস্কঃ পদার্থের বর্জ্যকে কাজে লাগিয়ে কোনও কিছু তৈরী করা এটা বহুদিন ধরেই নানা ভাবে চলে আসছে। কিন্তু তা বলে অলিম্পিকের পদক বর্জ্য দিয়ে তৈরী? এটা মেনে নিতে একটু অসুবিধা হতে পারে। তবে এটাই সত্যি।
টোকিও অলিম্পিকের প্রায় শেষের দিকে। প্রায় অধিকাংশ খেলোয়াড় বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা-ও হয়ে গেছেন। তা হলে একটা প্রশ্ন আসতেই পারে, তাঁরা তাহলে কি আসল সোনা, রুপো কিংবা ব্রোঞ্জের পদক পাননি?
একটু ধৈর্য ধরে রাখলেই পাওয়া যাবে এর যথাযথ উত্তর।
সম্প্রতি ক্রিকেট বিশ্বকাপে সমুদ্রের পাস্টিক বর্জ্যকে কাজে তৈরী হয়েছিল রহিত শর্মার বুট কিংবা আরও একটি উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে, ২০১৯ এর বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার জার্সি। উপরিউক্ত প্রশ্নের উত্তরে বলা যেতে পারে, অলিম্পিকের সমস্ত পদকই আসল। সোনা, রুপো ও ব্রোঞ্জ দিয়েই সেগুলি তৈরী করা হয়েছে। আবার একটি প্রশ্ন, তাহলে সেগুলি কিসের বর্জ্য?
পদকগুলি আসলে ভাঙা ফোন, ট্যাব, কম্পিউটার ও নানা যান্ত্রিক বর্জ্য দিয়ে বানানো হয়েছে।
এর জন্য অনেক আগে থেকেই নেওয়া হয়েছিল প্রসস্তূতি। ২০১৭ সালের এপ্রিল-এ অলিম্পিক কর্তৃপক্ষ একটি প্রকল্প নিয়ে আসে। যেটি ‘টোকিও মেডেল প্রজেক্ট’ নামে পরিচিত। এই নির্দিষ্ট সময় থেকেই জাপানের প্রায় ৯০ শতাংশ অঞ্চলের প্রায় ১৬২১ টি পৌরসভাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় এই প্রকার বর্জ্য সংগ্রহের জন্য। ২০১৯ এর মার্চে এই প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বলা বাহুল্য, সারা বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ৫৩.৬ মিলিয়ন টন যান্ত্রিক বর্জ্য জমা হয়। ১ মিলিয়ন সমান ১০ লক্ষ। ওই সময়ের মধ্যে মোট জমা করা হয় প্রায় ৭৮৯৮৫ টন বর্জ্য। এর মধ্যে ব্যবহার করা হয়েছে মাত্র ১৭ শতাংশ।
এই বর্জ্যকে পুনর্ব্যবহারের কারন হল আসলে পৃথিবী থেকে দূষন কমানো। এই দূষনের ফলে প্রতিবছর জাপানের অনেক বাসিন্দা নানা রোগে আক্রান্ত হন। তা থেকে মুক্তি পাওয়াই এর প্রধান লক্ষ।
যান্ত্রিক বর্জ্যের প্রধান উপাদান গুলি হল, মার্কারি, লেদ ও ক্যাডমিয়াম। এগুলিকে ‘স্মেল্টিং’ পদ্ধতিতে পৃথক করে পাওয়া যায় ৩২ কেজি সোনা, ৩৫০০ কেজি রুপো এবং ২২০০ কেজি ব্রোঞ্জ। যা থেকে মোট ৫০০০ টি পদক বানান অলিম্পিক উদ্যক্তারা।