মহানগর ডেস্ক: নয়া টুইটার কর্তা ইলন মাস্ক তখন সান ফ্রান্সিসকোয় কনফারেন্স রুমে কর্মীদের সঙ্গে ব্যস্ত মিটিংয়ে ব্যস্ত। ঘড়ির কাঁটা ঠিক বিকেল ৫ টার ঘরে এগোতেই মাস্কের বক্তৃতাকে তোয়াক্কা না করেই কনফারেন্স রুম এবং ভিডিও কল ছেড়ে বেরিয়ে যেতে শুরু করলেন কর্মীরা। পূর্ব নোটিশ অনুযায়ী ‘ডেডলাইন’ পার হতেই হুড়মুড়িয়ে চাকরি ছাড়তে (resignation) শুরু করে টুইটার কর্মীরা। সেই মৃতরেখা (deadline) ছিল বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত। বিদ্রোহী কর্মীদের প্রতি ইলন মাস্কের (Elon Musk) এমনই কড়া নির্দেশ ছিল। দেওয়ার হিড়িক পড়ে গেল টুইটার কর্মীদের মধ্যে।
সূত্রের খবর, টুইটারের মালিকানা হাতে পেয়ে প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ কর্মীকে ছেড়ে ফেলে ইলন মাস্ক। এরই মধ্যে কিছু বিদ্রোহী কর্মীকে একপ্রকার হুমকি বার্তা দিয়ে মাস্ক জানিয়েছিলেন, কেউ চাকরি ছাড়তে চাইলে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫ টার মধ্যে ইস্তফা দিতে হবে। সে কারণেই বৃহস্পতিবার ইস্তফা নিয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় টুইটারের কর্মীদের মধ্যে। যদিও মাস্কের এরেই ঘোষনার আগে ৩ মাসের অগ্রিম বেতন নিয়ে অন্তত শ-খানেক কর্মী ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের মধ্যে টুইটারের কিছু ‘গুরুত্বপূর্ণ’ কর্মীদেরকে আলোচনার মাধ্যমে টুইটারে রেখে দিতেই বৃহস্পতিবার মিটিংয়ে বসেছিলেন ইলন মাস্ক এবং তাঁর উপদেষ্টারা। কিন্তু কোনও কাজে আসেনি সেই পরিকল্পনা। একে একে অধিকাংশ কর্মী ইস্তফা দিতে শুরু করে। এরপরেই তড়িঘড়ি সান ফ্রান্সিসকোয় অবস্থিত টুইটারের মূল অফিসটি সোমবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে তা ইমেলের মাধ্যমে কর্মীদের জানিয়ে দেন মাস্ক।
প্রসঙ্গত, মালিকানা হাতে পাওয়ার পরেই টুইটারের মোট কর্মীসংখ্যার ৫০ শতাংশকেই ছেঁটে ফেলেছিলেন ইলন মাস্ক। ২০০ জন ভারতীয় সহ গোটা বিশ্বজুড়ে টুইটারের ৭ হাজার ৫০০ জন পূর্ণ সময়ের কর্মীকে ছাঁটাই করে দেন মাস্ক। এখানেই শেষ নয়, পরে তিনি ঘোষণা করেন, চাকরি ধরে রাখতে হলে দিনে ১২ ঘণ্টা কাজ করতে হবে। থাকবেনা কোনও সাপ্তাহিক ছুটি(Week off)। এমনকি কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ (Work from home) এর অপশন তুলে দিয়ে সকলকে অফিসে আসারও নির্দেশ দিয়েছিলেন মাস্ক। এরপরই বিশ্বজুড়ে মাস্কের গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই মাস্কের ‘হার্ডকোর’ কর্মসংস্কৃতির বিরুদ্ধে নিন্দায় সরব হয়েছিলেন নেটিজেনরা। এমনকি যে সব কর্মীরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধাচারণ করেছেন, তাঁদেরকেও ইচ্ছেমতো বরখাস্ত করতে শুরু করেছিলেন মাস্ক। কখনও কখনও প্রকাশ্যে টুইট করেও বরখাস্ত করা হয়েছে কর্মীদের।