মহানগর ডেস্ক: বড় কিছু করে দেখানোর পণ ছিল তার। যে সাফল্য অন্যদের অনুপ্রেরণা দেবে (Ankita-An Inspiration For Others)। এই বাংলার বর্ধমানে সাধারণ এক মধ্যবিত্ত পরিবারে বড় হয়ে উঠেছিল সে। পড়াশোনাও যে খুব আহামরি ছিল, তা নয়। বাংলা মাধ্যম স্কুল আর কলেজে পড়াশোনা। আইআইটি বা আইআইএমেও পড়া হয়নি। কিন্তু অধ্যাবসায় আর পরিশ্রমকে মূলধন করে বর্ধমানের ছোট্ট শহরের অঙ্কিতার (Ankita Of Bardwan) সংস্থার বার্ষিক আয় একশো কোটি টাকা।
মনে হতেই পারে এটা নিছকই গল্পকথা। কিন্তু বর্ধমানের মতো জেলার এই বাঙালি মেয়ের সাফল্য মোটেই গল্পকথা নয়। অঙ্কিতার বাবা সরকারি কর্মী ছিলেন। আর পাঁচটা সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের মতো সে মানুষ হয়েছে। বাংলা মাধ্যমে পড়া এই বাঙালি মেয়ের তৈরি করা সংস্থার বার্ষিক আয় চমকে দেওয়ার মতো। এক-দু কোটি টাকা নয়,একশো কোটি টাকা। তাঁর তৈরি করা আইটি সংস্থার নাম টেয়ার ফাইভ।
সংস্থাটি ওয়েব ডেভেলপমেন্টের কাজ করে থাকে। সঙ্গে ডিজিটাল মার্কেটিং। কলেজে পড়ার সময়ই অঙ্কিতা এনটারপ্রিউনার হওয়ার লক্ষ্যে লড়াই শুরু করেছিল। আর এখন তার সংস্থায় একশোর কাছাকাছি মানুষ কাজ করে। সংস্থার সদর দফতর আমেরিকার ইন্ডিয়ানায়। তবে নিজের এই ব্যবসার শুরুটা মোটেই সহজ ছিল না।
নিজে বড় হয়েছে সাদামাটা মধ্যবিত্ত পরিবারে। বর্ধমানে থাকার সময় সে সেখানকার কলেজে কম্পিউটার সায়েন্সে ভর্তি হয়েছিল। কলেজে পড়ার সময়ই অঙ্কিতা অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস ডেভেলপ শুরু করার পর টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে রোজগার শুরু করে। অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ তৈরির সময় ডেটিং অ্যাপে জিন উগেন নামে একজন মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়েছিল। উগেন একজন সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার। তিনি ফ্লোরিডায় কাজ করতেন। নিজের ব্যবসা শুরু করা নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলে অঙ্কিতা। দুজনে মিলে ২০১৫ সালে টেয়ার ফাইভের শুরু করে।
তবে ব্যবসা শুরু করার মতো বিপুল টাকা তাদের ছিল না। শুরুটা করেছিল দুটি কম্পিউটার ভাড়া করে। ২০২১ সালে বিয়ে করার আগে দুজনে প্রায় ছ বছর একসঙ্গেই কাজ করেছিল। ২০২১ সালে অঙ্কিতার সংস্থা টেয়ার ফাইভ ব্যবসায় একশো কোটি টাকা লাভ করেছে। ভাড়া করা দুটো কম্পিউটার নিয়ে সংস্থাকে তিলে তিলে বড় করে তুলেছে সে। এখন প্রায় একশোজন কাজ করে। কলকাতার সল্ট লেকের কাছেও একটা অফিস করেছে অঙ্কিতা।
দেড় হাজারের বেশি ক্লায়েন্ট তার সংস্থার পরিষেবা নিয়ে থাকে। তার ব্যবসা চাঁদার ওপর ভিত্তি করে চলে। আর এই কৌশলেই অন্যান্য সংস্থাগুলিকে তারা সফটওয়ার টাকার বিনিময়ে দিয়ে থাকে। এই মুহূর্তে তার সংস্থা পঁচিশটি সফটওয়ার প্রোডাক্টের উন্নতি ঘটিয়েছে। আসলে অঙ্কিতা হল কীভাবে সীমিত সম্পদ নিয়ে বড় কিছু করা সম্ভব, তার জীবন্ত উদাহরণ।