মহানগর ডেস্ক: ফের অঘটন উত্তরপ্রদেশে! যুবতীর গলব্লাডারে অস্ত্রোপচার করে পাথর বাদ দেওয়ার বদলে জরায়ু বাদ (UP Doctor Removed Uterus) দিয়ে দিলেন চিকিৎসক। সালটি ছিল ২০২০য়ের মার্চ মাস। প্রথম কোভিড লকডাউনের সময়। তলপেটের যন্ত্রণায় কাহিল হয়ে পড়েন বারাণসীর ছোলাপুর ব্লকের বাসিন্দা ছাব্বিশ বছরের ঊষা মৌর্য। কিছুদিন ধরে তলপেটে ঘনঘন যন্ত্রণায় ছটফট করার পর ঊষা তাঁর গ্রামের এক আশা কর্মীর সাহায্য চান। ঊষাকে নিয়ে ওই আশা কর্মী তাঁকে গোলা অঞ্চলে একটি নার্সিং হোমে নিয়ে যান।
নার্সিং হোমটি চালাতেন ড প্রবীণ তেওয়ারি নামে এক চিকিৎসক। তাঁকে নার্সিং হোমে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষা করে দেখা যায় তাঁর গল ব্লাডারে পাথর জমেছে। ওই বছর মে মাসের ২৮ তারিখে গল ব্লাডার থেকে পাথর বের করার জন্য চিকিৎসকের ক্লিনিকে অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের পর রীতিমতো স্বস্তি বোধ করেন ঊষা। দিন কয়েক পর তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তারপর থেকে আগের মতো সুস্থ বোধ করেন তিনি।
কিন্তু এ বছরের মার্চের মাসে ফের সেই আগের মতো তলপেটে তাঁর অসহ্য ব্যথা শুরু হয়। ঊষা বেশ কিছু হজমের ট্যাবলেট খেয়ে তলপেটে হট ওয়াটার ব্যাগ দিয়ে যন্ত্রণা দূর করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতেও যন্ত্রণা কমার বদলে বাড়তে থাকে। এরপর তাঁকে বেনিয়াপুরে অন্য একটি নার্সিং হোমে নিয়ে যাওয়া হয়। পুংখানুপুঙ্ক্ষ পরীক্ষার চোখ চড়কগাছ হয়ে যায় চিকিৎসকদের। পরীক্ষা করে দেখা যায় তাঁর গল ব্লাডারে পাথর আগের মতোই আছে। চিকিৎসকরা সবিস্ময়ে দেখতে পান তাঁর জরায়ু নেই।
এরপর পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে ড. তেওয়ারির কাছে গিয়ে কৈফিয়ত দাবি করেন ঊষা। তাঁর দাবি শুনে উল্টে ড. তেওয়ারি তাঁকে হুমকি দেন। এরপর বিভিন্ন থানায় থানায় গিয়ে কোনও সাড়া না পেয়ে স্থানীয় আদালতের দ্বারস্থ হন ঊষা। অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গত পঁচিশ তারিখে মামলা দায়ের করেন তিনি। ছোলাপুর থানা জানিয়েছে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভুল অস্ত্রোপচার ও হুমকির অভিযাগে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় অভিযোগ রয়েছে। পুলিশি তদন্তের পর চিকিৎসকদের একটি প্যানেল ঘটনার তদন্ত করবে বলে জানা গিয়েছে।