মহানগর ডেস্ক: তার লোমশ চেহারা দেখলে আতঙ্ক হওয়ার কথাই। এমন চেহারা লাখে একটা দেখা যায় কিনা সন্দেহ। কিংবা বলা যেতে পারে বিরলের মধ্যে বিরলতম শারীরিক পরিস্থিতি (Werewolf Syndrome) । মধ্যপ্রদেশে থাকে সতেরো বছরের ললিত। কিন্তু তার লোমশ চেহারার জন্য স্কুলে অহরহই টিটিকিরি শুনতে হয়। এমন লোমে ঢাকা চেহারাকে ওয়ের উলফ বলা হয়। ললিত জন্মেছিল এমন বিরল উপসর্গ নিয়ে। তার এমন লোমশ চেহারা আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। তবে ছোট থেকেই তার অভিজ্ঞতা একেবারেই ভালো নয়। বিশেষ করে স্কুলের শুরু থেকে তাকে নানা বিদ্রুপ শুনতে হয়েছে। সেসব কথাই ললিত জানিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কেমনভাবে তার জীবন শুরু হয়েছে, সেকথা শুনলে খারাপ লাগারই কথা। তার যখন ছ বছর বয়েস,তখন চিকিৎসকরা তার শরীরে অস্বাভাবিকভাবে চুল গজানো লক্ষ করেন। তাঁরা ললিতের সারা গায়ে এই অস্বাভাবিক চুল গজানোকে হাইপারট্রিকোসিস বলে জানা।
এই উপসর্গ এতটাই অন্যরকমের যে মাঝবয়েস থেকে মাত্র পঞ্চাশজনের মধ্যে এ ধরণের উপসর্গ দেখা যায়। আর এই বিরলতম উপসর্গের জন্যে স্কুলের সহপাঠীরা তাকে মাঙ্কি বয় (Monkey Boy) বলে খেপাতো। কারণ তার শরীরের লোমশ চেহারাই এই বিদ্রুপের জ্বালা হজম করতে হয়েছে তাকে। স্কুলের সহপাঠীরা তাকে নিয়ে ভয়ে ভয়ে থাকতো এই বোধহয় সে বানরের মতো কামড়ে দেবে। ছোট ছেলেমেয়েরা তাকে দেখলেই পাথর ছুড়ে মারতো। তারা সবাই চিৎকার করে উঠতো মাঙ্কি মাঙ্কি বলে। তাকে ভূত বলে ভয় পেতো। তারা ভাবতো সে কোনও ভুতুড়ে গল্পের চরিত্র। ললিত জন্মেছিল বিচিত্র এক কৃষক পরিবারে। বর্তমানে সে বারো ক্লাসে পড়ছে। সে খেতে গিয়ে বাবাকে চাযের কাজে সাহায্য করে। ললিত জানিয়েছে সারাজীবনই তার এই লোমশ চেহারা থাকবে।
বাড়ির লোকেরা বলে চিকিৎসক জন্মের সময় তার চুল কেটে দিয়েছিলেন। ছ বছর বয়েসে সারা দেশে বড় বড় লোম গজাতে শুরু করেছিল। তারপর ধীরে ধীরে সারা শরীরে বনমানুষের মতো বড় বড় লোম গজাতে শুরু করে। তার বাড়ির লোকেরা প্রথম প্রথম ব্যাপারটা মেনে নিতে পারেননি। কারণ অজানা এই অসুখের কোনও চিকিৎসা নেই। তবে এত অসুবিধের মধ্যেও ললিত নিজের মতো করে জীবন উপভোগের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সে আগামী দিনে একজন ইউ টিউবার হতে চায়। সে জানিয়েছে সে আস্তে আস্তে উপলব্ধি করেছিল সে আর পাঁচজনের মতো নয়। সে একেবারেই আলাদা। আস্তে আস্তে বাড়ির সবাই তার এই বিরল উপসর্গটা মেনে নিতে শুরু করেছে। তার বন্ধুরা তাকে উৎসাহ দেয় এগিয়ে যাওয়ার জন্য।