মহানগর ডেস্ক: বাইপাস সংলগ্ন আনন্দপুরে ৬৮টি ঝুপড়ি পুড়ে ছাই। সর্বস্ব খুইয়ে এই ঝুপড়িবাসীরা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। দমকলের ১০টিনইঞ্জিন এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা টিম ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চালাচ্ছে। কোনও প্রাণহানির খবর এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
তবে আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে পরপর গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের শব্দে এলাকা কেঁপে ওঠে। ঘটনার আকস্মিকতায় হতচকিত হয়ে পড়ে স্থানীয়রা। স্থানীয় মানুষেরা দমকল কর্মীদের সঙ্গে আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগায়। এই ঝুপড়ির পাসেই রয়েছে বেসরকারি হাসপাতাল ফর্টিস। হাসপাতালের চিকিৎসকরাও এই অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্য দেখে হাসপাতাল ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন।
স্থানীয় মানুষরা জানান, “সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ আগুন লাগে। পরপর গ্যাস সিলিন্ডার ফাটতে থাকে। দমকা হাওয়ার আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আনন্দুরের এই এলাকায় পরপর দোকান, ঝুপড়ি রয়েছে।”
দমকলের ১০টি ইঞ্জিন আগুন নেভানোর কাজ করছে। দমকলের তরফে জানানো হয়েছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।
এই ঝুপড়ির অনেক বাসিন্দাই এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছেন। ঝুপড়িতে আগুন লাগার ফলে তাঁদের বইপত্র, অ্যাডমিট কার্ড, রেজিষ্ট্রেশন সার্টিফিকেট পুড়ে গিয়েছে। এর ফলে বিপাকে পরীক্ষার্থীরা। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তাঁরা। অনেকেই প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বইপত্র, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরানোর চেষ্টা করেন। দমকলকর্মীরা এসে সামলে নেন পরিস্থিতি। হতাহতের কোনও খবর মেলেনি। তবে অনেক ঝুপড়ি পুড়ে ছাই। ঘরছাড়া বহু মানুষ। সম্বল খুইয়ে পথে বসেছেন তাঁরা। আগুনে পুড়ে গিয়েছে একটি পরিবারের বন্ধন ব্যাঙ্ক থেকে গাড়ি কেনার ঋণের সমস্ত নথি এবং নগদ টাকা। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন সবহারা এই মানুষগুলো। তাঁরা বুঝেই উঠতে পারছেন না কী ভাবে তাঁদের ঘর সংসার পুড়ে ছাই হয়ে গেল।
ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ। তিনি দমকল আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্থরা কাউন্সিলরকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
দমকলের ডিজি ঘটনাস্থল থেকে জানান, “প্রথমে ডান দিক ও বাম দিকের আগুনকে আমরা নিভিয়ে মাঝখানটাতে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করি। আগুন নিয়ন্ত্রণে, চিন্তার কোনও কারণ নেই।”
ধোঁয়ায় বহু মানুষ অসুস্থ হয়েছেন। প্রাণ বাঁচিয়ে আগুন থেকে বেরিয়ে আসতে পারলেও তাদের সব জিনিসপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে।
এখানকার বাসিন্দারা কেউ কেউ জানিয়েছেন, গত ১১ বছর আগে সরকার তাদের এই জায়গায় নিয়ে আসে তিন বছরের নাম করে। তবে সেই থেকে এখানেই তাদের রেখে দেয়, কোনও ব্যবস্থা করেনি। অন্য জায়গা থেকে ভোটের জন্য সরকার এদের আনন্দপুর ঝুপড়িতে নিয়ে এসেছিল,ভোট মিটে যেতে আর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেনি রাজ্যের শাসকদল।