মহানগর ডেস্কঃ যত দিন যাচ্ছে শাহজাহান শেখকে নিয়ে একাধিক তথ্য উঠে আসছে ইডি আধিকারিকদের হাতে। কোটি কোটি কালো টাকার সম্ভার রয়েছে এই হাজাজাহানের কাছে। এবার শাহজাহানের একটি ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে এর পাশাপাশি ফ্রিজ করা হয়ে তাঁর মাছের ব্যবসা সংক্রান্ত একটি সংস্থা ‘মেজার্স শেখ সাবিনা ফিশ সাপ্লাই ওনলি’ অ্যাকাউন্টও। এই দুই একাউন্টের আর্থিক লেনদেন পুরোপুরি ভাবে বন্ধ করার জন্য, ওই ব্যাঙ্কের শীর্ষ কর্তৃপক্ষকে একটি নোটিশও পাঠিয়েছিলেন তাঁরা। তারপর এই ২টি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ় করে দেওয়া হয়েছে। ইডি সূত্রে খবর, তাঁরা শাহজাহানের আরও বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আছে, যেগুলি তাঁদের নজরে আছে। সেই অ্যাকাইন্টের লেনদেন সংক্রান্ত বিষয় তাঁরা খতিয়ে দেখবেন।
জানা যাচ্ছে, তদন্তকারীরা ১৩৭ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য প্রাথমিক ভাবে হাতে পেয়েছেন, শাহজাহানের একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাইন্টের ডিটেইলস খতিয়ে দেখার পর এই টাকার পরিমাণ আপাতত জানা গেছে। এর পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি অ্যাকাইন্ট তদন্তকারীদের নজরের মধ্যে রয়েছে। জানা গেছে শাহজাহানের প্রায় ১৫টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখছেন এই অ্যাকাউন্ট গুলি থেকে রোজ টাকা লেনদেন হতো কিনা। ইডি মারফত আগেও জানা গিয়েছিল যে, শাহাজাহান কিভাবে মাছের ব্যবসা কে সামনে শুধু শো করে রেখে, এই ব্যাবসার পিছনে চলতো তার অন্য ফন্দি। দীর্ঘদিন ধরে অর্জিত নানা জায়গার কালো টাকা সাদা করতে এই মাছের ব্যবসা ছিল নেহাতই লোক দেখানি। এমনকি শাহাজান নিজের যেই পরিমাণ টাকা এক হাত দিয়ে বের করতেন, সেই পরিমান টাকাই আবার অন্য হাতে নিয়েও নিতেন।
শাহজাহানের কাজ চলত ঠিক এই পদ্ধতিতে- শাহাজাহান প্রথমে কোনও ব্যক্তি বা কোনো সংস্থার কাছে নগদ অর্থ তুলে দিতেন, তারপর নিজের অ্যাকাউন্টে, সেই টাকা ব্যাঙ্কের মাধ্যমে জমা করাতে বলতেন। এবার আসি শাহজাহানের মাছের ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়ে। মাছের ব্যবসারর জন্য যেই সংস্থাটি করেছিলেন, সেই সংস্থার নাম রেখেছিলেন তাঁর মেয়ের নামে। ইডির কাছে ২টি ইসিআইআর রয়েছে শাহজাহানের বিরুদ্ধে। একটি হচ্ছে বেআইনি ভাবে লোকের জমি দখল ও মাছ চাষ আরেকটি হচ্ছে, রেশন সংক্রান্ত দুর্নীতি। এমনকি জানা গেছে বিদেশেও মাছ আমদানি-রফতানির মাধ্যমে, কোটি কোটি টাকার বেআইনি লেনদেন হয়েছে সেই সংক্রান্ত বিষয়েও মামলা রয়েছে। শাহজাহানকে, গত শুক্রবার সিবিআইয়ের হেফাজত থেকে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছিল। বেআইনি ভাবে লোকের জমি দখল এবং বিদেশে মাছ আমদানি রফতানি মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে শাহজাহানকে সংশোধনাগারে গিয়ে জেরা করার জন্য শনিবার সকালে আদালতে আবেদন করেছিলেন ইডি আধিকারিকরা। সেই আবেদন আলদালত মঞ্জুর করে। তারপরই শনিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে শাহজাহানকে জেরা-জিজ্ঞাসা পর্ব। সামনে আরও তথ্যে উঠে আসবে এমনটাই মনে করছে ইডি আধিকারিকরা।