মহানগর ডেস্ক : বৃহস্পতিবার গার্ডেনরিচের ধ্বংসস্তূপ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। গার্ডেনরিচে কী করে এতো বেআইনি বহুতল উঠল এই প্রশ্নে ফিরহাদ হাকিম বললেন, “এখানে যাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না তাঁর স্ত্রী,মেয়ে ও বাড়ির লোকের কাছে গিয়েছিলাম। ওনাদের বাড়ির একজনকে পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁর নাম শেরু। বাড়ির লোকেদের বলে এলাম, যতক্ষণ বডি পাওয়া না যাচ্ছে ততক্ষণ উদ্ধারকাজ চলবে। কলকাতা পুরসভা দিনরাত এই কাজ করবে যতক্ষণ না বডিটা পাওয়া যায়। বাড়ির লোকেরা জানেন এখন সে আর বেঁচে নেই। তাও তাঁদের তো উৎকন্ঠা থাকে।”
সাংবাদিকরা এই সময় ফিরহাদ হাকিমের কাছে জানতে চান শেরুর পরিচয় কি? ফিরহাদ বলেন, “জানি না।” এরপর সাংবাদিকরা মেয়র তথা রাজ্যের পুর ও নগর উন্নয় মন্ত্রীর কাছে জানতে চান, কী ভাবে এখানে এতো বেআইনী বহুতল নির্মাণ হচ্ছে? উত্তরে ফিরহাদ বলেন, “আমি কী করে জানব?” এর আগেও ফিরহাদ একই ইস্যুতে বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনা যেখানে ঘটেছে, সেই ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইকবাল সামস কিছু জানেন না বলে মন্তব্য করে বলেছেন, প্রশাসন জানে। এদিকে বৃহস্পতিবার ফিরহাদ হাকিমের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “আসলে উনি বলবেন কী করে? তৃণমূল আমলে দুর্নীতিটাকে তো শিল্পের পর্যায় নিয়ে গেছে। ওনার এই বহুতল বিপর্যয় ও ১০টি মানুষের প্রাণহানির দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করা উচিত।”
ফিরহাদের মন্তব্যের সমালোচনা করে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “এসব আর ফিরহাদ হাকিমের জানতে হবে না। ওদের অন্তর্জলী যাত্রা শুরু হয়েছে। এসব ঠিক করার দায়িত্ব ওদের হাতে আর থাকবে না।” তবে এনডিআরএফ গার্ডেনরিচে উদ্ধারকাজ বন্ধ করেছে। এখন কলকাতা পুরসভার তরফে উদ্ধারকাজ চলছে। এই বহুতল ভেঙে পড়ার তদন্ত লালবাজার হোমিসাইড শাখা করছে। ঘটনাস্থলের নমূনা সংগ্রহ করেছে পুলিশ, সেই নমূনা ন্যাশনাল স্যাম্পেল টেস্টিং সেন্টারে পাঠাবে। এই ঘটনায় প্রোমোটারকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এই প্রোমোটারকে এই বেআইনি কার করতে যারা উৎসাহিত করেছে, তাদের ডাকা হবে লালবাজারে।
তবে এতো কিছুর পড়েও মেয়র তথা রাজ্যের পুর ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী এবং স্থানীয় বিধায়ক এবং কলকাতা পুরসভার এমএমআইসি, বিল্ডিং ফিরহাদ হাকিমকে সাংবাদিকরা এদিন প্রশ্ন করেন, কি করে বেআইনি ৫ তলা বাড়ির মাঝখানে আর একটি বেআইনি পাঁচতলা বাড়ি উঠল? ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, “আমি কী করে জানব? এখন মানুষের পাশে থাকার সময়। আমি ঘটনার দিনও ছিলাম, এখনও আছি।”