Home Bengal “সন্দেশখালির ঘটনায় আমি শিহরিত”, মন্তব্য হাই কোর্টের বিচারপতির

“সন্দেশখালির ঘটনায় আমি শিহরিত”, মন্তব্য হাই কোর্টের বিচারপতির

by Mahanagar Desk
51 views

মহানগর ডেস্ক:  সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে এবার মন্তব্য করলেন  হাই কোর্টের বিচারপতি অপূর্ব সিংহরায় মঙ্গলবার মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি   বলেন, ‘‘সন্দেশখালির দু’টি ঘটনায় আমি শিহরিত। প্রথমত, আদিবাসীদের জমি দখলের অভিযোগ। দ্বিতীয়ত, সেখানকার মহিলাদের মাথায় বন্দুকের নল ঠেকিয়ে ধর্ষণ করার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে আদালত এই মামলা নিচ্ছে।’’

বিচারপতি অপূর্ব সিংহরায় বলেন, “সন্দেশখালি নিয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ করার এটিই সঠিক সময়। তিনি মন্তব্য করেন, ‘‘মানুষ রাতে ঘুমোতে যায় এটা ভেবে যে, মাথার উপর আদালত রয়েছে। এই ঘটনায় হস্তক্ষেপ করার এটাই সঠিক সময়।’’ সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে মামলায় আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়কে আদালতবান্ধব হিসাবে নিয়োগ করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। আগামী শুনানিতে সরকারি আইনজীবী দেবাশিস রায়কে এ বিষয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি অপূর্ব সিংহরায়। সন্দেশখালিতে গত ৫ জানুয়ারি ইডি আধিকারিক এবং সাংবাদিকদের উপর প্রথম হামলার ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান এবং তাঁর অনুগামীরা। তাঁর বাড়িতেই তল্লাশি অভিযানে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইডি আধিকারিকদের উপর হামলার ঘটনার পর থেকে পলাতক শাহজাহান।

এই ঘটনার এক মাসের পর সম্প্রতি আবার উত্তপ্ত হয়েছে সন্দেশখালি। দফায় দফায় সেখানে অশান্তি, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে পুলিশের ভূমিকা। অশান্তির ঘটনায় পুলিশ ইতিমধ্যেই তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। তাঁদের এক জন তৃণমূলের উত্তর সর্দার। সন্দেশখালিকাণ্ডে নাম জড়ানোর পরেই উত্তমকে সাসপেন্ড করে শাসকদল। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এ ছাড়াও গ্রেফতার করা হয়েছে বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহ এবং সন্দেশখালির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারকে। সেই আবহেই সন্দেশখালি নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করল কলকাতা হাই কোর্ট।

সন্দেশখালিকাণ্ড নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশও করেছেন বিচারপতি সিংহরায়। আদালতে তিনি বলেন, ‘‘সন্দেশখালিতে যে সব ঘটনা ঘটছে, তা নিয়ে আমি ক্ষুব্ধ। খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আমার শ্রদ্ধা রয়েছে। এক জন বিচারপতি হিসাবে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ গ্রহণ করার আমার যথেষ্ট ক্ষমতা রয়েছে। সেখানে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে মহিলাদের উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘অবৈধ উপায়ে আদিবাসীদের জমি নেওয়া হচ্ছে। আমরা জানি, আদিবাসীদের জমি হস্তান্তর হতে পারে না। আইন মোতাবেক, একজন আদিবাসী অন্য আদিবাসীকে জমি হস্তান্তর করতে পারেন।’’

তিনি এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা গ্রহণ করতে পারেন কি না জিজ্ঞাসা করলে সরকারি আইনজীবী জানান, সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী তিনি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করতে পারেন। কিন্তু হাই কোর্টের বিচার্য বিষয় বিবেচনা করলে তাঁর এই মামলা গ্রহণ করা উচিত নয়। কারণ, এই মামলার শুনানি অন্য বেঞ্চে হতে পারে। তা ছাড়া স্বতঃপ্রণোদিত মামলার ক্ষেত্রে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল হলেন উপযুক্ত ব্যক্তি। তিনিই এ ক্ষেত্রে আদালতকে সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারবেন বলেও জানান সরকারি আইনজীবী। এর উত্তরে বিচারপতি অপূর্ব সিংহরায় বলেন, ‘‘আমি কারও কোনও অভিযোগ নিয়ে হস্তক্ষেপ করছি না। শুধুমাত্র মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়েই আমি চিন্তিত। লোকের ৭০০ বিঘা জমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এটা চলতে পারে না। তাই এই পদক্ষেপ নেওয়া। বিচারব্যবস্থা ওই ঘটনার উপর নজর রাখছে।’’ এদিন শুনানিতে বিচারপতি জানিয়েছেন, এই বিষয়ে রাজ্যকে নোটিস জারি করবে হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল। নোটিস জারি করা হবে রাজ্য পুলিশের আইজি, বারাসাত রেঞ্জের ডিআইজি, জেলার পুলিশ সুপার, জেলাশাসককে। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।

You may also like

Mahanagar bengali news

Copyright (C) Mahanagar24X7 2024 All Rights Reserved