মহানগর ডেস্ক : রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রায়ে ২০১৬ সালে এসএসসি-র গোটা প্যানেল বাতিল করে দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এর ফলে বাতিল হয়ে গেল ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি। প্যানেলের মেয়াদ শেষের পর যাঁরা নিয়োগ পেয়েছেন, তাঁদের বেতন ১২% সুদ-সহ চার মাসে ফেরর দিতে হবে। এমনই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও সব্বর রসিদির ডিভিশন বেঞ্চ। চার সপ্তাহের মধ্যে ১২ শতাংশ সুদ-সহ তা ফেরাতে হবে চাকরি বাতিল হওয়া প্রার্থীদের। নতুন করে পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়ার। হাই কোর্টের এই রায়ে আংশিক সন্তুষ্ট এতদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া চাকরি প্রার্থীরা। তাঁদের প্রশ্ন একটাই, ”যোগ্যতা প্রমাণ সত্ত্বেও নিয়োগপত্র মেলেনি, আমাদের এখন কী হবে? কবে পুনর্নিয়োগ হবে?’ তবে এই রায়কে যুগান্তকারী ও নিজেদের লড়াইয়ের ফল বলে দাবি করেন আন্দোলনকারীরা।’
এই রায় শুনে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ প্রশ্ন তুলেছেন, এই রায়ে কি যোগ্যদের প্রতি সুবিচার হল? বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বিজেপি নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য গোটা ঘটনার দায় চাপিয়েছেন রাজ্য মন্ত্রিসভার উপর।
২০১৬ সালে তৈরি হওয়া শিক্ষক নিয়োগের সমস্ত প্যানেল বাতিল করে দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। মূলত ওএমআর শিটে কারচুপির কারণেই সমস্ত নিয়োগ বাতিল হয়েছে। এতদিন ধরে যারা চাকরি করেছেন, হাই কোর্টের রায়ে রাতারাতি তাঁরা জীবিকা হারালেন। এহেন পরিস্থিতি চাকরিপ্রার্থীদের কাছে যে কত বড় ধাক্কা, তা আলাদা করে বলার কিছু নেই। তবে সেইনদায় কার সেটাও বিবেচ্য।
এই রায় প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষ বলেন, ”হাই কোর্টের রায় শুনলাম। সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার রাস্তা খোলা। তা নিয়ে আইনজীবীরা সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে এই যে যোগ্য প্রার্থীরা এতদিন ধরে আন্দোলন চালালেন, তাঁদের প্রতি কি সুবিচার হল?” কুণাল ঘোষ যেটা বলতে পারেননি তা হল, রাজ্য সরকার কেন এই নিয়োগ দুর্নীতিকে সমর্থন করে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্ট, ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিল! কেন রাজ্য মন্ত্রিসভা অতিরিক্ত পদ বা সুপার নিউমেরিক পদ সৃষ্টি করেছিল। কেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ পুরো শিক্ষা দফতরটা জেলে!
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এই রায় শোনার পর বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লজ্জা থাকলে একনই পদত্যাগ করা উচিত। আশা করছি সেটা তিনি করবেন। পাশাপাশি রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য এই প্রসঙ্গে তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ”এই গোটা ঘটনার দায় নিতে হবে রাজ্য মন্ত্রিসভাকে, মুখ্যমন্ত্রীকে। শুধু পার্থ চট্টোপাধ্যায় বা শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের উপর দায় চাপালেই হবে না। গোটা মন্ত্রিসভাই এর জন্য দায়ী। যোগ্য প্রার্থীরা চাকরি পাক, দুর্নীতিগ্রস্তরা শাস্তি পাক, এটাই চাই।”