মহানগর ডেস্ক : “নরেন্দ মোদী বলছেন ভোটের পর সবাইকে জেলে ভরব, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন দোষীদের উল্টো করে ঝুলিয়ে সোজা করব, এটা প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষা? আমি উদয়নকে বলব, মাথা থান্ডা রাখতে হবে। ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল, তৃণমূল। মনে রাখবেন ওরা উত্তেজনা ছড়িয়ে বিএসএফকে দিয়ে ভোট করিয়ে নিতে চাইবে, সেটা হতে দেবেন না।”
কোচবিহারের দিনহাটার জনসভা থেকে শুক্রবার এভাবেই বিজেপিকে নিশানা করলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কোচবিহারে ঘুর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থদের বাড়ি তৈরীর প্রসঙ্গ উল্লোখ করে বলেন, “ঝড়ে জলপাইগুড়ি,আলিপুরদুয়ার,কেচবিহারের প্রচুর মানুষের বাড়ি ভেঙে গেছে। মানুষগুলো কি রাস্তায় থাকবে? এখন ভোট ঘোষণা হয়েছে, তাও এদের জন্য আমি কমিশনের কাছে আবেদন করেছিলাম যাতে এদের বাড়িগুলো বানিয়ে দেওয়ার অনুমতি আমাদের দেয়। সেই অনুমতি এখনও পাইনি। আমি এখন বলছি, আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে নেবে, ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। আবাস যোজনায় ৬০ হাজার করে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এটা পূর্বঘোষিত কর্মসূচি। ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। আমার প্রশাসন আরও ৪০ হাজার টাকা দেবে। বাড়ি বানাতে শুরু করুন। এতোগুলো মানুষ কি রাস্তায় থাকবে? এই টাকা প্রশাসন দেবে।”
মমতা এদিন সিএএ-র বিরুদ্ধে আবার সোচ্চার হন। তিনি বলেন, “সিএএ আমি হতে দেব না। সবাই দেশের নাগরিক। আপনারা আগে ভালো নাগরিক হোন।”
নাম না করে নরেন্দ্র মোদীকে সিনেমা করার আহ্বান জানান মমতা। বলেন, “বাংলা কাজ করেনি তাই টাকা দিচ্ছ না, বলছ তৃণমূল দুর্নীতি করেছে। সিনেমা করলেই পারেন। রাজনীতির ময়দানে নাটক কেন? আমার ছেলেদের, প্রার্থীদের গ্রেফতার করলে তাঁদের স্ত্রীরা প্রার্থী হবে। ৩ বছর ১০০ দিনের কাজের টাকা দেয় না। আমরা কর্মশ্রী প্রকল্প করেছি। টাকা দেয় না আবার ৬০ টাকা বাড়িয়েছে। যাহ, ওই ৬০ টাকা আমি দিয়ে দিলাম, খা। বলে বেড়াচ্ছ তৃণমূল চোর? তৃণমূলকে বলছে চোর, আর নিজেরা বড় চোর,ডাকাত,গদ্দার, নির্লজ্জ, বেহায়া। বিজেপি ছিঃ। দেশ, সংবিধান বেচে দিয়েছেন। এই ভারত আমি চিনি না। নির্বাচন কমিশনকে বলছি, নিরপেক্ষ নির্বাচন করুন। সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে ভারতের নির্বাচনের দিকে।”
মমতা এদিন বলেন, “বলে গেছে ৪০০ পার। যদি আপনার সঙ্গে মানুষ থাকবে তাহলে এনআইএ, সিবিআই, ইডি লাগছে কেন?”
বিচার ব্যবস্থার একাংশ সঠিক ভাবে কাজ করছে না বলে এদিন অভিযোগ কটেন মমতা। তিনি বলেন, “সবাই নয়, কেউকেউ বিচার ব্যবস্থায় থেকে এমন রায় দেন যা দেখে বোঝা যায় কেন এমন হচ্ছে। একজন দেখলেন না বেকার ছেলেমেয়েদের চাকরিগুলো খেলেন, তারপর বিজেপির প্রার্থী হয়ে গেলেন।” মমতার এই বক্তব্যে তিনি যে কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতিকেই নিশানা করেছেন সেটা বোঝাই যাচ্ছে।
মমতা এদিন বলেন, “মোদী বলছেন, ভোটের পর সবাইকে জেলে ভরবেন, শাহ বলছেন, দোষীদের উল্টো করে ঝুলিয়ে সোজা করা হবে। কই এসব তো একশ্রেণির সংবাদ মাধ্যম দেখতে পায় না।”