মহানগর ডেস্ক : নাম না করে তমলুকের সভা থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দু অধিকারীকে “গদ্দার” বলে সমালোচনা করলেন। মমতার এই মতব্যের উত্তরে শুভেন্দু অধিকারী বললেন, “হিম্মত থাকলে নাম করে বলুন। আপনার বাড়ির সামনে মঞ্চ বেধে উত্তর দিয়ে আসব। নন্দীগ্রামের মানুষ আপনাকে একবার জবাব দিয়ে দিয়েছে। উনি ভাবছেন প্রধানমন্ত্রী হবেন।”
সোমবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে গিয়ে নন্দীগ্রামে ভোটগণনা সংক্রান্ত মামলার কথা টেনে আনলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম না করে আক্রমণও করলেন শুভেন্দুকে। মমতার মন্তব্য, ‘‘যা হয়েছিল, মানুষ তার জবাব দেবে।’’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন ২০২১ সালের নন্দীগ্রাম বিধানসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের মামলাটা এখনও বিচারাধীন। আড়াই বছর হয়ে গেল কোর্টে মামলাটা পড়ে রয়েছে। কী হয়েছে না-হয়েছে, এর উত্তর মানুষ একদিন দেবেনই।’’
শুধু নন্দীগ্রামের নির্বাচন নিয়েই নয়, পূর্ব মেদিনীপুরে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম না করে সেই শুভেন্দু অধিকারীর দিকে সরাসরি আঙুল তুলেছেন। মমতা বলেন, “কার মাধ্যমে চাকরি হয়েছিল? পূর্ব মেদিনীপুরের সবাই জানে। আমি কারও চাকরি খাই না।”
মমতা এদিন তমলুকেট সভায় বলেন, ‘‘গায়ের জোরে কাউকে খুন করে, কাউকে লুট করে টাকার জোরে নিজে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে অন্যদের বলছে চোর! চোরের মায়ের বড় গলা! আপনারা পকেটমার দেখেছেন? বাসে বা ট্রেনে যে পকেটমারি করে, সে-ই প্রথমে পকেটমার পকেটমার বলে চিৎকার করে। অন্যেরা উঠে দাঁড়ালে তখন আসল পকেটমার পালিয়ে যায়!’’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সভায় বলেন, “এখন অনেকে আসবে, অনেক কিছু বলবে, মনে রাখবেন ইলেকশন আসবে,ইলেকশন চলে যাবে, তারপর কিন্তু আমরাই থাকবো।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিবার নির্বাচনের আগে যে ভাবে নিজের প্রতিশ্রুতির প্রসঙ্গ তুলে সরকারের সাফল্য বিবৃত করেন এদিনও ঠিক সে ভাবেই লক্ষ্মীর ভান্ডারের প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা কেন্দ্র নয় রাজ্য দেয়। আমরা যা বলি সেটা করি। ১০০ দিনের কাজের টাকা কেন্দ্র দেয়নি, রাজ্য ৫৯ লক্ষ মানুষকে এই টাকা দেবে।”
প্রথমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “২১ ফেব্রুয়ারি ২১ লক্ষ শ্রমিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১০০ দিনের কাজের টাকা রাজ্য ট্রান্সফার করবে। তারপর মমতা বলেন এই সংখ্যাটা কেন্দ্রের পোর্টাল থেকে নেওয়া হয়েছে, সেখানে ২১ লক্ষ শ্রমিক সংখ্যা ছিল। সেই সংখ্যাটা ৫০ লাখ হয়েছে। এই টাকা রাজ্যই দেবে।”
তবে সোমবার তমলুকের সভা থেকে মমতা বলেন, “৫৯ লাখ মানুষকে রাজ্য ১০০ দিনের কাজের টাকা দেবে। কেন না রাজ্যকে কেন্দ্র ১০০ দিনের টাকা দেয়নি।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন আবাস যোজনার প্রসঙ্গ তুলে বলে, “বাড়ি তৈরী হয়নি বলে মিথ্যে কথা বলছে বিজেপি। ভাববেন না আমি কাউকে ছেড়ে দেব। মাথাকেও আমি ধরব। তবে আমি মানুষকে বিশ্বাস করি। এজেন্সি দিয়ে তৃণমূলকে যাঁরা বদনাম করে তাদের মানুষ জবাব দেবে।”