মহানগর ডেস্ক: তৃণমূলের প্রবীণ – নবীন দ্বন্দ্বের একটা সহজ সমাধান করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজে প্রার্থীদের নিয়ে কর্মীসমর্থকদের মধ্যে পরিচিত করালেন আর এই প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিয়ে, যিনি দলে নবীনের প্রতিনিধি। এমন একটা ভাব যেন কোনওকালে তৃণমূলে প্রবীণ-নবীন দ্বন্দ্ব ছিল না, নেই। প্রার্থী তালিকাতেও অদ্ভুত মিশেল রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর মধ্যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিস্ক এবং পছন্দ যে নেই সেটাও নয়। তাই একদিকে নতুন তারকা মুখের চমক রয়েছে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় অন্যদিকে সৌগত রায়ের মতো প্রবীণ সাংসদকেও প্রার্থী করা হয়েছে, যিনি নিজেই কিছুদিন আগে নিজের জয় নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
তবে এবার বাদ পড়লেন একাধিক পুরনো প্রার্থী। বিশেষ করে যে কেন্দ্রগুলিতে গতবার তৃণমূল জিততে পারেনি, সেগুলির প্রায় সবকটিতেই নতুন প্রার্থী দেওয়া হয়েছে এবার।
রবিবার ব্রিগেড সভা থেকে ৪২ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে তৃণমূল। তবে ঘোষণার আগেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উল্লেখ করেন, যাঁদের প্রার্থী তালিকায় রাখা হল না, তাঁদের কোনও না কোনও দায়িত্ব দেওয়া হবে। এটা মমতা প্রতিবারই প্রার্থী তালিকা ঘোষণার দিন বলে থাকেন।
এবার আরামবাগ থেকে টিকিট পেলেন না সাংসদ অপরূপা পোদ্দার। ওই কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে মিতালি বাগকে।
বর্ধমান পূর্ব থেকে প্রার্থী করা হয়নি সাংসদ সুনীল কুমার মণ্ডলকে। পরিবর্তে প্রার্থী হয়েছেন পেশায় চিকিৎসক ড. শর্মিলা সরকার।
বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়ে প্রার্থী হলেও পরে তৃণমূলে ফিরে এসেছিলেন অর্জুন সিং। তবে এবার ব্যারাকপুর কেন্দ্রে টিকিট পেলেন না অর্জুন। সেই জায়গায় প্রার্থী হচ্ছেন রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। যিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলেই দলে পরিচিত।
বসিরহাট থেকে বাদ পড়ল অভিনেত্রী নুসরত জাহানের নাম। ওই কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে হাজি নুরুল ইসলামকে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি দিয়ে আগেই সাংসদ পদ ছাড়ার কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন মিমি চক্রবর্তী। এবার যাদবপুর কেন্দ্রে তাঁর পরিবর্তে প্রার্থী হলেন আর এক অভিনেত্রী তথা তৃণমূলের যুব সভানেত্রী সায়নী ঘোষ।
মথুরাপুর কেন্দ্রে প্রার্থী করা হল না সাংসদ চৌধুরী মোহন জাটুয়াকে। ওই কেন্দ্রে বাপী হালদারকে ঘাসফুল চিহ্নে প্রার্থী করা হয়েছে।
এছাড়া, ২০১৯-এর তালিকায় যে সব প্রার্থীর নাম ছিল তাঁদের অনেকেই এবার আর টিকিট পাননি। উত্তরবঙ্গের একাধিক আসনে প্রার্থী বদলে গেছে। পরেশ চন্দ্র অধিকারী, দশরথ তিরকে, বিজয়চন্দ্র বর্মন, অমর সিং রাই, কানাইয়া লাল আগরওয়াল, অর্পিতা ঘোষ, মৌসম নেনজির নূর, মোয়াজ্জেম হোসেনের নাম এবার আর প্রার্থী তালিকায় রাখা হয়নি। প্রার্থী তালিকায় জায়গা পাননি মমতাবালা ঠাকুর, রত্না দে নাগ, শ্যামল সাঁতরার মতো নেতা-নেত্রীরাও।