মহানগর ডেস্ক : জলপাইগুড়ি ও ডাবগ্রামের জনসভা থেকে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারকে তীব্র আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ফুলবাড়ির সভা থেকে বলেন, “আমি দুদিন আগে চালসা দিয়ে যাচ্ছিলাম। আমার গাড়ি দেখে চোর চোর স্লোগান দেয়। আমি বলি ওরে তোরা তো পকেটমার,ডাকাত, চোরের সর্দার।”
মমতা এদিন জলপাইগুড়ি ও ডাবগ্রামের সভা থেকে নরেন্দ্র মোদীর উত্তরবঙ্গের সভার বক্তব্য উল্লেখ করে বলেন, “একজন এখনও ক্ষমতায় আসেনি। এখনই বলছে ভোটের পর একএক করে সবাইকে জেলে ভরবে। কই আমি ৩৪ বছরের অত্যাচার সহ্য করেছি, তারপর ক্ষমতায় এসে বলেছি, বদলা নয় বদল চাই। আমরা তো কাউকে বলিনি জেলে ভরব। আগে বিজেপি নেতা,কর্মীরা ভালো ছিল, কাজ করত। এখন টাকা হয়েছে, তাই কাজ করতে চায় না। এদিকে জেলায় জেলায় গিয়ে এরাই টাকা ছড়াচ্ছে।”পাশাপাশি অমিত শাহ বাংলায় এসে সম্প্রতি বলেছেম, “দোষীদের পা উপরে, মাথা নীচে করে ঝুলিয়ে রাখব”, মমতা শাহর এই বক্তব্যেরও কঠোর সমালোচনা করেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন উভয় সভা থেকেই বলেন, “১০০ দিনের কাজের টাকা, আবাস যোজনার টাকা গত ৩ বছর ধরে কেন্দ্র দিচ্ছে না। আমি বলেছি, বাংলা নিজেই ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প করেছে। এখানে যে কাজ করতে চায় সে কাজ পাবে। আগে বলেছিলাম ৫০ দিনের কাজ দেব, এখন বলছি ৬০ দিনের কাজ দেব।”
ডাবগ্রামের জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, “আমি যখন রেলমন্ত্রী তখন রেলের প্রকল্প ও টাকা আমি বরাদ্দ করে গিয়েছি। এখন সব উদ্বোধন করছে আর গেরুয়া রং লাগিয়ে দিচ্ছে। আমি গেরুয়া রং পছন্দ করি। এটা সন্ন্যাসীজলপাইগুড়ির সভা থেকে <span;>বালুরঘাটে অমিত শাহের সভাকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘‘মুসলিম, রাজবংশী, হিন্দু, তফসিলি, আদিবাসী, খ্রিস্টানদের বিয়ের নানা পদ্ধতি আছে। কোনও ঐতিহ্য থাকবে না। সব কেড়ে নেবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তো বলেই গেলেন, সবাইকে লটকে দেবেন।’’
তবে ইন্ডিয়া জোট নিয়ে জলপাইগুড়ির সভায় স্ববিরোধী বক্তব্য রাখেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রে আমরা সরকার গড়তে সাহায্য করব। কিন্তু বাংলায় একটি ভোটও সিপিএম বা কংগ্রেসকে নয়। দেশের ক্ষেত্রে বিষয়টা আমরা আলাদা করে বুঝে নেব। এখানে ওরা বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছে।’’
<span;>মমতার এই কথা যদি ঠিক হয় তাহলে বলতেই হয় যে বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাই যে ৪২ আসনে লড়ছেন, সেটা ইন্ডিয়া জোটকে মান্যতা না দিয়েই তিনি লড়ছেন। এছাড়া মমতা নিষেধ করছেন সিপিএম, কংগ্রেসকে ভোট দিতে। ওন্যদিকে তিনিই আবার বলছেন দেশের ক্ষেত্রে ইন্ডিয়া জোটটা তিনি বুঝে নেবেন। তাহলেকি মমতা চাইছেন, এই রাজ্যে তাঁর দল তৃণমূল লোকসভা নির্বাচনে ফলের নিরিখে প্রথম এবং বিজেপি দ্বিতীয় হোক? কেননা রাজ্যে কংগ্রেসের হাত ধরে ক্ষমতায় এসে ২০১১ সালের কয়েকমাস পরেই কংগ্রেসকেই শেষ করার দায়িত্ব, সাইনবোর্ডে পরিণত করার কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বহুবার ঘোষণা করেছেন এবং কংগ্রেসকে ভেঙে খানখান করেছেন। এবার লোকসভা নির্বাচনের মুখে এই কথা শুনে কংগ্রেস, সিপিএম নেতৃত্ব বলছে, “নিজেই মমতা ইন্ডিয়া জোটে গেলেন, বললেন তিনিই ইন্ডিয়া জোটের নাম দিয়েছেন। অথচ মমতা কোনও রকম আলোচনা ছাড়াই ৪২ আসনে বাংলার তৃণমূল প্রার্থী ঘোষণা করে দিলেন। এখন আবার বলছেন, তিনি ভোটের পর ইন্ডিয়া জেটটা বুঝে নেবেন। এই ছেঁদো রাজনীতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ইন্ডিয়া জোটে এসে করবেন, সেটা ইন্ডিয়া জোট হওয়ার পর একের পর এক ঘটনার মাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মিজেই তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। এখন দেখার ভোটের পর সরকার গঠনের দরকার হলে ইন্ডিয়া জোট না বিজেপি কার হাত মমতা ধরেন।?”
<span;>মমতা এদিন বলেন, “জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার কি ছিল আর আমরা কি করেছি।”