মহানগর ডেস্ক : মাথাভাঙায় নির্বাচনে প্রচারে এসে জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জলপাইগুড়ির ভয়াবহ ঘুর্ণিঝড়ে দুর্গত মানুষের পাশে কী ভাবে দাঁড়িয়েছেন তার বিবরণ দিলেন। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে না মানার জন্য রাজ্যের মানুষকে আহ্বান জানান। শীতলকুচির গত লোকসভা নির্বাচনে চারজনের মৃত্যুর জন্য তৎকালীন পুলিশ কর্তা যিনি এবার বীরভূমের বিজেপি প্রার্থী তাঁকে দুষলেন। মমতা বলেন, “ওই পুলিশ অফিসারের নামে ভিজিল্যান্স আছে, এখনও রাজ্য ক্লিয়ারেন্স দেয়নি, কী করে তাঁকে বিজেপি প্রার্থী করল? এটা কোন আইন?”
এদিনের সভা থেকে মমতা আবাস যোজনার বাড়ি নিয়ে কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা তুলে ধরেন। মমতা বলেন, “১১ লক্ষ বাড়ির জন্য নামের তালিকা আমরাই দিয়েছিলাম। এখন ওই তালিকা নিয়ে বিজেপির কল সেন্টার থেকে ফোন করে তাদেরই বলা হচ্ছে আবেদন কর, বাড়ি দেব। আমি বলছি কেউ আবেদন করবেন না, সবার আবেদন আছে, ভোটের পর আমরা বাড়ি করে দেব।”
১০০ দিনের কাজের টাকা ৩ বছর ধরে কেন্দ্র আটকে রেখেছে বলেও মমতা এদিন অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “১০০০ টাকা যাদের লক্ষীর ভান্ডার হয়েছে তাদের কাছে টাকা পৌঁছে গেছে। ৬০ বছর যাদের বয়স, তাদের বার্ধক্যভাতা ১০০০ টাকা অ্যাকাউন্টে পৌঁছে গেছে।”
চাবাগানে ভোটের মুখে ১০ লক্ষ মানুষের রুটিরুজি বিজেপি বন্ধ করে দিয়েছে, এটা আমি মানব না”, বলে এদিন কেন্দ্রের মোদী সরকারকে হুঁশিয়ারি দেন মমতা।
মমতা এদিন দাবি করেন, “কোচবিহারে কেউ আসত না, আমি সব করেছি, এখানে রাজবংশি অ্যাকাডেমী, নারায়ণী সেনা, পলিটেকনিক, ইঞ্জিনিয়ারিং কলোজ, পিটিটিআই হয়েছে। মদনমোহন মন্দির সরকার দেখে। রাজবংশী, কামতাপুরি ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছি। কোচবিহারে ২০০ রাজবংশী স্কুল করে দিয়েছি। কোচবিহার এয়ারপোর্ট আমরা করপছি।”
এর পরেই কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নীশিথ প্রামাণিকের নাম না করে মমতা বলেন, “আমার দলে একটা আপদ ছিল,ওটাকে তাড়িয়েছি,ওটা এখন ওদের সম্পদ। ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন। কেন ভালো লোককে প্রার্থী করা যায়নি? কেউ ছিল না? আমাদের প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বাসুনিয়া। ওদের প্রার্থী অবাবশ্যার অন্ধরার। বকব তোমার নামে কি কেস আছে? লোকাল মানুষের কাছে দেব? কেন্দ্রীয় সরকারের কজন আধিকারীক বদলি হয়েছে রাজ্যে যে এতো বদলি হচ্ছে?”
সিএএ নিয়ে এদিন মমতা কেন্দ্রকে একহাত নেন। তিনি বলেন, “ভোটের আগে সিএএ বলে চেচাচ্ছে। এখন বলছে পুরোহিত লিখে দেবেন পুরোহিত। মনে রাখবেন সিএএ তে নাম লেখালেই আপনার সরকারি অধিকার, নাগরিক অধিকার থাকবে না। এতোদিন সিএএ বলে চেচালে, এমপাওয়ারমেন্ট কমিটিতে সেনসাসের লোক রেখেছ, তাহলে এখন পুরোহিত কেন লিখে দেবে?”
মমতা এদিন বলেন, “যেদিন থেকে ২০১৪ তে ক্ষমতায় এসছে সেই থেকে বাংলাকে ঠকাচ্ছে। বাংলা ১ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি আটকে রেখেছে আর বাংলা থেকে নিয়ে গেছে ৬ লক্ষ ৭৪ কোটি টাকা।”
এরপর জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে মমতা বলেন, “কেন্দ্রীয় এজেন্সি বিজেপির কথায় চলছে। এটা গণতন্ত্রের স্বচ্ছ পরিবেশ হতে পারে না। এটা দেখুন।”
মোদীর গ্যারিন্টিকে তীব্র সমালোচনা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কোচবিহার বিমান বন্দর কে করেছে? এখন এসে সুন্দর নামবেন। আমি বলেছিলাম ডাবল ইঞ্জিন চাই দেয়নি, এতে ঝুঁকি আছে। এই ডাবল ইঞ্জিন বিমানের, ওদের ডাবল ইঞ্জিন নয়। বলেছিল ১৫ লক্ষ টাকা সবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দেবে, কেউ পেয়েছেন? ২ কোটি বেকারের চাকরি দেবে বলেছিল দিয়েছে? ভারতে বেকার সবচেয়ে বেশি।