মহানগর ডেস্ক : সোমবার কোচবিহারের জনসভা থেকে রামনবমীর দিন হিংসার সম্ভাবনা নিয়ে সতর্ক বার্তা দিলেম মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘‘এখানকার বিজেপি প্রার্থী গুন্ডাদের মাফিয়া। আগের বারের শীতলখুচির মতো আবার গুলি চালিয়ে দেবে। ১৭ তারিখ ওদের হিংসা করার দিন। সকলকে বলছি, গালাগালি দিলেও মাথা ঠান্ডা করে আল্লাকে ডাকবেন। প্ররোচনায় পা দেবেন না। ওরা হিংসা চায়। ভোট চায় না।’’ পাশাপাশি মমতার অভিযোগ, “চক্রান্ত করে এনআইএ ঢুকিয়ে দিয়ে ভোট বানচাল করতে চাইছে বিজেপি, কোনও চক্রান্তে পা দেবেন না, খুব সাংঘাতিক পরিস্থিতি দেশের।”
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যে কি রাম নবমীর দিন অশান্তি হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হচ্ছে? সেই প্রশ্ন করছেন রাজনৈতিক অভিজ্ঞরা। কারণ গত বছর রাম নবমীতে রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায় অশান্তি হয়েছিল। প্রশ্ন হচ্ছে, রাজ্য প্রশাসন অশান্তি নিয়ন্ত্রণে যাবে পুলিশ প্রস্তুত থাকে, সেই নির্দেশ রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রী দিয়েছেন তো”
অভিষেকের কপ্টারে কেন আয়কর হানা দিয়েছে তা নিয়েও প্রতিবাদ করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘অভিষেকের একটা বৈঠক ছিল। ওর কপ্টারে আয়কর চলে গিয়েছে। সেখানে নাকি সোনা আর টাকা আছে। আমরা ও সব নিয়ে ঘুরি না। ওটা বিজেপি করে। আমাদের কিছু প্রয়োজন হলে মায়ের কাছে আঁচল পেতে দাঁড়াব।’’ পাশাপাশি মমতা অভিযোগ করেন, “কই বিজেপির কারও কপ্টারে তো তল্লাশি চলে না। ওরা সিআরপিএফ, সিআইএসএফ নিয়ে ঘোরেন বলে?”
রবিবার ইস্তাহার প্রকাশ করেছে বিজেপি। সে প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘ইস্তাহারে দেখলেন তো, আমি যা বলেছিলাম তাই হল। আমি আগে বলি, পরে সবাই সেটা বলে। ইউনিফর্ম সিভিল কোড ইস্তাহারে রেখেছে। দেশ তো বেচে দিচ্ছে। তফসিলিদের কোনও পরিচয় থাকবে না। আদিবাসীদের অধিকার থাকবে না।’’
বিজেপির ইস্তাহারে স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ঋণ দেওয়া নিয়ে মমতার কটাক্ষ, ‘‘ওঁরা বলছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর লোন বাড়াবেন। টাকাই তো দেন না। লোন বাড়াবেন কী করে? আমাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সংখ্যা ৯০ লাখ। স্কুলের পোশাক তারাই তৈরি করে। এই গোষ্ঠীর জন্য আগামী দিনে বড় বাজার তৈরি করে দেব। ওরা নিজে রোজগার করবে।’’ এরপর মমতা বিজেপির ইস্তেহার প্রসঙ্গে মমতা আরও বলেন, “যেটা আমি আগে বলি সেটা পরে মিলে যায়, দেখলেন সিএএ, এনআরসি নিয়ে আমি যা বলছিলাম ওরা তাই বলছে।”
বাংলার দুর্নীতি নিয়ে মোদীকে চ্যালেঞ্জ করে মমতা বলেন, ‘‘ক্ষমতা থাকলে শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন। বাংলায় কোথায় কটা দুর্নীতি হয়েছে, কমিশনের রিপোর্ট ঘোষণা করুন। সেই সঙ্গে উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, মহারাষ্ট্রের কথাও ঘোষণা করুন। বাংলা চোর নয়। চ্যালেঞ্জ করছি।’’
মমতা এদিন দাবি করেন, “ইভিএমের চিপ কারা বানিয়েছে সেটা প্রকাশ করতে হবে। কেন বলা হচ্ছে না ইভিএমের চিপ কারা তৈরী করেছে?”
কোচবিহারে তৃণমূলের জয় নিশ্চিত দাবি করে মমতা বলেন, ‘‘আগামী দিনে সারা পৃথিবীর ইতিহাসে কোচবিহারের নাম জ্বলজ্বল করবে। বিজেপি দেখবে, জ্বলবে আর লুচির মতো ফুলবে।’’