মহানগর ডেস্কঃ এবার উৎপাদিত আলুর ধরণ দেখে চোখ কপালে চাষিদের। বিঘা-বিঘা জমিতে আলুর চাষ করার পর ফলন দেখে চক্ষু চরক গাছ চাষীদের। এই মুহূর্তে আলু চাষীরা লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতির মুখে। আলু চাষের ধরণ দেখে প্রশ্ন শুরু করেছেন কয়েকশো আলুচাষী যে, তাহলে কি নকল আলু বীজের কারবার ঠেকাতে ব্যর্থ প্রশাসন?
বর্তমানে হুগলি জেলায়, আলু চাষের জমি থেকে আলু তোলার কাজ চলছে। কিন্তু তারকেশ্বর ব্লকের আস্তারা গ্রাম পঞ্চায়েত অঞ্চলের জমিতে, যে আলু তোলা হয়েছে তার আকৃতি দেখে মাথায় হাত চাষীদের। জানা যাচ্ছে যেই আলু গুলি তোলা হয়েছে সেই আলুর আকৃতি কোনোটা পুতুলের মতো, কোনোটার আকৃতি ঘোড়ার মতো এবং কোনোটার আকৃতি হাতির মতো। যার জন্য, এই আকৃতির আলু কোনো ব্যবসায়ীরাই কিনতে চাইছেন না। শুধু তাই নয় চাষীরা দাবি করছেন এই আলু খাওয়ারও অযোগ্য। তাই এই আলু না করা যাচ্ছে বিক্রি আর না যাচ্ছে খাওয়া। চাষীদের দাবি চাঁপাডাঙা এলাকার, এক আলু বীজ ব্যবসায়ী, তার নাম প্রভাস দুলুই। ইনি চাষিদের নকল আলুর বীজ বিক্রি করেছেন বলে চাষীরা অভিযোগ করেন। চাষীরা জানান ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে আলুর বীজ কিনে চাষ করার পর, জমিতে যেই আলুর ফলন হয়েছে, সেই আলু নিয়ে ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে চাষীদের, তাছাড়া আলু চাষের শুরুতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে কিছুটা সময় পিছিয়ে গেলেও চাষের মরসুমে কিন্তু তার জন্য তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানান চাষীরা। কিন্তু তারপরেও আলুর এরম অবস্থা দেখে ক্ষুব্ধ আলু চাষী মহল।
জানা যাচ্ছে, প্রভাস দুলুই নামে এক আলু বীজ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে যেসব আলু চাষীরা, আলুর বীজ কিনে চাষ করেছিলেন তাঁদের জমিতে অত্যন্ত নিম্ন মানের আলু উৎপন্ন হয়েছে। যেই আলু না যাচ্ছে বিক্রি করা, আর নাই খাওয়া যাচ্ছে। এমনকি আলু যেমন আকৃতির হয় তার থেকে দেখতে একদমই ভিন্ন প্রকৃতির। জানা যাচ্ছে, এই বিষয়ে প্রভাস দুলুইয়ের নামে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুব্ধ চাষীরা। ব্লক কৃষি দফতরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন । রাগের মাথায় চাষীরা যখন প্রভাস দুলুইয়ের বাড়িতে যান, সেখানে তাঁর দেখা মেলেনি। এই বিষয় নিয়ে চাঁপাডাঙার আলু বীজ ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক দেবব্রত দুলুই চাষিদের যে ক্ষতি হয়েছে, তা তিনি স্বীকার করে বলেন, “পঞ্জাব থেকে বীজ নিয়ে আসা হয় এ রাজ্যে। এটি যে কোম্পানির বীজ, সেই কোম্পানিকে বিষয়টি জানানো হবে।” চাষিদের পাশে থাকারই আশ্বাস দেন বীজ ব্যবসায়ী সংগঠন।
এ বিষয়ে আবার তারকেশ্বরের বিধায়ক, রামেন্দু সিংহরায় জানান, ” এই বিষয় নিয়ে চাষিরা তাঁর কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। বিষয়টি সম্পর্কে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আলু বীজ সংস্থা চাষিদের ক্ষতিপূরণ না দিলে, যথাযথ আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। “জেলা প্রশাসন, আলু চাষের প্রারম্ভে যাতে নকল আলুবীজ ঠেকানো যায় তার জন্য রাস্তায় নেমেছিল। একের পর এক আলু বীজ ব্যবসায়ীরা গোডাউনের হানাও দেন । কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, তার পরেও কেনো ঠেকানো গেল না নকল আলু বীজের কারবার বা চাষ? সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কৃষক মহল সহ রাজ্যবাসী।